
মো. সফর মিয়া,নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি;
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের চাউরা গ্রামের পূর্ব দৌলতবাড়ি মৌজায় পৈত্রিক সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সাবেক সচিব, রাষ্ট্রদূত ও কবি সানাউল হকের পুত্র সুমন ইতাত মামুনের (৫৮) বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী খান বাহাদুর শহুদুল হকের পরিবারের জমি নিজ নামে জাল দলিল তৈরি করে নামজারি করে বিক্রির চেষ্টা করেন মামুন। এ ঘটনায় শহুদুল হকের আরেক পুত্র মো. আল এনামুল মুনতাহা বাদী হয়ে গত ২৯ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা (নং-১৫৫৪/২৪) দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ আনিসুর রহমান দাখিলকৃত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, সুমন মামুনের প্রদত্ত দলিল ও খতিয়ান অবৈধভাবে তৈরি হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন এবং অন্যান্য উপস্থাপিত তথ্যের ভিত্তিতে আদালত গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার আসামিকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জানা গেছে, সুমন ইতাত মামুন বর্তমানে ঢাকার ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের ১৩ নম্বর গলির ৩ নম্বর বাড়িতে অবস্থান করছেন। ধানমন্ডি থানার এসআই ইমরান হোসেন জানান, তিনি সম্প্রতি থানায় যোগ দিয়েছেন এবং বিষয়টি সম্পর্কে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এদিকে, ভুয়া দলিলের ভিত্তিতে নামজারি করায় বিজয়নগর এসিল্যান্ড অফিস ইতোমধ্যে সুমন মামুনের জমা দেওয়া দলিলের সত্যতা না পাওয়ায় তার নামে নামজারি বাতিল করেছে। তবে কীভাবে এমন জাল ও অসম্পূর্ণ দলিলের ভিত্তিতে পূর্বে নামজারির সুপারিশ করা হয়েছিল, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
অভিযুক্ত মামুনের পারিবারিক পাহারাদার হিসেবে পরিচিত স্থানীয় স্কুলের দপ্তরি আবুল খায়েরের বিরুদ্ধেও অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। ২০১৭ সালেও তিনি ভুক্তভোগীদের জমিতে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ করেছিলেন। তখন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের পর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ঘরটি সরিয়ে জমি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগীরা দ্রুত আসামির গ্রেফতার ও সম্পূর্ণ তদন্তের মাধ্যমে বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্নের দাবি জানিয়েছেন।