মিরসরাইয়ে কুরবানির পশুর চামড়ার উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় ক্ষুদ্ধ এবং হতাশ কুরবানী দাতারা। অপরদিকে হতাশ গ্রাম থেকে চামড়া সংগ্রহকারী খুচরা ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা।ঈদের দিন বিকেলে উপজেলার বারইয়ারহাট পৌরসভাস্থ রেল গেইট সংলগ্ন এলাকায় যেখানে প্রতিবারের ন্যায় এবারেও বারইয়ারহাট-রামগড় সড়কের পাশে প্রতিবারের মতো এবারেও কুরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ ও বিক্রি'র উদ্দেশ্যে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। গ্রাম থেকে কুরবানী দাতাদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করে পাইকারদের কাছে বিক্রির জন্য আনা হয়। তবে ক্রয়ের সাথে বিক্রির সামঞ্জস্য না থাকা এবং পুষিয়ে উপযুক্ত দামে বিক্রি করা নিয়ে হতাশ প্রত্যন্ত এলাকা থেকে চামড়া সংগ্রহকারীরা।তেমনি একজন চামড়া সংগ্রহকারী হিঙ্গুলী ইউনিয়নের উত্তর ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা শিপুল বলেন, প্রতি বছর আমি মিরসরাইয়ের হিঙ্গুলী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থান থেকে কুরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করে থাকি। তবে গত কয়েক বছর ধরে লস্ট দিতে দিতে ভাবছিলাম পটপরিবর্তনের পরে এবার হয়তো একটা দাম পাবো কিন্তু সেটা আর হলোনা। গ্রাম থেকে কেনা দামে বিক্রি হবে কিনা সেই বিষয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন।তার সাথে আরেক জন মোহাম্মদ মন্টু বলেন, এবার বড় গরুর চামড়া ক্রয় করে বাজারে আনার পরে কেনা দামে বিক্রি করতে পারতেছিনা। আড়াই লক্ষ টাকা দামের পশুর চামড়া বলতেছে ৩০০ টাকা অথচ গ্রাম থেকে কেনা হয়েছে ৩৫০/৪০০ টাকা পর্যন্ত। এবার কঠিন একটা ধরা খাইছি। এরকম জানলে ছোট গরুর চামড়া সংগ্রহ করতাম।নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রাম থেকে পশুর চামড়া সংগ্রহকারীদের একজন বলেন, ভাবছিলাম দেশটা সংস্কার হচ্ছে, একটা পরিবর্তন হয়েছে এবার হয়তো চামড়ার দামে ধস নামবে না কিন্তু এখন দেখি সিন্ডিকেট আগের চেয়েও সক্রিয়। আসলে সাধারণ মানুষের কথা কেউ ভাবেনা।
একজন কুরবানি দাতা বলেন, বাড়ি থেকে কেউ পশুর চামড়া কিনতে কেউ যায়নি তাই সাথে করে বারইয়ারহাট নিয়ে আসলাম এবং নিরুপায় হয়ে ২০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি।
সরকারিভাবে বলা হলো ঢাকার বাইরে একটি গরু-মহিষের চামড়ার সর্বনিম্ন দাম হবে ১হাজার ১'শ ৫০ টাকায় বিক্রি। কিন্তু মাঠের চিত্র ভিন্ন, চামড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২'শ থেকে ৩'শ টাকা।
ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট চামড়া ৫৫টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা করা হলো। আদতে প্রান্তিকে এর অর্ধেকও নেই দাম।পুরো উপজেলা জুড়ে এরকম চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। অনেকে অভিযোগ করে বলেন, পটপরিবর্তন হয়েছে হয়তো একটা সুফল পাওয়া যাবে বাস্তব চিত্র ভিন্ন কিন্তু এবার তো চামড়া কিনতে কেউই তো আসলোনা আবার অনেকে উপযুক্ত দাম না পেয়ে চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলতে বাধ্য হয়েছে। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে এরকম স্তুপ দেখা গেছে। রাত সাড়ে নয়টা দিকে হিঙ্গুলী বাজারের একপাশে চামড়ার বিশাল স্তুপ দেখা গেছে।ছোট ছোট বিক্রেতার কাছ থেকে চামড়ার পাইকারি ক্রেতা মোশারফ হোসেন নামের একজন বলেন, আমাদেরকেও এই চামড়া গুলো বড় বড় পার্টির কাছে বিক্রি করতে হবে। এক্ষেত্রে গোডাউন ভাড়া, লবণ, শ্রমিকদের মজুরি, গাড়ি ভাড়া সবকিছু মিলিয়ে খরচ বাদ দিয়ে তেমন একটা লাভ করা যায়না। তাই বড় বড় পার্টির কাছে বিক্রির বিষয়টি মাথায় রেখে এবং খরচের হিসাব করেই চামড়া সংগ্রহ করতে হয়।