
নুরুল আমিন ভূঁইয়া দুলাল নিজস্ব প্রতিবেদক: লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ দেনায়েতপুর এলাকার বহুল আলোচিত অপরাধী মো. জাকারিয়া ওরফে সজীব (২৪) অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে রায়পুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের বাসাবাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতারকৃত জাকারিয়া মেস্তুরী বাড়ির বাসিন্দা ও দক্ষিণ দেনায়েতপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শফিক ও পারুল বেগমের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, চুরি, ডাকাতিসহ অন্তত ছয়টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সে এলাকায় অপরাধের রাজত্ব কায়েম করে আসছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, তার বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ দিলেও রহস্যজনক কারণে আইনের আওতায় আসছিল না।পুলিশ জানায়, সজীব অত্যন্ত চতুরভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে একাধিক অপরাধ সংঘটিত করলেও অবশেষে কৌশলী অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে থানায় এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।এলাকার সাধারণ মানুষ তার গ্রেফতার হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশেষ করে রাতের বেলা চুরি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে তার সক্রিয়তা স্থানীয়দের নিরাপত্তাহীনতায় ফেলেছিল। অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পেতেন না, কেউ কেউ এলাকায় বসবাস পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছিলেন।
দক্ষিণ দেনায়েতপুরের এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, এই ছেলেটার জন্য এলাকার ছেলে-মেয়েরা সন্ধ্যার পর বাইরে বের হতে ভয় পেত। আজ তার গ্রেফতার হওয়ায় আমরা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞ।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন বলেন, অপরাধের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় কঠোর অবস্থানে আছি। সজীবের মতো অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
স্থানীয়দের অনেকেই মনে করছেন, সজীব দীর্ঘদিন ধরে যে ‘অদৃশ্য ছত্রচ্ছায়ায়’ রক্ষা পেয়ে যাচ্ছিলেন, এবার হয়তো সেই সুরক্ষার জাল ছিন্ন হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলো যাতে দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তি হয়, সে বিষয়ে প্রশাসনের সদিচ্ছার ওপর আস্থা রাখছেন এলাকাবাসী।একজন নারী শিক্ষক বলেন, এই ধরনের অপরাধীরা যদি আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায়, তাহলে সমাজে অপরাধ উৎসাহ পায়। আমরা চাই এবার সজীব দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাক। পুলিশের এ সফল অভিযানে যেমন অপরাধ দমনের নতুন বার্তা মিলেছে, তেমনি আবারও প্রমাণিত হলো—আইনের হাত দীর্ঘ এবং অপরাধ যত শক্তিশালীই হোক, শেষ রক্ষা হয় না।