কুড়িগ্রামে পরীক্ষায় অনুপস্থিত থেকেও গ্রেডে বৃত্তি পেয়েছে এক শিক্ষার্থী

18

মোঃ নূরবক্ত মিঞা, স্টাফ রিপোর্টারঃ

বৃত্তি পরীক্ষায় অনুপস্থিত থেকেও সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পেয়েছে ৫ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী।চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চর গোরক মন্ডল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোরক মন্ডল গ্রামের হুজুর আলী-ছকিনা বেগম দম্পতির পুত্র। এ ঘটনায় অভিভাবক, শিক্ষক ও সচেতনত মহলে চলছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।

আজ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল বের হলে উপজেলার প্রকাশিত তালিকায় ওই শিক্ষার্থীর রোল পাওয়া যায়।অনুপস্থিত থেকে বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীর  নাম সজিব আলী।

 উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে গত ৩০ শে ডিসেম্বর সারাদেশে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।ফুলবাড়ী উপজেলার ১৬১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৬৫জন শিক্ষার্থী ফুলবাড়ী ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে অংশ গ্রহণ করে।  ওই কেন্দ্রের ১০১নং কক্ষের ছাত্র ছিলো সজিব আলী। তার প্রবেশ পত্রে ২৪নং রোল বসানো থাকলেও অংশ নেয়নি বৃত্তি পরীক্ষায়। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সজিব আলীকে অনুপস্থিত দেখিয়ে তালিকা জেলায় পাঠিয়ে দেয়।

মঙ্গলবার ২৮ ফেব্রুয়ারি বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলে ফুলবাড়ী উপজেলায় ৪৪জন ট্যাল্টেপুলে এবং ৩৭জন সাধারন গ্রেডে বৃত্তির তালিকা শিক্ষা অফিসে আসে। সেই তালিকা ধরে পরীক্ষার্থী,অভিভাবক এবং  প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ খোঁজ নিতে শুরু করেন কে কে এবার বৃত্তি পেয়েছে।  ফলাফল সিটে ওই ছাত্রের রোল পাওয়া গেলে হৈচৈ পড়ে যায় উপজেলা শিক্ষা অফিসে।

শিক্ষার্থী সজিব  জানায়, আমি বৃত্তি পরীক্ষায় দেইনি। আমি নিজেও জানতাম যে আমাকে বৃত্তি পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষা না দিয়েও আমি কিভাবে বৃত্তি পেলাম তা বলতে পারি না।

সজিবের বড় ভাই সবুজ মিয়া বলেন, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম।আমার ছোট ভাই বৃত্তি পেয়েছে। আমার ভাই বৃত্তি পরীক্ষা দেয়নি এটা ১০০% সত্য। এখন কিভাবে বৃত্তির ফলাফলে নাম আসলো সেটা কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।সজিবের মা সকিনা বেগম বলেন, আমার ছেলে পরীক্ষা দিলো না অথচ পাশ করলো কিভাবে ! বিষয়টি বুঝলা না। চর গোরক মন্ডল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমার স্কুল থেকে ৭ জন পরীক্ষার্থীকে বর্ণনামূলক রোল(ডিআর ভুক্ত) করা হয়েছে। এরমধ্যে তিনজন অনুপস্থিত। সেই অনুপস্থিত তালিকায় সজিব ও রয়েছে। কিন্তু সে বৃত্তি পরীক্ষা না দিয়েও কিভাবে বৃত্তি পরীক্ষায় পাশ করলো কর্তৃপক্ষই ভাল বলতে পারবেন। 

উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আসাফুজ্জামান জানান, বিষয়টি শুনেছি । পরে প্রতিষ্টানের প্রধানের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন ওই ছাত্র পরীক্ষা দেয়নি। তার রোল নম্বর  কি ভাবে তালিকায় এসেছে, তা পর্যাবেক্ষণ করা হবে। 

কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার শহিদুল  ইসলাম বলেন,বিষয়টি আমি শুনেছি। উপজেলা পর্যায় যে তালিকা পাঠানো হয়েছে তা ক্ষতিয়ে দেখা হবে। এছাড়াও তিনি আরও বলেন, বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন দাস জানান, ইতোমধ্যে বিষয়টি জেনেছি গুরুত্ব সহকারে  সকল নতিপত্র পর্যালোচনা করে তদন্ত পুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।