
শফিকুল ইসলাম, রায়পুরা প্রতিনিধিঃ
নরসিংদীর রায়পুরায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য স্বপন মিয়া (৪৫) হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। সোমবার নিহতের স্ত্রী রিনা বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার কৃতরা হলেন, বালুয়াকান্দি গ্রামের আবদুল মান্নাফের ছেলে মো জসিম উদ্দিন (৪৬), দিঘলিয়া কান্দি গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে আব্দুল বাতেন মেম্বার(৫০)।
মামলায় ওই ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান রাতুল হাসান জাকিরের নাম উলেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত শনিবার সকালে উপজেলার মেঘনার শাখা পাগলা নদীর বাশঁগাড়ীবড় জুরবিলা ঘাটে কচুরিপানার নিচ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দীর্ঘদিন যাবত চলা আধিপত্য বিস্তার ও নির্বাচনী বিরোধের জেরে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান রাতুল হাসান জাকির ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হক গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। এর জেরেই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, সাবেক ইউপি সদস্য স্বপন মিয়ার বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় হত্যা, লুটপাটসহ নানা অভিযোগে কয়েকটি মামলা রয়েছে। পুলিশী গ্রেপ্তার-আতঙ্কে নিয়মিত রাতে বাড়ির বাইরে থাকতেন তিনি। শুক্রবার রাতে স্বপনকে মুঠোফোনে ডেকে নেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। সকাল হলেও বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। পরে পরিবারের লোকজন বিষয়টি পুলিশকে অবগত করেন। এরমধ্যে স্থানীয় লোকজন সকালে জুরবিলা ঘাট এলাকার নদীতে কচুরিপানার ভেতর স্বপন মিয়ার গুলিবিদ্ধ মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর শরীর ও মুখে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
নিহত স্বপনের স্বজনেরা জানান, গত ইউপি নির্বাচনে বাঁশগাড়ির ৮ নং ওয়ার্ড থেকে স্বপন মিয়া নির্বাচনে অংশ নেন। তাঁর প্রতিপক্ষ হিসেবে আবেদ আলী টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন। নির্বাচনের দিন স্বপন মিয়ার ভাই দুলাল মিয়াসহ পরিবারেরই দুই সদস্য প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হন। ওই ঘটনার পর থেকেই স্বপন মিয়ার আরও পাঁচ ভাই প্রতিপক্ষের ভয়ে বাড়িছাড়া হয়ে অন্যত্র থাকতেন। ফলে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রতিপক্ষকে সন্দেহ করছেন তাঁরা।
আটককৃত বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক ও ৩ নং ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেনের স্ত্রী স্বপনারেজা ওরফে নাজমা বলেন, আমার স্বামী রায়পুরা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড শ্রীরামপুরে ভাড়াটিয়া বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে। ওইদিন আমার স্বামী রায়পুরার ছিলো তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মামলাসহ তার মুক্তি চাই।
রায়পুরা থানার পরিদর্শক গোবিন্দ সরকার বলেন, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেন। দুইজনকে আটক করা হয়েছে। একজনকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আরেকজন থানায় রয়েছে।