বরিশাল লঞ্চঘাটে কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, যাত্রী হয়রানি এবং দায়িত্বরত কোস্ট গার্ড সদস্যদেরকে হুমকি দেয়ায়, লঞ্চের মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছে কোস্ট গার্ড।

শুক্রবার ( ৬ জুন ) বিকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। আসন্ন ঈদ-উল-আযহা-২০২৫ উপলক্ষে নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড নিয়মিত টহল ও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ জুন ২০২৫ তারিখ রাত ৯টায় কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চটি, ঢাকা সদরঘাট থেকে ছাড়ার কথা থাকলেও প্রায় ৩ ঘন্টা বিলম্ব করে যাত্রা শুরু করে। পথিমধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে মাঝনদীতে লঞ্চ থামিয়ে নৌকা/ট্রলারের মাধ্যমে অবৈধভাবে অতিরিক যাত্রী উঠায়। ধারণক্ষমতা ১৫৫০ জন হলেও, প্রায় ৪ হাজার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে। ভোর রাতে বৃষ্টির সময় ছাদে ভ্রমণরত যাত্রীদের লঞ্চের ভেতরে ঢুকতে না দিয়ে ছাদের দরজায় তালা দিয়ে রাখা হয়। ফলে, ছাদে আটকিয়ে রাখা নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বরিশাল পৌঁছানোর পর অতিরিক্ত ভাড়া দাবিসহ লঞ্চ কর্তৃপক্ষের দূর্ব্যবহার ও লঞ্চের বিভিন্ন অনিয়মকে কেন্দ্র করে যাত্রীদের সঙ্গে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের তর্কবিতর্ক এবং একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়।

পরবর্তীতে যাত্রীদের অনুরোধে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোস্ট গার্ড, সেনাবাহিনী ও নৌপুলিশ এগিয়ে আসে। এরপর, কোস্ট গার্ড কন্টিনজেন্ট কমান্ডারের মধ্যস্থতায় যাত্রী এবং লঞ্চ কর্তৃপক্ষের মাঝে সমঝোতা হয়। তবে পরবর্তীতে লঞ্চ মালিক মঞ্জুরুল আহসান ও তার ছেলে শান্ত হাসান ঘটনাস্থলে এসে আক্রমনাত্মক ও নাশকতামূলক আচরণসহ মারমুখী হয়ে দায়িত্বরত কোস্ট গার্ড সদস্যদেরকে হুমকি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা প্রদান করে। কোস্ট গার্ড সদস্যরা দক্ষতার সাথে যাত্রীদের লঞ্চ হতে নিরাপদে নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লঞ্চ মালিক মঞ্জুরুল আহসান, তার ছেলে শান্ত হাসান ও লঞ্চ স্টাফদের বিরুদ্ধে যাত্রী হয়রানি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর আক্রমনাত্মক ও নাশকতামূলক আচরণ এবং সরকারি কাজে বাধা প্রদান করায়, আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় অঞ্চল ও নৌপথ নিরাপদ রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের এরূপ কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে।

ডিআই/এসকে