
টানা বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট ভয়াবহ পাহাড় ধস ও ভূমিধ্বসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে খাগড়াছড়ি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা। কাঁদা, পাথর এবং উপড়ে পড়া গাছের স্তূপে বন্ধ হয়ে যায় গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথ,ব্যাহত হয় কৃষিপণ্য পরিবহন, রোগী পরিবহন ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াত। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে পাহাড়ি জনপদের সাধারণ মানুষ।
এই সংকটময় মুহূর্তে নির্ভরতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, বিশেষ করে হিল আনসার ও হিল ভিডিপি সদস্যরা। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে একযোগে কাজ করে তারা ঝাঁপিয়ে পড়েন উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে। তাদের সহায়তায় সদর উপজেলা ও ভুয়াছড়ি এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে কাদা, গাছপালা এবং ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নতুন করে তৈরি করেছেন চলাচলের উপযোগী রাস্তা, কেটে দিয়েছেন মাটির বাঁধ, এমনকি নির্মাণ করেছেন বিকল্প পথও। দুর্গত এলাকার ঘরবন্দী মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন খাদ্য সহায়তা।
এ কার্যক্রমে অংশ নেওয়া এক আনসার-ভিডিপি সদস্য বলেন, “দুর্যোগের সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বাহিনী প্রধানের নির্দেশনায় আমরা দ্রুত সড়ক যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করেছি। যতক্ষণ না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, আমরা সেবার কাজে নিয়োজিত থাকবো।”
বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ এই মানবিক ও সাহসী উদ্যোগের জন্য হিল আনসার ও হিল ভিডিপি সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “প্রকৃতির বৈরী রূপের সামনে দাঁড়িয়ে যে সাহসিকতা, মানবিকতা এবং দায়িত্ববোধের পরিচয় তারা দিয়েছেন, তা সত্যিই অনুকরণীয়। এ ধরনের কর্মতৎপরতা সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে।”
এই নিঃস্বার্থ সেবা ও আত্মত্যাগ পাহাড়ি জনপদের মানুষের মনে জাগিয়েছে স্বস্তি ও আশার আলো। প্রমাণ হয়েছে—দুর্যোগ যতই বড় হোক, সম্মিলিত উদ্যোগ ও মানবিকতার শক্তিতে তা জয় করা সম্ভব।
ডিআই/এসকে