ঢাকা, রবিবার, ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
কুড়িগ্রামে গণ অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশ
ভারতে পালানোর সময় যুবলীগ নেতা নাজিম উদ্দীন সোহেল গ্রেপ্তার
তানোরে সীমানা পিলারকে কেন্দ্র করে হামলা মটরসাইকেল ভাংচুর মারপিট নারীসহ আহত ৪
ভারতীয়সহ ১৬ জনকে পঞ্চগড়ে দুইটি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ঠেলে দিল বিএসএফ
পাঁচবিবিতে আয়মারসুলপুর ইউনিয়ন বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
বিএনপি’র নেতৃত্বে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব : আনোয়ার হোসেন বুলু
নওগাঁয় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সভা
মাদকদ্রব্যের উপ-পরিচালক শামীম আহম্মেদের অপসারণ চেয়ে মশাল মিছিল
খেলনা পিস্তলসহ ডাকাত দলের ৫ সদস্য গ্রেফতার
৪১ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্যসহ গ্রেফতার ১
পিরোজপুরে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল চালকের
নান্দাইলে জুলাই গণঅভূত্থানে আহত ইমরান হোসাইনের মৃত্যু
শার্শার রঘুনাথপুর গ্রামে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার
ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ডা: আকরাম বলেন দেশবিরোধী যে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রস্তুত
প্রেসক্লাব নান্দাইলের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত:-সভাপতি হান্নান সম্পাদক রায়হান

বর্ষায় রূপগঞ্জে চাঁই’য়ের কদর বেড়েছে

রূপগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি: উপজেলার গোলাকান্দাইলের হাটের এক কোনে বসে আপন মনে চাঁই বুনে যাচ্ছেন খালেক মিয়া। প্রতিদিন এক জায়গায় তিনি থাকেন না। বিভিন্ন হাটে-বাজারে ঘুরে ঘুরে তাৎক্ষণিক অর্ডার নিয়ে মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে খ্যাত মানুষের ইচ্ছামতো চাঁই তৈরি করে দিচ্ছেন তিনি। চাঁইয়ের ধরনবেদে মূল্যও হরেক রকম হয়ে থাকে। তার কাছে সর্বনিন্ম ২৫০ টাকার চাঁই থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা মূল্যের চাঁইও পাওয়া যায়।
খালেক মিয়া বলেন, বর্ষার পানি আইতাছে, জোয়ারের পানির লগে নতুন মাছ ধরার জন্য জেলেরা চাঁই বানানোর অর্ডার দিচ্ছে। কেউ ছোট আবার কেউ বড় চাঁই বানানোর অর্ডার দিচ্ছেন। তবে মাঝারি সাইজের চাঁইয়ের চাহিদাই বেশি। উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের কাজীবাড়ি এলাকার আবুল হোসেন বলেন, বছরের এ সময়টাতে চাঁই দিয়ে মাছ ধরার মজাই আলাদা। জমির আইল কেটে চাঁই বসিয়ে দিলেই নতুন পানির সাথে ভেসে আসা মাছগুলো চাঁইয়ে আটকা পড়ে যায়। এছাড়া নদীর তীরে বাঁশের খুঁটির সাথে চাঁই বেঁধে রাখলে সকালে বাইম, বড় বড় ইছা, কৈ, শিংসহ বিভিন্ন জাতের মাছ পাওয়া যায়।
উপজেলার খামার পাড়া এলাকার মতিন মিয়া বলেন, চাঁইয়ের মাধ্যমে নতুন পানির মাছ খাওয়ার মজা অনেক। গ্রামের খাল বিলে মাছ ধরার পুরনো উপকরণের একটি হচ্ছে চাঁই। বর্ষার আগমণে নানা প্রজাতির দেশি জাতের ছোট মাছ ও পোনার বিচরণ বাড়ছে। চিংড়ি ও দেশি মিঠা পানির ছোট মাছ ও পোনা ধরার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশের তৈরি বিশেষ ফাঁদ। মাছ ধরার এ ফাঁদের পরিচিতি ‘চাঁই’ নামে। এই চাঁই বুনে বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক মানুষ সচ্ছল জীবনযাপন করছেন।
গ্রীষ্মের শুরু থেকে এ অঞ্চলের খাল-বিল ও নদী-নালায় শুরু হয় চাঁই দিয়ে মাছ ধরা। বিশেষ পদ্ধতিতে বাঁশ দিয়ে নদী-খালে, বিলে ৪-৫ ফিট ফাঁকে ফাঁকে বসানো হয় একটি করে চাঁই। পানিতে চাঁই বসানো হয় মূলত চিংড়ি মাছ শিকারের জন্য। কিন্তু ধরা পড়ে পুঁটি, বেলে, টেংরাসহ সব প্রকারের ছোট মাছ। চাঁইগুলো প্রতি সপ্তাহে বিক্রি হয় উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে। উপজেলার চাহিদা পূরণ করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয় এসব চাঁই। উপজেলার কায়েতপাড়া এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাঁই তৈরি হচ্ছে।
চাঁই তৈরির প্রধান উপকরণ হচ্ছে বাঁশ। এই বাঁশগুলো উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়। একটি বাঁশে ৬টি চাঁই হয়। ১০০টি চাঁই বানাতে খরচ হয় ১০ হাজার টাকার মত। বিক্রি হয় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। শ্রমিকরা প্যাকেজ আকারে চাঁই বানানোর কাজ করে। মাপমতো বাঁশ কাটা, শলা তোলা, শলা চাঁছা, সুতা দিয়ে খোল বাঁধা, চটা বাঁধা, মুখ বাঁধা চুক্তি ভিত্তিতে করে থাকেন। এতে প্রতি শ্রমিক গড়ে দৈনিক আয় করেন ৫০০ টাকা। গ্রীষ্মের শুরু থেকে গ্রামাঞ্চলের খাল-বিল ও নদী-নালায় চাঁই দিয়ে মাছ ধরার ধুম পড়ে যায়। যা চলতে থাকে ভাদ্র-আশ্বিন মাস পর্যন্ত। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারগুলোতে মাছ ধরার এই উপকরণটির বাজারজাত ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।

শেয়ার করুনঃ