ঢাকা, রবিবার, ১লা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
কোতয়ালী এলাকায় বিশেষ অভিযান,মাদক কারবারিসহ গ্রেফতার ১৫
পাহাড়ি দুর্যোগ: হিল আনসার ও ভিডিপির নিরলস সেবায় স্বস্তি ফিরছে খাগড়াছড়িতে
দক্ষিণ শ্রীপুর যুবদলের আয়োজনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী পালিত
তানোরে অর্কিড স্কুল এন্ড কলেজে ফল উৎসব
আত্রাইয়ে দিনব্যাপী পার্টনার প্রকল্পের কংগ্রেস অনুষ্ঠিত
ফুলবাড়ীতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ চেকপোস্ট
বিএনপি’র মেয়র প্রার্থীর বাসাবাড়ি-কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে আ’লীগের ২৬ জনের নামে মামলা
ভারতীয় গণমাধ্যম নর্থইস্টের মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ আইএসপিআরের
দেবহাটার খলিশাখালির ভূমি সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য কমেনি: প্রশাসনে হস্তক্ষেপ কামনা ঘের মালিকদের
কোরবানির ঈদ উপলক্ষে টুং টাং শব্দে মুখরিত সলঙ্গার কামারপট্টি
লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং লিবার্টির সভাপতি হলেন শরিফুল ইসলাম
খুলনা টাইগার্সের মালিক ইকবাল আল মাহমুদ গ্রেফতার
জলঢাকায় ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে তিন ইউপি সদস্যের সংবাদ সম্মেলন
বিরামপুরে কৃষকদের নিয়ে পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত
দলিল জালিয়াতির অভিযোগে কবি সানাউল হকের পুত্র সুমন ইত্তাদ মামুন পলাতক

বিচারের দাবীতে নাইমে’র লাশ নিয়ে স্বজনদের বিক্ষোভ

আমার ছেলে নাইমকে বুধবার রাতে ফারুক হাওলাদারের মেয়ে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে তার কাছে যেতে বলে। সেখানে গেলে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে ফারুক ও তার ছেলে নাইম’কে রাস্তায় ফেলে বেধরক মারধর করে এবং আমার ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এই ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে লোকজন নাইম’কে নিয়ে নানা রকম কথা বলে। সেই অপমান সইতে না আমার ছেলে শুত্রুবার রাতে বিষ পান করে।

বরিশালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে মারা যায় নাইম। এ ঘটনার আমি বিচার চাই। কান্না জড়িত কন্ঠে এমনটাই জানান নিহত নাইমের পিতা মো. ছিদ্দিক মৃধা। রোববার বিকেলে নাইমের লাশ বাড়িতে আসলে জানাযা নামাজ শেষে স্বজনরা ও এলাকাবাসী নাইমের লাশ নিয়ে হত্যার বিচার দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ জানান। প্রেমিক ফারজানা তার বাবা ফারুক ও তার ভাই ফয়সালকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।

ঝালকাঠির রাজাপুরে আট বছর প্রেম করে বিয়ে করতে না পারায় ও প্রেমিকার বাবা ভাইর বেধরক মারধরের ১দিন পর বিচার না পেয়ে মানুষের নানা রকম অপমান সইতে না পেরে বিশ পান করে আত্মহত্যা করেছে মো. নাইম (২৩) নামে এক যুবক। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে তার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত শেষে রোববার বিকেলে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসে স্বজনরা।

সিঙ্গাপুর প্রবাসী নাইম উপজেলার বারবাকপুর এলাকার ছিদ্দিক মৃধার ছেলে। তিনি শুত্রুবার রাতে বিষপান করলে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা বেগতিক হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাইমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে মৃত্যু হয় নাইমের। নাইমের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে ফারজানাসহ তার পরিবার সবাই আত্মগোপনে রয়েছে।

এদিকে শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে বিষপানের আগে নাইম তার ব্যবহৃত রোহান মৃধা নামে ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘আমি একটা জবানবন্দি দিছিলাম সাংবাদিকদের কাছে। ওইটা যখন দিয়েছিলাম তখন আমি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলাম। ওই ভিডিও রেকর্ড সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার মৃত্যুতে যদি কোনো কেস হয় তাহলে আমি চাই কেসটা আমার নামে হোক।’ কিছুক্ষণ পর আরেকটি পোস্ট দিয়ে লেখেন, ‘সম্ভব হইলে সবাই আমাকে মাফ কইরা দিয়েন। আমিও বাঁচতে চাইছিলাম, কিন্তু আমি অনেক ক্লান্ত, আর সম্ভব না বাঁচা।’ রোহান মৃধা নামের ফেসবুক আইডিটি নাইমের বলে নিশ্চিত করেছেন নাইমের চাচাতো ভাই ইসমাইল মৃধা।

তবে নাইমের দুলাভাই ইকবাল হোসেন বলেন, নাইমকে যখন রাজাপুর হাসপাতালে ওয়াশ করাই তখন ওই আইডি থেকে পোস্ট করা হয়েছে। তখন নাইম অসুস্থ সে কিভাবে ফেসবুকে পোস্ট করে? ওই পোস্ট নাইম করে নায় তার প্রেমিক ফারজানা করেছে। নাইমের ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড ফারজানার কাছে ছিলো। ফারজানার সাথে নাইমের ২০১৫ সাল থেকে প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়। এরপর সবাই জানাজানি হলে ফারজানাকে তার পরিবার ২০১৭ সালে বিয়ে দেয়। ওর বিয়ের পর নাইমকে প্রবাসে (সিঙ্গাপুর) পাঠাই। সেখানে যাওয়ার পরেও ফারজানা নাইমের সাথে যোগাযোগ করে এবং বিভিন্ন সময় ওর কাছ থেকে টাকা পয়সা আনে ফারজানা। নাইম দেশে আসার সময় ফারজানার জন্য অনেক কিছু নিয়ে আসে। বাড়িতে এসে ওরে সেই গুলো এবং ওর পছন্দ মতো আরো বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনে দেয়। যা নাইমের মৃত্যুর পরদিন ফারজানার ঘর থেকে সব কিছু বস্তুা ভড়ে নিয়ে যাওয়ার সময় হাতে নাতে এলাকাবাসী দুইজন মহিলাকে আটক করে।

এ বিষয়ে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত প্রেমিকার ভাই মো. ফয়সাল বলেন, নাইম রাতে ফারজানার রুমের জানলার কাছে আসছে এরপর ওরে কয়টা চড়থাপ্পড় দিছি এছারা বেশি কিছু করি নাই। উল্টো আমাদের ফাঁসানোর জন্য ইকবাল ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের বুঝিয়ে দিবে বলে হুমকি দিছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফারুক হাওলাদার জানান, বুধবার রাতে নাইম আমাদের ঘরের জানালার পাশে আসে। টের পেয়ে আমার ছেলে ফয়সাল ঘরের বাইরে এসে নাইম’কে এখানে আসার কারন জানতে চেয়ে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে তার শরীরে আঘাত করে। আমরা বাহিরে ডাক-চিৎকার শুনতে পেয়ে বাইরে এসে আমার ছেলেকে থামিয়ে দেই। এবং নাইমের কাছে আমার মেয়েকে ডিস্ট্রার্ব করার কারন জানতে চাই। পরে নাইমের দুলাভাই ইকবাল’কে খবর দিলে সে এসেই কোনো কথা না শুনে আমাকে মারধর শুরু করে। এ ঘটনায় আমি বৃহস্পতিবার রাজাপুর থানায় অভিযোগ দেই।

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মু.আতাউর রহমান জানান, এঘটনায় কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শেয়ার করুনঃ