ঢাকা, শনিবার, ১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
শার্শার রঘুনাথপুর গ্রামে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার
ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ডা: আকরাম বলেন দেশবিরোধী যে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রস্তুত
প্রেসক্লাব নান্দাইলের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত:-সভাপতি হান্নান সম্পাদক রায়হান
নওগাঁয় একুশে পরিষদের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য ফল উৎসব
আলীকদমের কুরুকপাতায় যৌথ অভিযানে ইয়াবাসহ ৩ যুবক আটক
গাজীপুর-২ আসনে জামায়াতে ইসলামী প্রার্থীর নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য মোটরসাইকেল শো-ডাউন
সৌদিতে আটকে পড়া ইরানি হাজিদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাদশাহ সালমানের
ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন’র প্রত্যাহারের দাবিতে পটুয়াখালীতে ছাত্র অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ কর্মসূচি
কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের করোনা পিসিআর ল্যাবের সব যন্ত্রাংশ চুরি
না ফেরার দেশে সাংবাদিক মুন্সী রেজাউল করিম মহব্বত এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া
বাগমারায় শুভডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদকের ৩১ দফা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ
না ফেরার দেশে সাংবাদিক মুন্সী রেজাউল করিম মহব্বত: এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া
কালিগঞ্জে সরকারি আইন লঙ্ঘন করে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি
শেরপুর জেলা বিএনপি ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণ মিছিল, লিফলেট বিতরণ
নড়াইলে সেনাবাহিনীর অভিযানে মাদক কারবারিসহ অনলাইন প্রতারক চক্রের ৩ সদস্য আটক

বাদাম চাষিদের সাফল্য-হতাশার গল্প তিস্তার চরজুড়ে

তিস্তার বুকে ভেসে ওঠা অসংখ্য চর এখন সবুজ বাদামের গালিচায় ঢাকা। মাঠজুড়ে একের পর এক বাদাম ক্ষেত, আর সেই ক্ষেতে ব্যস্ত কৃষকেরা। কেউ কাঁধে ঝুঁড়ি বেঁধে বাদাম তুলছেন, কেউবা শুকানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া, থেতরাই, গুনাইগাছ ও বজরা ইউনিয়নের চরাঞ্চলে এখনই বাদাম তোলার মৌসুম। এই চরগুলোয় বসবাস করা হাজারও কৃষকের কাছে বাদাম চাষ যেন এক উন্নয়নের নাম। কেউ সেই উন্নয়নের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন, কেউ আবার তিস্তার হঠাৎ রুদ্ররূপে চরের উঁচু এলাকায় বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে।
আলী আকবর নামের এক চাষি জানান, তিনি প্রায় ২ একর জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। পরিশ্রম আর পরিকল্পনা মিলে এবার তার আশা ৭০ মণ বাদাম পাবেন, যা বিক্রি করে লাভ হতে পারে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। তার কণ্ঠে ছিল আত্মবিশ্বাস। তিনি বলেন, এ বছর যদি ভালো দাম পাই, তাহলে ঋণ শোধ করেও কিছু হাতে থাকবে। এই চরের মাটি যেন আবার আশার আলো দেখাচ্ছে। অন্যদিকে, নিচু এলাকার চাষিদের চোখে-মুখে হতাশা। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অনেক ক্ষেত ডুবে যায় পানিতে। গোড়াইপিয়ার চরের কৃষক খোয়াজ মন্ডল দুঃখ করে বলেন, প্রায় দেড় একর জমিতে বাদাম করেছিলাম। কিন্তু পানি এসে সব শেষ। কিছু বাদাম উঠালাম বটে, কিন্তু অনেকটার ভেতর দানা-ই নেই। শুধু খোসা। খরচ উঠে আসবে কি না, তা নিয়েই দুশ্চিন্তা। তার হিসেবে, জমি থেকে বাদাম তোলা, ঘরে নেওয়া, সব মিলিয়ে খরচ হবে প্রায় ৯০ হাজার টাকা। অথচ উৎপাদন দেখে মনে হচ্ছে, লোকসান হবে নিশ্চিত। চরবাসীর জীবনের গল্প যেন নদীর মতোই- কখনও শান্ত আবার কখনও ভয়ংকর। যারা উঁচু জমিতে চাষ করেছেন, তারা খুশি। কিন্তু যাদের ক্ষেত নিচু, তাদের মুখে শুধু হতাশার গল্প। চাষি বকুল মিয়া বলেন, তিস্তার পানি আমাদের জীবন। আবার এই পানিই কখনো কখনো আমাদের সর্বনাশ করে দেয়। তবু আমরা আমাদের উন্নয়নে তিস্তার চরাঞ্চলো বাদাম চাষ করে আসছি। এ এলাকার চাষিরা বলেন, যদি তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হতো, তবে আর এভাবে প্রতি বছর ক্ষতির মুখে পড়তে হতো না। তিস্তাপারের এই চরগুলো শুধু বালু ও কাঁকর দিয়ে গড়া জমি নয়। এই জমিতে রয়েছে মানুষের স্বপ্ন, শ্রম আর সাহস। বাদাম চাষ যেমন তাদের হাসি এনে দেয়, তেমনি কখনও কখনও এনে দেন চোখের জলও। তবে চাষিরা এখনো স্বপ্ন দেখেন- তিস্তা একদিন শুধু ক্ষতির গল্প বলবে না, বলবে টিকে থাকার, ঘুরে দাঁড়ানোর আর নতুন করে শুরু করার গল্প। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন কালবেলাকে বলেন, এবার বাদামের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ৩৬৫ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৩৮ টন। কিছু নিচু এলাকায় বাদাম নষ্ট হলেও উঁচু জমির ফলন খুব ভালো হয়েছে। বাজার ভালো থাকলে কৃষকেরারা পুশিয়ে নিতে পারবে।

শেয়ার করুনঃ