ঢাকা, বুধবার, ৯ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স:)এর জীবনী
ভারতে পাচারের শিকার ৬ বাংলাদেশি নারীকে ৫ বছর পর দেশে ফেরত
বাগমারা ইজরাইল বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশে পণ্য বর্জনের আহ্বান
নড়াইলের হাসিম মোল্যা হত্যা মামলার ৮ আসামি গ্রেফতার
রূপগঞ্জে পূর্বাচল টিভির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন
আত্রাইয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
২৩ বছর পর পবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের ‘মুক্তমঞ্চ’ “সংস্কৃতি চর্চায় খুলছে নতুন দিগন্ত”
বাড্ডা থানা যুবলীগের আহবায়ক গলাকাটা কাউসার গ্রেফতার
ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা,কর্মমুখী প্রশিক্ষণ ও রেশন পরিবহন ব্যবস্থার প্রবর্তন করলো আনসার
বসুন্ধরায় নারীর মরদেহ উদ্ধারে গিয়ে দুই মণ গাঁজা পেল পুলিশ
এবার মোহাম্মদপুর থানার মামলায় গ্রেফতার প্রতারক সিকদার লিটন
পহেলা বৈশাখের পরে মিরপুরে ফুটপাত ও সড়ক অবৈধ দখলমুক্ত করতে অভিযান করা হবে: ডিএনসিসি প্রশাসক
সৌদি রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি জনশক্তি নেওয়ার আহ্বান
ডালিয়ার ১৪ বিয়ে: প্রতারণা চলমান
কালিগঞ্জ পিএফজি’র সম্মিলিত কার্যক্রম অগ্রগতি পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা সভা 

হারিয়ে যাচ্ছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের হাতে বানানো বাহারি রঙের পোশাক 

 শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী (আদিবাসী) সম্প্রদায়ের লোকদের নিজ হাতে তৈরি ঐতিহ্যবাহী বাহারি রঙ্গের পোশাকগুলো আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে।
সুতার মূল্য বৃদ্ধি,অভিজ্ঞ কারিগরের অভাব ও অর্থনৈতিক দৈনতার কারনে আদিবাসীদের হাতে তৈরি বাহারি রঙ্গের পোশাকগুলো হারিয়ে যাওয়ার মুল কারন বলে জানা গেছে। এসব পোষাকগুলো এখন আর আগের মতো চোখে পড়েনা। জানা যায়, গারো পাহাড়ের পাদদেশে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত ঘেষে অবস্থিত শেরপুর জেলা। এ জেলার সীমান্তের তিনটি উপজেলার প্রায় ৪০ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকা জুড়ে রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস। আদিবাসী সংগঠন ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সুত্রে জানা গেছে, নালিতাবাড়ি, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর গারো,হাজং, কোচ,বানাই,বর্মনসহ বিভিন্ন জাতীগোত্রের প্রায় ৪০ হাজার আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকদের বসবাস।
রাংটিয়া আদিবাসী নেতা যুগল কিশোর কোচ বাঁকাকুরা গ্রামের ধীমানচন্দ্র কোচ জানায় একসময় এদের ছিল জমিজমা, গোয়াল ভরা গরুসহ ফসলাদিতে ভরপুর। কিন্তু কালের বিবর্তনে সবকিছু হারিয়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন এখন ভূমিহীনে পরিণত হয়েছে। তারা বলেন, অতীতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা নিজের হাতে তৈরি বাহারি রংয়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাক তৈরি করে ব্যবহার করতো। সচরাচর প্রায় সকল আদিবাসী নারীদের পরনে দেখা যেতো,তাদের নিজ হাতে তৈরি করা বাহারি রঙ্গের পোশাক। কোচ সম্প্রদায়ের নিজ হাতে তৈরি বাহারি রঙ্গের পোষাকের মধ্যে রয়েছে লেফেন, বাশেক,উর্না।
গারো সম্প্রদায়ের নিজ হাতে তৈরি পোষাকের মধ্যে রয়েছে দকমান্দা,দকশারী, উর্না। তবে হাজং ও বানাই সম্প্রদায়ের লোকজন কোচ সম্প্রদায়ের পোষাকই নিজ হাতে তৈরি করে পরিধান করে থাকতো। কিন্তু এখন আর আদিবাসী নারীদের পরনে আগের মতো বাহারি রঙ্গের পোশাক চোখে পড়ে না। তবে তথ্য অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, আদিবাসীদের অর্থনৈতিক দৈনতা, অভিজ্ঞ কারিগরের অভাব ও সুতার মুল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকদের নিজ হাতে তৈরি পোষাকগুলো দিনে দিনে প্রায় বিলুপ্তির পথে।
উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভানেত্রী মিঃ রবেতা ম্রং বলেন আদিবাসীদের অর্থনৈতিক সংকট, সুতার মূল্য বৃদ্ধি, সরঞ্জামাদির অভাবসহ বস্ত্র তৈরিতে পারদর্শী কারিগরের অভাবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন আগের মত আর নিজ হাতে পোশাক তৈরি করতে পারছে না।
ঝিনাইগাতী উপজেলা টাইব্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান নাবেশ খকশী বলেন অতীতে সবাই কাপড় তৈরিতে অভ্যস্ত ছিল। তারা মারা যাওয়ার পর নতুন প্রজন্মের লোকজন এসব বাহারি রঙ্গের পোষাক তৈরি করতে না পারার কারনে দিনে দিনে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী হাতে তৈরি বাহারি রঙ্গের পোশাকগুলো আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে।
শ্রীবরদী উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান প্রাঞ্জল এম সাংমা বলেন, , সকল প্রতিকূলতার মাঝেও ১০% আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা এখনো তা ধরে রেখেছে।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকদের বিয়ে-শাদীতে এখনো চোখে পড়ে এসব বাহারি রঙ্গের পোশাক। রাংটিয়া গ্রামের আদিবাসী নেতা জাগেন্দ্র কোচ বলেন, সরকারিভাবে অর্থনৈতিক যোগান পাওয়া গেলে আবারো আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা নিজ হাতে বাহারি রঙের পোশাক তৈরিতে আগ্রহ বাড়বে।

শেয়ার করুনঃ