
কুয়েল ইসলাম সিহাত, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা সহ উত্তরাঞ্চলে এক সময় প্রচুর কাউন চাষ হতো। আবার এক সময় গরীবের প্রধান খাদ্যও ছিল এ কাউন। দিনের পর দিন মানুষের খাদ্যাভাস পরিবর্তনের পাশাপাশি মানুষের অবস্থারও পরিবর্তন ঘটেছে। ফলে এখন আর সেভাবে এসব অঞ্চলে কাউন চাষ হয় না। কাউনের জায়গা দখল করে নিয়েছে বাদাম, ভূট্টা, বোরো ধানসহ বিভিন্ন প্রকার অর্থকারি ফসল।
কালের আবর্তে কাউন চাষ হারিয়ে গেলেও নিজেদের খাওয়ার জন্য পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা এলাকায় কয়েকজন কৃষক কাউন চাষ করেন। কাউন চাষ তেমন দেখা না গেলেও কাউনের চালের নানা ধরনের খাবার ধনীদের বিলাসী খাবারে পরিণত হয়েছে।বোদা উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের উলিপুর গ্রামের কাউন চাষী সাগর ইসলাম জানান, তিনি ১৪ শতক জমিতে কাউন চাষ করেছেন। আলু উঠিয়ে কাউন চাষ করায় তার তেমন খরচ হয়নি। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় তিনি কাউন চাষ করেছেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে কাউনের বাজার মুল্য ভাল, এক কেজি কাউন বাজারে একশত পঞ্চাশ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসেবে একমণ কাউন এর বাজার মুল্য ছয় হাজার টাকা।
একই ইউনিয়নের ছেতনাইপাড়া এলাকার ওসমান গণি জানায়, এই অঞ্চল হতে কাউন চাষ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছিল। বর্তমানে কাউন এর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে অল্প পরিমাণ জমিতে কাউন চাষ শুরু করেছে।
সাগর ইসলাম ছাড়াও উপজেলায় কয়েক জায়গায় হাতেগোনা কয়েকজন কাউনের চাষ করেন। কাউন চাষে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ে এবং কাউন গাছ থেকে জমির ভালো কম্পোষ্ট সার তৈরি হয়। কাউনের চাল বর্ণে হলুদ।এর চালের ভাত খেতে খুবই সুস্বাদু। ছোট দানাবিশিষ্ট কাউন চালের পায়েসের স্বাদ দারুণ। এ ছাড়া এ চাল দিয়ে নানা ধরনের খাবারও তৈরি করা যায়। মিষ্টান্ন পায়েস, ক্ষির ও ঝাল খাবার হিসেবে খিচুরি, পোলাও রান্নায় কাউন চাল এখন ধনীদের প্রিয় বিলাস খাবার।এ বিষয়ে বোদা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আহমেদ রাশেদ উদ নবী জানান, ছোট দানাবিশিষ্ট কাউন প্রায় সব ধরনের মাটিতে চাষ করা যায়। তবে পানি জমে না এমন বেলে দো-আঁশ মাটিতে এর ফলন ভালো হয়। আগের মতো এখন আর কাউন চাষ করা হয় না কৃষকরা তবে বিলুপ্তি প্রায় এই শস্যটি আগামি মৌসুমে উৎপাদনের ও ঐতিয্য ধরে রাখতে কৃষক পর্যায়ে সর্বাত্তক সহযোগিতা প্রদান করা হবে ।