ঢাকা, সোমবার, ১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
কালিগঞ্জের মথুরেশপুর তরুণ দলের অফিস উদ্বোধন
নোয়াখালীতে ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার
নবীনগরে শ্যালকের হামলায় বোন জামাই আহত
লক্ষ্মীপুরে ৫০জন যাত্রী ফেরত পেলেন অতিরিক্ত ভাড়তি ভাড়াঞঞঞঞ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে ভাই বোনের মৃত্যু
উলিপুরে সবজিতে স্বস্তি ক্রেতা না থাকায় বিপাকে বিক্রেতারা
সাতক্ষীরায় ২১ দিনেও সন্ধান মেলেনি ইটভাটা ব্যবসায়ীর
শার্শায় বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
শেরপুর জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত
রূপগঞ্জে ভুয়া এডিশনাল এসপি গ্রেফতার
কালিগঞ্জে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও নাশকতার পরিকল্পনা মামলায় আ.লীগ নেতা কান্টু গ্রেফতার
আত্রাইয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সদস্য আনোয়ার হোসেন বুলুর জনসংযোগ
কুষ্টিয়ায় শীর্ষ সন্ত্রাসী লিপটনের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টুর মৃত্যুতে মেজর মান্নানের শোক

উলিপুরে সবজিতে স্বস্তি ক্রেতা না থাকায় বিপাকে বিক্রেতারা

কুড়িগ্রামের উলিপুরে সবজিতে স্বস্তি থাকলেও নেই তেমন ক্রেতা। এতে করে বিপাকে পড়েছেন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা। মরিচের দাম একটু বেশি থাকলেও অন্যান্য সবজির দাম হাতের নাগালে। তার পরেও দেখা মিলছেনা ক্রেতার। ঈদের আগেও সজিনা, মরিচ, পেঁয়াজ, রশুন ও বেগুন সহ অন্যান্য সবজির দাম বেশি থাকলেও এখন তা অনেক কমে গেছে। ফলে স্বস্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এখন সকল প্রকার সবজির বাজার লাগামহীন নাথাকায় ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে খেটে খাওয়া মানুষের। ফলে সবজি সহ প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র চাহিদার তুলনায় বেশি ক্রয় করছেন।

উলিপুর পৌর বাজারের আড়তদার মরিচ কেজি প্রতি ৪০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ৪৭ টাকা, খুচরা বিক্রেতা তা বিক্রি করছেন ৫০ টাকা ও ৬০ টাকা। নানা ভাবে পেঁয়াজ, মরিচ, আলু ও আদার দাম কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে পড়েছেন। যেখানে হাত বদলেই বেড়ে যেতো সবজির দাম। সেখানে স্থানীয় ভাবে ও মোকামে সবজি বেশি আমদানি হওয়ায় বাজার অনেক কমে গেছে বলে জানান বিক্রেতারা।

সরেজমিন মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে উলিপুর সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা পাইকারদের কাছে বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি করছেন ২২ টাকা তা খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, আলু দেশি ১৮ টাকা খুচরায় ২৫ টাকা, আলু হলান্ড ১০ টাকা খুচরায় ১৫ টাকা, শসা ১০ টাকা খুচরায় ১৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা খুচরায় ৫০ টাকা, করলা ৩০ টাকা খুচরায় ৪০ টাকা, দেশি পিয়াজ ৪৭ টাকা খুচরায় ৫৫ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা খুচরায় ৩৫ টাকা, পটল ১৫ টাকা খুচরায় ২০ টাকা, রসুন ৮০ টাকা খুচরায় ১০০ টাকা, আদা ৮০ টাকা খুচরায় ১০০ টাকা, শুকনা মরিচ ২৮০ টাকা খুচরায় ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, ঢেড়স ১০ টাকা খুচরায় ১৫ টাকা, ঝিঙা ১০ টাকা খুচরা ১৫ টাকা, কদোয়া ১০ টাকা খুচরা ১৫ টাকা, বরবটি ৩০ টাকা খুচরা ৩৫ টাকা, সজিনা ৬০ টাকা খুচরা ১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ১৫ টাকা খুচরা ২০ টাকা, চাল কুমড়া ছোট বড় ভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা খুচরায় ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শাক-সবজির বাজার দর এমন নিম্নমুখী হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।

দক্ষিন দলদলিয়া থেকে পটল চাষি শাহাজাহান মিয়া পাইকেরিতে পটল বিক্রি করতে আসা জানান, এবারে এক একর জমিতে পটল চাষ করেছেন। মোট খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা। এ পর্যন্ত আয় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। আজ ৫ মণ পটল ১২০০ টাকা মণ প্রতি বিক্রি করেছি।

পৌর বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা মিজানুর রহমান (৪৫), জানান, আমরা পাইকারি দামের চেয়ে সামান্য লাভ করেই সবজি বিক্রি করে থাকি। কিছুদিন আগে সবজির বাজার একটু বেশি ছিল। বিক্রিও বেশি ছিল। এখন সবজির দাম অনেক কমে যাওয়ায় ক্রেতাও কমে গেছে।

ক্রেতা কমার কারণ জানান, এখন অনেক গরম পড়েছে। তাই মানুষ ঘরের বাহিরে বের হচ্ছেনা। তারা স্থানীয় বাজারেই বেশি কেনাকাটা করেন। এখন যা বিক্রি করি তাতে সংসার পরিচালনা করাই কঠিন হয়েছে। প্রতিদিনেই ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে।

এছাড়া এখন দাম কমে যাওয়ায় ক্রেতারা চাহিদার তুলনায় বেশি ক্রয় করছেন। ফলে প্রতিদিন ক্রয় করার চাহিদা কমে গেছে।

ক্রেতা খাতির হোসেন (৪৫) বলেন, সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। এখন বাজার সাধারণ মানুষের নাগালেই আছে। বাজার ঘুরে দরদাম সম্পর্কে তিনি বলেন, বাজারে ১০/২০ টাকা কেজিতে সবজি পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া প্রতিদিন বাজারে এসে সবজি কিনতে হয় না। একদিন কিনলে সাত দিন পর্যন্ত চলে যায় বলে জানান।

খুচরা বাজারে সবজি নিতে আসা গৃহবধূ ফাতেমা আক্তার (৫৫), রত্না বেগম (৩৮) ও আব্দুল্লাহ (৪৫) বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে আজ সবজির কেজি প্রতি ১০-২০ টাকা কমেছে। আবার কিছু কিছু সবজির দাম একটু বৃদ্ধি পেয়েছে। মরিচ ছিল ৩০ টাকা আজ ৪০ টাকা কেজি, আলু ছিল ১৫ টাকা আজ ১৮ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ছিল ৪০ টাকা আজ ৪৭ টাকা কেজি, পটল ১৫ টাকা কেজি থাকলেও আজ ২০ টাকা কেজি, বেগুন ২০ টাকা কেজি থাকলেও আজ ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের এই সময়ে সবজির দাম অনেক বেশি থাকলেও। এ বছর এ সময়ে সবজির দাম অনেক কম। আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষেরা অনেক স্বস্তিতে আছেন।

সবজি বাজারের আড়তদার লাল মিয়া (৭২), আলম মিয়া (৬৫) ও আনারুল মিয়া (৪৫) বলেন, বর্তমান স্থানীয় ভাবে ও মোকাম গুলোতে সবজির আমদানি বেশি হওয়ায় সবজির দাম অনেক কমে গেছে। এতে করে বিক্রি অনেক কমে গেছে। প্রতিদিনের বিক্রি কম হওয়ায় সবজি পঁচে নষ্ট হচ্ছে ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। ক্রেতা কম আসার কারণ জানান, এখন প্রচন্ড গরম থাকায় মানুষ বাহিরে কম বের হচ্ছে। মানুষের টাকা পয়সা কমে গেছে ফলে বিক্রিও কমে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন বলেন, এবারে আবহাওয়া অনুকুল থাকায় স্থানীয় ভাবে সবজি বাজারে আসা শুরু হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় ভাবে সবজির আমদানি হলে বাজারে সবজির মূল্য স্বাভাবিক ভাবে কমে যাবে। আরও বলেন, স্থানীয় ভাবে যে সকল সবজি চাষ হয় তাতে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। কৃষকদের বেশি বেশি করে সবজি চাষের পরামর্শ দেয়া অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুনঃ