
দ্বিতীয় দফায় শুরু হচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন। একদিনব্যাপী এই ক্যাম্পেইন একযোগে শুরু হচ্ছে ডিএনসিসির ৫৪ টি ওয়ার্ডে।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন সকাল ৯ টা থেকে শুরু হয়ে চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশান-২ নগর ভবনে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন ২০২৩ উপলক্ষ্যে সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
সভায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন,আমরা ডিএনসিসির পক্ষ থেকে বরাবরই শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল ক্যাম্পেইনের ব্যাপারে সচেতন। প্রত্যেক বছরই আমরা এই ক্যাম্পেন চালু করি। একটি সুন্দর রাষ্ট্র গঠনে সুস্থ নাগরিক সমাজ প্রয়োজন। সে সুস্থ নাগরিক গড়ে তুলতে আমাদের সে আমাদের শিশুদের স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। সেজন্য তাদের যাবতীয় প্রয়োজনের টিকা নিয়ম অনুযায়ী দেওয়া জরুরি। আমরা ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেন প্রত্যেক বছরে আয়োজন করি। এই ক্যাম্পেন ছাড়াও স্থানীয় নিবন্ধিত হাসপাতালগুলো থেকে চাইলে শিশুদের অভিভাবকেরা এই টিকা খাওয়াতে পারেন।
ডিএনসিসি জানায়, এ কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিধি মেনে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী সকল শিশুদের ১টি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী সকল শিশুকে ১টি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল বিনামূল্যে খাওয়ানো হবে। এছাড়া শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণমত ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়ানোর বার্তা প্রচার করা হবে।
শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা, স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও দৃষ্টি শক্তির জন্য ভিটামিন ‘এ’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক অনুপুষ্টি। ভিটামিন ‘এ’ চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টি শক্তি ও শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় রাখে এবং বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে থাকে। ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে রাতকানাসহ চোখের অন্যান্য রোগ, শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া, রক্ত শূণ্যতা এমনকি শিশুর মৃত্যুও হতে পারে।
বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য নীতিমালা অনুযায়ী, বছরে ০২ ধার ভিটামিন ‘এ’ এর অভাব পূরণে সম্পূরক খাদ্য হিসেবে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১০টি অঞ্চলের আওতাধীন ৫৪ টি ওয়ার্ডে ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখ জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে। এই ক্যাম্পেইন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে এ কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকেই ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়েছে।
ডিএনসিসি আরো জানায়, ২০২৩ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন ১৮ জুনের কার্যক্রমঃ
৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সের ১১৩৫৭৪ টি শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্য ছিল, তবে এই বয়সের ৯৪১৮৩ টি শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্য পূরণ হয়। যা শতকরা ৮৩%। ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সের শিশুদের ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০৬৮২৪ টি। তবে
১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সের ৪৫২২১৪ শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।। যা মোট লক্ষ্যমাত্রা (৮৯%)। মোট লক্ষ্যমাত্রা ৬২০৩৯৮ জন শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর (১২ ডিসেম্বর) মাসে ডিএনসিসি’র ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সের ১০৩৩৫২ জন শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানো। এবং ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সের ৪৮১৪৮৩ জন শিশুর ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। মোট লক্ষ্যমাত্রা ৫৮৪৮৩৫ জন শিশুকে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর।
মোট কেন্দ্র-১৯০৪ টি, মোট স্থায়ী কেন্দ্র-৫৪ টি,মোট অস্থায়ী কেন্দ্র-১৮৫০ টি, মোট স্বাস্থ্য কর্মী/স্বেচ্ছাসেবী-১২৮ জন,প্রথম সারির সুপারভাইজার-৮০ জন,দ্বিতীয় সারির সুপারভাইজার-১০ জন
তদারককারী (কেন্দ্রীয়)-সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে তদারকির জন্য কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে ভিজিলেন্স টিম নিয়োজিত থাকবেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উত্তর সিটি কর্পোরেশন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেঃ জেনাঃ এ কে এম শফিকুর রহমান।
ডিআই/এসকে