
দেবহাটা উপজেলার খলিশাখালির এলাকার কথিত ভূমিহীন নামধারী সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু ও লুটপাটকারীদের দৌরাত্ম এখনো কমেনি। ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বরে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ‘শেখ মুজিব নগর খলিশাখালি ভূমিহীন আবাসন কেন্দ্র’ ব্যানারে ১৩২০ বিঘা মালিকানাধীন জমি দখল ও লুটপাট করে। পরে কোর্টের আদেশে প্রশাসনের সহযোগিতায় জমির মালিকরা জমি ফিরে পেলেও ৮ আগস্ট ২০২৪ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সময় সন্ত্রাসীরা মালিকানাধীন এই ঘের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দখল করে। এই জমি ও ঘেরের রেকর্ডিয় মালিকরা তাদের জমি ফিরে পেতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ছোটাছুটি করছেন।
দখলদাররা নিজেদের ভূমিহীন দাবি করলেও এলাকাবাসী বলছে, এরা ভূমিদস্যু ও অনেক মাদক ব্যবসায়ী। তারা বিভিন্ন ডাকাতি মামলার আসামি। তাদের নেপথ্যে রয়েছে গোপন চরমপন্থিরা। স্থানীয় শরিফুল, আলামি, মামুনসহ আরো অনেকে জানান, দখলদাররা ভূমিহীন নয়। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে জমি ও ঘের দখল এবং সন্ত্রাস ও ডাকাতির অভিযোগ আছে। তাদের কাছে দেশে তৈরি ও বিদেশি অস্ত্র রয়েছে।
দখলকারীরা সেখানে ২০২১ সালে ‘শেখ মুজিবনগর খলিসাখালী আবাসন প্রকল্প’ নামের ব্যানার টানিয়ে তাদের দখলকে পাকাপোক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। গত বছরে আওয়ামী সরকার উৎখাত হলে এসব সন্ত্রাসীরা আরো বেপরোয়া হয়ে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটালে এ অবস্থা থেকে উত্তরণে গত বছরের ১ নভেম্বর ভোররাতে খলিশাখালিতে অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। অভিযানে ঘটনাস্থল থেকে ১৫ টি হাত বোমা, ৩০ টি ছোট, বারুদ, ৫টি রামদা, বোমায় ব্যবহৃত স্প্রিন্টারসহ বিভিন্ন দেশী অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এসময় গণপিটুনিতে নিহত ডাকাত সদস্য কামরুল ইসলাম। এরপর থেকে রবিউল, আনারুল ও রিপনের নেতৃত্বে আওয়ামী সন্ত্রাসী এই খলিসাখালিতে অবস্থান করে দেশে অরাজকতার পরিকল্পনা করছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দাগী অপরাধীদের নিয়ে এসে ওই জনপথকে অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার আঁখড়া হিসেবে গড়ে তুলছে ওই ভূমিদস্যুরা।
এ বিষয়ে জমির মালিকরা জানান, পুরো জমি আমাদের রেকর্ডিয়। এ এলাকার একটি ভূমিগ্রাসী চক্র আমাদের জমি ও মাছের ঘের অস্ত্রের মুখে দখল করে নিয়ে লুটতরাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা বাধা দিতে গেলেই তারা হামলা করছে। তারা অবৈধ অস্ত্রধারী হওয়ায় জমির মালিকগন জমিতে যেতে পারছেনা। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। গত ২৭ মে মহামান্য আদালত (সিআর-১১০/২৫, দরখাস্ত নং-১৪৬৭) ২৪ জুনের মধ্যে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়াও জমির মালিকরা জেলা প্রশাসক ও দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি সুরাহার জন্য স্মরনাপন্ন হয়েছে বলে জানান।
এব্যাপরে খলিশাখালী জমির মালিকগণ ও দেবহাটা উপজেলার শান্তিকামী জনগণ এই জবরদখল ও লুটপাট বন্ধে এবং এলাকাবাসী শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে বর্তমান সরকার ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।