
সিলেট জেলা প্রতিনিধি : দুই শতাব্দী কালের সিলেট জেলার ইতিহাস যদি পর্যালোচনা করা যায়, তাহলে অবশ্যই গোলাপগঞ্জ থানাকে নানা দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। শিক্ষা দীক্ষায় এখনও গোলাপগঞ্জ থানা অগ্রবর্তী, সম্পদেও। প্রাকৃতিক সম্পদের অফুরন্ত ভান্ডার ছাড়া রূপ সৌন্দর্য়ের নৈসর্গ যে কোন দেশী বিদেশী পর্যটকের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম। থানায় রয়েছে সবুজ সুরমা ও কুশিয়ারা বিধৌত উর্বর শস্যভূমি,রয়েছে সবুজ বন বনানী ঘেরা দোআশ,বেলা দোআশ মাটি সমৃদ্ধ উচু নীচু টিলাভূমি। হাওর বাওরও কম নয় তুলনামূলক হিসেবে। থানার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ এর শিক্ষিত দীক্ষিত পরিক্রমা মানব শক্তি। এই শক্তি যেমন আছে দেশের প্রশাসনিক উচ্চ পর্যায়ে তেমনি আছে বিদেশে। এক সময় বাংলাদেশ গোলাপগঞ্জ থানা নিয়ে গর্ব করতো। কালের পরিক্রমায় গোলাপগঞ্জ থানা তার সে গৌরব কিছুটা হারালেও একেবারেই পিছু হয়ে যায়নি। সব রকম ভূ-প্রকৃতির গুণগত বৈশিষ্ট এখানকার মাটির অভ্যন্তরে। অবারিত সম্পদের ভান্ডার গোলাপগঞ্জ থানার গত অর্ধ শতাব্দীর গৌরব হচ্ছে তেল ও গ্যাস ভান্ডার। তেলও গ্যাস আবিস্কৃত হবার পর এ মাটিতে পা পড়েছে এদেশের প্রায় সকল প্রধানমন্ত্রীর। বিদেশী তেল ও গ্যাস বিশেষজ্ঞদের আনা গোনাতো অব্যাহতই আছে। আজকের এ প্রতিবেদন থানার কৈলাশটিলা তেলও গ্যাস কুপকে কেন্দ্র করেই।
কৈলাশ টিলার আরেকটি পরিচয় রয়েছে। আধ্যাত্মিক সার্থক কৈলাশ শাহ (রঃ) এর নামানুসারে এর নাম হয়েছে। ওই টিলাতেই সেই আধ্যাত্মিক পুরুষের মাজার আছে। প্রতিদিন এই মাজারকে কেন্দ্র করেও লোক সমাগম হয়। সিলেটের মাটি, সিলেটের কথা গ্রস্থ সহ হয়রত শাহজালাল (রহঃ) এর সিলেট বিজয়ের উপর রচিত গ্রস্থগুলোতে এই সাধকের উপর বিস্তারিত আলোচনা আছে। কৈলাশ টিলাকে নিয়ে গোলাপগঞ্জ থানার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের আপামর জনগণ গর্বিত। এটা যেমন আধ্যাত্মিক দিক থেকে, তেমনি প্রাকৃতিক অপরূপ রূপভান্ডার ও খনিজ সম্পদের কারণে। এখানকার তেল ও গ্যাস সারাদেশে যায় মানুষ উপকৃত হয়। দেশ হয় আর্থিক ভাবে লাভবান। প্রকৃতিগত ভাবে মানবতার এই উপকারের মধ্যে আনন্দ ও গৌরব দুটোই আছে। কৈলাশটিলা লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের এখন বলতে গেলে কেন্দ্র বিন্দু। ১৯৯১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী লক্ষণাবন্দ ইনিয়নের জনসংখ্যা ছিল ১৮ হাজার ৩৫। বর্তমানে তার চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। এ ইউনিয়নের মোট জমির পরিমান ৮ হাজার ৫শ ৭১ একর। কৈলাশ টিলা তেল ও গ্যাসকুপ সম্পর্কে আলোচনার পূর্বে সিলেট বিভাগের খনিজ সম্পদ সম্পর্কে একটা ধারণা নেয়া দরকার। এটা আজকের প্রজন্মের জন্য জানা অত্যান্ত জরুরী। সিলেট গ্যাস ফিল্ডস হচ্ছে একটি খনিজ সম্পদ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সিলেট বিভাগের চার জেলায় বিস্তৃত। পেট্টোবাংলার একটি বৃহত্তর কোম্পানী। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেল আবিস্কার এবং উৎপাদনের ক্ষেত্রে এ কোম্পানী পথিকৃৎ হিসেবে কাজ করে আসছে। ১৯৫৫ সাল থেকে এ কোম্পানীর যাত্রা। শুরু এর পূর্বসূরী হচ্ছে পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম লিমিটেড। পাকিস্তান পেট্রোলিয়া কোম্পানী লিমিটেডই ১৯৫৫ সালে সিলেট জেলার হরিপুরে সর্বপ্রথম গ্যাস আবিস্কার করে। এটিই এদেশের সর্ব প্রথম গ্যাস আবিস্কার করে। এটিই এদেশের সর্বপ্রথম আবিস্কৃত গ্যাস কুপ। ১ নং গ্যাস কুপ নামে এটা চিহ্নিত। পরবর্তীতে ১৯৫৯ সালে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার এলাকার টেংরাটিলায় ছাতক কুপ ১ নং খননের মাধ্যমে দ্বিতীয় গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কৃত হয়। ১৯৬০ সালে ছাতক কুপ ১নং থেকে উৎপাদিত গ্যাস ১১ মাইল দীর্ঘ ৪ ইঞ্চি গ্যাসের উচ্চ চাপ বিশিষ্ট পাইপ লাইন দ্বারা দৈনিক প্রায় ৪ মিলিয়ন ঘনফুট হারে ছাতক সিমেন্ট কারখানায় সরবরাহের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম বাণিজ্যক ভিত্তিতে গ্যাস উৎপাদন এবং বিপননে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়। ১৯৬১ সালে হরিপুর গ্যাস ক্ষেত্রের কুপ ৩নং থেকে উৎপাদিত গ্যাস হরিপুর থেকে ফেঞ্চুগঞ্জ পর্যন্ত ৩০ মাইল দীর্ঘ ৮ ইঞ্চি গ্যাসের উচ্চ চাপ বিশিষ্ট পাইপ লাইনের মাধ্যমে উচ্চ চাপ বিশিষ্ট পাইপ লাইনে দৈনিক প্রায় ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানায় সরবরাহ শুরু করা হয়। ১৯৮৪ সালের ৫ জুলাই কৈলাশ টিলা গ্যাস ফিল্ড একটি উৎপাদন শীল কুপসহ এ কোম্পানীর সাথে একীভূত হয়। ১৯৮৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর হরিপুর গ্যাস ক্ষেত্রের ৭ নং কুপে এদেশের সর্বপ্রথম খনিজ তেলের সন্ধান পাওয়া যায়। বাংলাদেশের তেল অনুসন্ধানের ইতিহাস এটা একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বর সালে রশিদপুর গ্যাস ক্ষেত্রে নির্মিত দৈনিক ৬০ এম.এম.সি এফ গ্যাস পরিশোধন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি গ্লাইকল প্লান্ট ও দৈনিক ৭০ এম এম সি এফ গ্যাস পরিশোধন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সলিড ডেসিক্যান্ড (সিলিকাজেল) প্লান্ট কোম্পানীর আওতায় ন্যস্ত করা হয়। ১৯৯৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর কৈলাশ টিলা গ্যাস ক্ষেত্রে নির্মিত দৈনিক ৯০ এমএমসি এফ পরিশোধন ক্ষমতা সম্পন্ন মলিকুলার সীভ টার্বো এক্স পাওয়ার প্লান্ট এ কোম্পানীতে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড কোম্পানীর আওতায় ৬ টি ক্ষেত্র রয়েছে। এ গুলো হচ্ছে হরিপুর,কৈলাশটিলা, রশিদপুর, বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চগঞ্জ ও ছাতক। তম্মমেধ্য হরিপুর গ্যাস ক্ষেত্রের ১টি কুপ,কৈলাশ টিলা গ্যাস ক্ষেত্রের ৫টিপ কুপ এবং রশিদপুর গ্যাস ক্ষেত্রের ৪টি কুপ থেকে দৈনিক গড়ে ১৪০ এমএসসি এফ পরিশোধিত গ্যাস উত্তর দক্ষিণ পাইপ লাইনের মাধ্যমে তিতাস গ্যাস সিস্টেম এবং জালালাবাদ গ্যাস সিষ্টেমে সরবরাহ করা হচ্ছে। একই সাথে সম পরিমাণ গ্যাসের উপজাত হিসেবে দৈনিক গড়ে ৮শ ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদিত হচ্ছে। এই গ্যাসের উপজাত পেট্রোলিয়াম দ্রবাদি যথা পেট্রোল, ডিজেল,আইকেও এবং কনডেনসেট বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেখশনের অংঙ্গ প্রতিষ্ঠান সমুহের মাধ্যমে বাজারজাত করা হচ্ছে। এ হলো সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিঃমিঃ কোম্পানী সম্পর্কে একটা মোটামোটি ধারণা। এবার কিছুটা তথ্য দেয়া যাক কৈলাশটিলা তৈল মূল্যায়ন,গ্যাস উন্নয়ন (কুপ নং -৪) প্রকল্প সম্পর্কে। প্রকল্পটি সিলেট জকিগঞ্জ সড়কের পাশেই অবস্থিত। কৈলাশটিলা হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ গ্যাস ক্ষেত্র। এটি আবিস্কৃত হয় ১৯৬২ সালে এবং ১৯৮৩ সালে কুপ নং ১থেকে গ্যাস উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে এই ফিল্ডে বিদ্যমান ৩টি কুপের মধ্যে দুটি থেকে গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে এবং কুপ নং ১ থেকে পুণরায় উৎপাদন লক্ষ্যে ওয়ার্কেওভার কার্যক্রম চলছে। কৈলাশটিলা কুপ নং-২ ও ৩ খননকালে কিছু পরিমান পেট্টোলিয়াম তৈল উৎপাদন হওয়ায় এ ক্ষেত্রে খনিজ তৈর প্রাপ্তির সম্ভাবনা অংকুরিত হয়। এই আবিস্কারের প্রেক্ষিতে তৈর মজুদ পরিস্থিতি মূল্যায়নের লক্ষ্যে এই প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হয়। প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন শেষে কৈলাশটিলা ৪ নং কুপ থেকে দৈনিক ৫৫০ ব্যারেল পেট্টোলিয়াম তৈল উৎপাদনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন যোগ্য তৈলাধারে সন্ধান পাওয়া না গেলে কুপটিকে গ্যাস উৎপাদনকার কুপ হিসেবে সম্পাদন করা হবে। সে ক্ষেত্রে কুপটি থেকে দৈনিক ৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস এবং ৩শ ব্যারেলের অধিক উপজাত তৈল (এনজিএল) উৎপাদিত হবে। কৈলাশ টিলা তৈল মূল্যায়ন,গ্যাস উন্নয়ন কুপ নং ৪ প্রকল্পটির। অর্থায়ন সম্পুন ভাবে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিঃমিঃ’র নিজস্ব সম্পদ থেকে করা হচ্ছে। তবে অর্থায়নের সুবিধার্থে বাংলাদেশের পেট্টোলিয়াম কর্পোরেশনের নিকট থেকে পেট্টোলিয়াম তৈল উপজাত তৈলের অগ্রীম বিক্রয় মুল্য হিসেবে ১০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। এ প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ১৯৯৩ সালের জুলাই মাসে। সম্পাদনের সম্ভাব্য সময় ১৯৯৮ সালের এপ্রিল মাস। এর সম্ভাব্য গভীরতার ৩ হাজার ৩শত মিটার কুপের ধরণ ভার্টিক্যাল এবং খনন রিগ হচ্ছে আইপি এস কার্ড ওয়েল। উৎপাদন ক্ষমতা তৈল দৈনিক ৫৫০ ব্যারেল এবং গ্যাস দৈনিক ৩০ এমএসসি এফ এবং এনজিএল ৩শ ব্যারেল। খনন ঠিকাদার হচ্ছে বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম এক্স প্লোরেশন কোম্পানী লিঃমিঃ। কুপটির খনন ক জের উদ্বোধন ধরেন চলতি গত ৩০আগষ্ট বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তবে বেগম খালেদা জিয়াই প্রথম সরকার প্রধান যিনি ১৯৯২সালের ১৯ জানুয়ারী কৈলাশটিলায় আসেন এবং ফ্রকাশনেশন ও এলপিজি প্লান্ট উদ্বোধন করেন। কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড নিয়ে গর্বের পাশাপশি লক্ষণাবন্দ ইউনিয়ন বাসী তথা গোলাপগঞ্জ বাসীর দুঃখ বেদনাও আছে। পৃথিবীর সব দেশেই এটা সাধারণ নিয়ম যে,প্রাকৃতিক সম্পদ যেখানে থেকেই অহরিত হোকনা কেন,স্থানীয় জনগণ পায় তার ন্যায্য হিস্যা। সে তুলনায় গোলাপগঞ্জ বাসীর দূর্ভাগ্যই বলতে হয় যে,গোলাপগঞ্জের তেল গ্যাস সারা দেশে যাচ্ছে শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত হচ্ছে,দেশ উপকৃত হচ্ছে আর্থিক দিক থেকে। কিন্তু গোলাপগঞ্জের মানুষ তার ন্যায্য হিস্যা পায়নি। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, বৈষম্যমুলক দৃষ্টি ভঙ্গির কারণেই এটা হয়েছে। কৈলাশটিলায় তেল ও গ্যাসের সন্ধান লাভের পর থেকেই জনগণ আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। সংসদে বহুবার দাবী তোলা হয়েছে। কিন্তু গোলাপগঞ্জবাসী তাদের ন্যায্য হিস্যা পায়নি। এবার নতুন প্রজন্মের জন্য কিছুটা পরিসংখ্যান দিতে চাই। এ থেকে বুঝা যাবে আমাদের সিলেট বিভাগ থেকে কি পরিমান প্রাকৃতিক সম্পদ আহরিত হয়,টাকার অংকেই বা তার পরিমান কত দাঁড়ায়। এ থেকে আরো একটা বিষয় স্পষ্ট হবে সেটা ন্যায্য হিস্যা পাওয়া আর না পাওয়া। সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড কর্তৃক প্রকাশিত বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকেই এসব তুলে আনা হয়েছে। ১৯৯৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নেয়া পরিসংখ্যা অনুযায়ী হরিপুর গ্যাস ক্ষেত্রে (প্রমানিত ও সম্ভাব্য) মোট মজুদ গ্যাসের পরিমান ৪৪৪ বিলিয়ন ঘনফুট,উত্তোলন যোগ্য মজুদ গ্যাসের পরিমান (প্রমানিত ও সম্ভাব্য) ২৬৬ বিলিয়ন ঘফুট ৯৬ এর জুন পর্যন্ত উত্তোলন করা হয়েছে ১৫৭ দশমিক ২৯৫ বিলিয়ন ঘনফুট,অবশিষ্ট উত্তোলন যোগ্য মজুদ ১০৮ দশমিক ৭০৫ বিলিয়ন ঘনফুট। একই সময়ে কৈলাশটিলায় মোট মজুদের (প্রমানিত ও সম্ভাব্য) পরিমান ৩ হাজার ৬শ ৫৭ বিলিয়ন ঘনফুট,উত্তোলন যোগ্য ৯ প্রমানিত সম্ভাব্য২ হাজার ৫শ ২৯ বিলিয়ন ঘনফুট উত্তোলন করা হয়েছে ৯৯ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ঘনফুট এবং অবশিষ্ট আছে ২ হাজার ৪শ ২০ দশমিক ৯শ ২৪ বিলিয়ন ঘনফুট। রশিদ পুরে এ সময়ে মোট মজুদ (প্রমানিত ও সম্ভাব্য) ২ হাজার ২শত ৪২ বিলিয়ন ঘনফুট, উত্তোলন যোগ্য ১৩শ ৯ বিলিয়ন ঘনফুট, উত্তোলন করা হয়েছে ৬৬ দশমিক ৪শ ৫৪ বিলিয়ন উত্তোলন যোগ্য ১শ ১৪ বিলিয়ন ঘনফুট। এখানে গ্যাস উত্তোলন শুরুই হয়নি। ফেঞ্জুগঞ্জে মোট মজুদ ৩৫০ বিলিয়ন ঘনফুট, উত্তোলন যোগ্য ২১০ বিলিয়ন ঘনফুট,অবশিষ্ট আছে ১১শ ১৩ দশমিক ৫শ ৩৫ বিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে হরিপুরের ৬নং কুপ থেকে গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে। কৈলাশটিলার ৩ টি কুপের মধ্যে ১নং কুপ থেকে অতিরিক্ত পানি আসার কারণে ৯৫সালের ১২ মে থেকে উত্তপাদন বন্ধ । বর্তমানে এটি ওর্য়াক অডারের কাজ চলছে। বিয়ানীবাজার ও ফেঞ্চুগঞ্জ উৎপাদনের অপেক্ষায় আছে। ছাতকের একটি মাত্র কুপের উৎপাদন পানি আসার কারণে ৮৮ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। এবার নজর দেই তেলের দিকে। তেলের পরিসংখ্যানটিও ও ১৯৯৬ সালের ৩০ জুনের। সিলেটের একমাত্র হরিপুর থেকে তেল উৎপাদিত হত। কুপ দিয়ে পানি আসার কারণে ৯৫ সালের ১৫ জুলাই থেকে তেল উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। হরিপুর তেল ক্ষেত্রে মোট তেল মজুদ (অনুমিত) ৮ দশমিক ২০ মিলিয়ন ব্যারেল (অপরিশোধিত)। উত্তোলন যোগ্য (প্রমানিত ও সম্ভাব্য) ১ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ব্যারেল উত্তোলন করা হয়েছে দশমিক ৫৬১ মিলিয়ন ব্যারেল। বর্তমানে হরিপুরে ১টি কৈলাশটিলার ৩ টি রশিদপুরের ৪টি কুপ দিয়ে দৈনিক গড়ে ১৬৩ এমএমসি এফ গ্যাস এবং ১১৪৫ মিলিয়ন ব্যারেল উপজাত দ্রব্য উৎপাদিত হয়। সিলেটের তেল ও গ্যাস কুপ গুলো থেকে ৯০-৯১সালের মোট মুনাফা (গ্রস) ১৪ কোটি ৯লাখ ৮১ হাজার টাকা,৯১-৯২ সালে ১৫ কোটি ৬৪ লাখ ৮৬হাজার টাকা ৯২-৯৩ সালে ১৩ কোটি ৩৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ৯৩-৯৪ সালে ১৭ কোটি ৭৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ৯৪-৯৫ সালে ২৩ কোটি ১৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। এ হলো মোটামুটি একটা পরিসংখ্যান।