
মোবাইল ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে অনলাইনে লোভনীয় বেতনে ফ্রিল্যান্সিং এর নামে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের ১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) এন্টি টেররিজম ইউনিটের মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং পুলিশ সুপার ব্যারিস্টার মাহফুজুল আলম রাসেল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ঢাকার ভাটারার জোয়ারসাহারা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন ও ১টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত হলো, মোশারফ হোসেনের (৩৫) বাড়ি কুমিল্লার নোয়াপাড়া গ্রামে।
মাহফুজুল আলম রাসেল জানান, বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে অগ্রগতির ধারায় বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মূলমন্ত্র মূলত প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন, প্রযুক্তির অগ্রগতি মানব জীবনের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। দুঃখজনক হলেও সত্য প্রযুক্তির এই জ্ঞানকে অমূলক ব্যবহার ঘটিয়ে অনলাইন ভিত্তিক নানা রকম অপরাধ (সাইবার ক্রাইম) সংঘটন করছে। এই রকম একটি অপরাধ হলো অনলাইন ভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং এর নামে লোভনীয় প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা।
এক্ষেত্রে প্রতারক চক্র মোবাইল নম্বর এবং হোয়াটস অ্যাপে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং এর প্রলোভন দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে একজন ব্যক্তি দৈনিক প্রায় ২ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। কোন ব্যক্তি এই বিজ্ঞাপনে যোগ দিলে প্রথমে গুগল ম্যাপ রিভিউ, অনলাইন ভোটিং সিস্টেম আপগ্রেডেশন এর মত কিছু সহজ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার টাস্ক দেয়। উক্ত অফারে সাড়া দিয়ে প্রতারিত ব্যক্তি টাস্কগুলো সম্পন্ন করার পর প্রতারক চক্রের সদস্যরা সেই ব্যক্তিকে টেলিগ্রাম আইডিতে যুক্ত করে এবং বিভিন্ন ভাবে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, মো. আরাফাত হোসেন নামে প্রতারণার শিকার একজন ব্যক্তি ডিএমপি’র রামপুরা থানায় এ সংক্রান্তে একটি অভিযোগ দায়ের করলে রামপুরা থানার মামলা রুজু হয়। অভিযোগকারী উক্ত অফারে সাড়া দিলে, প্রতারক চক্রের সদস্যরা অভিযোগকারীকে টাস্কগুলো সম্পন্ন করার পর প্রতারক চক্রের সদস্যরা অভিযোগকারীর বিকাশ নম্বরে ৪৫০ টাকা পাঠায়। পরবর্তীতে অভিযোগকারী মো: আরাফাত হোসেনকে একটি টেলিগ্রাম আইডিতে যুক্ত করা হয়। আসামীর নির্দেশনা অনুসরণ করে আসামীর দেয়া বিকাশ নম্বরে ২ হাজার টাকা পাঠানোর পর অভিযোগকারীকে বিকাশে ২ হাজার ৮০০ টাকা লভ্যাংশ হিসেবে প্রদান করা হয়। এভাবে লভ্যাংশের লোভ দেখিয়ে আসামী অভিযোগকারীর কাছ থেকে দুইধাপে আরো ৫ হাজার টাকা ও ১৮ হাজার টাকাসহ মোট ২৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। অভিযোগকারী পরবর্তীতে তার দেওয়া টাকার লভ্যাংশ চাইলে আসামী তাকে জানায়, লভ্যাংশসহ পূর্বের টাকা ফেরত পেতে হলে তাকে আরো ৩৬ হাজার টাকা পাঠাতে হবে। আগের টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় প্রতারণার শিকার মো: আরাফাত হোসেন আসামীর দেয়া একটি ব্যাংক একাউন্ট নম্বরে আবারও কয়েক দফায় সর্বমোট ১লাখ ৪৯ হাজার টাকা পাঠালে আসামী যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
অভিযুক্তকারীর অভিযোগের সুত্র ধরে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়য বলে জানানো হয়।
ডিআই/এসকে