
বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের বহিনঙ্গর বেসক্রিক-১ এ নোঙররত বাংলাদেশি পতাকাবাহী ‘এমভি সেজুতি’ নামের বানিজ্যিক জাহাজে ডাকাতি ঘটনায় ৩ জনতে আটক করেছে কোস্টগার্ড। এসময় লুট হওয়া বেশ কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) গভীর রাতে মোংলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাহাজের ইঞ্জিনের বিভিন্ন ধরনের স্পেয়ার পার্টস, বিয়ারিং, ব্যাটারি ও ব্যাটারি চার্জারসহ জাহাজের গুরূত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড।
এসময় ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সুমন হাওলাদার (২১), মো. সুমন হোসেন (৩০) ও ‘এমভি সেজুতি’ জাহাজের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মো. সিরাজুল হককে আটক করে কোস্টগার্ড।
বুধবার ( ২৮ মে ) বিকেলে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত সোমবার ( ২৬ মে ) মধ্যরাত সাড়ে ৩ টায় মোংলা পোর্ট সংলগ্ন বেইস ক্রিক এলাকায় নোঙররত এমভি সেজুতি নামক বাংলাদেশি একটি জাহাজে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড উক্ত ঘটনার সংবাদ পাওয়া মাত্র তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৭ মে কোস্ট গার্ড বেইস মোংলা কর্তৃক একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতি হওয়া ইঞ্জিনের বিভিন্ন ধরণের স্পেয়ার পার্টস, ইঞ্জিনের বিভিন্ন সাইজের বিয়ারিং, ব্যাটারি, ব্যাটারি চার্জার ও অন্যান্য জাহাজের গুরূত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ উদ্ধার এবং ডাকাতির সাথে সংশ্লিষ্ট ৩ জন ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
জাহাজের কর্তৃপক্ষ, অফিসার, ক্রু ও আটককৃত ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত সাজানো ডাকাতির ঘটনা। যেখানে জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ অন্যান্য নাবিক বৃন্দ ও স্থানীয় দুষ্কৃতকারীরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত। জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ার এর তত্ত্বাবধানে স্থানীয় দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে মিলে এই ডাকাতির নাটক সাজিয়ে লুটকৃত মালামাল বিক্রির মাধ্যমে অর্থ ভাগাভাগির পরিকল্পনা করে।
আরও জানা যায়, জাহাজের অধিকাংশ নাবিক গত ৬/৭মাস ধরে সঠিকভাবে বেতন না পাওয়ার কারণে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছিল। যার কারণে আর্থিক ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে ইতিপূর্বেও জাহাজ হতে বিভিন্ন গ্রুপ/ ডাকাতের কাছে মেশিনারিজ পার্টস বিক্রি করা হয়েছিল।
উদ্ধারকৃত মালামাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের নিকট ও আটককৃত ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জাহাজের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টিসহ নাবিকদের বেতন ভাতা না দেয়া এবং গত ৬ মাস যাবৎ জাহাজটিকে এভাবে ফেলে রাখার বিষয়টিও আরো তদন্ত করার অবকাশ রয়েছে। সাজানো এই ডাকাতির ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদপত্রে বিভ্রান্তিমূলক খবর প্রকাশ করার বিষয়টিও তদন্ত করা প্রয়োজন রয়েছে বলে প্রতিয়মান।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড দেশের জলসীমায় নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জানমালের সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভবিষ্যতে এরূপ কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড তা কঠোরভাবে দমন করবে।
ডিআই/এসকে