ঢাকা, শুক্রবার, ৩০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
খিলগাঁও থেকে অস্ত্রসহ তিনজন গ্রেফতার
টিকটকে পরিচয়,আবাসিক হোটেলে নিয়ে খুন,অতঃপর
জলাবদ্ধতা নিরশনে ডিএনসিসির জরুরি কন্ট্রোলরুম স্থাপন
মাভাবিপ্রবি ডিবেটিং ক্লাবের নেতৃত্বে মহসিন-মিয়াজী
নবীগঞ্জ উপজেলায় তিন দিনব্যাপী ভূমি মেলার সমাপনী দিনে জনসচেতনতামূলক সভা
৪৮তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, ৩ হাজার পদে নিয়োগ
ঈদ উপলক্ষে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তায় ৭৪ জন আনসার মোতায়েন
সুন্দরগঞ্জে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের গতীশিলতা আনয়ন শীর্ষক প্রশিক্ষণ
রূপসায় ৬০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার
রাণীনগরে আড়াই লাখ টাকার চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করে ভস্মিভূত
রাণীনগরে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
মোরেলগঞ্জে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ ২০২৫ শুরু
তানোরে দিনব্যাপী সমবায় সমিতির সদস্যদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা
আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপন
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সাথে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

চট্টগ্রামে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের মানববন্ধন

চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র এবং জাতীয় অগ্রগতির মেরুদন্ডস্বরূপ। এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে বিদেশি নিয়ন্ত্রণে দেওয়ার ষড়যন্ত্র এবং রাষ্ট্রীয় স্বার্থবিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে ২৮ মে বুধবার সকাল ১০টায় জেলা পরিষদ কার্যালয় সম্মুখস্থ চত্বরে এক মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন টিইউসি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন দত্ত। সঞ্চালনায় ছিলেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার।
প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন। এসময় অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নুরুল আবসার ভুঁইয়া, এস কে খোদা তোতন, জাহেদ উদ্দিন শাহিন, কে এম শহিদুল্লাহ, মহিন উদ্দিন প্রমুখ।সভাপতির বক্তব্যে তপন দত্ত বলেন, রাখাইন ইস্যুকে ঘিরে করিডোর দেওয়ার পরিকল্পনা একটি বিপজ্জনক ভূরাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে আঞ্চলিক সংঘাতে জড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। দেশের জনগণের মতামত উপেক্ষা করে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া চলবে না। সকল জাতীয় কৌশলগত সম্পদের ব্যবস্থাপনায় শ্রমিক ও জনগণের মতামতের প্রতিফলন নিশ্চিত করতে হবে।তিনি আরো বলেন, এনসিটি বাংলাদেশের সবচেয়ে আধুনিক এবং লাভজনক টার্মিনাল। বিগত বছর এই টার্মিনাল থেকে ৫০০ কোটি টাকার অধিক নীট মুনাফা হয়েছে এবং গতবছর সক্ষমতার ২৮% বেশী ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে। সুতরাং উন্নত ব্যবস্থাপনার অজুহাত তুলে যারা এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশীদের নিয়ন্ত্রনে দিতে চান তাদের উদ্দশ্য কখনোই ভালো হতে পারে না। তিনি আরো বলেন, পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনালের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সৌদি আরব ভিত্তিক রেড সী গেটওয়ে টার্মিনাল নামক একটি বিদেশী প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিনিয়োগ করে নাই এবং টার্মিনালও সক্ষমতার মাত্র ১০-১২% ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে মাত্র। সুতরাং বিদেশীদের টার্মিনাল ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দিলেই সমস্যার সমাধান হবে এ বক্তব্য ঠিক নয়। বরং সবচেয়ে জরুরী হচ্ছে সর্বসÍরে দুর্নীতি রোধ করে সচ্ছতা ও জবাবাদিহিতা নিশ্চিত করা।প্রধান বক্তা এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, ”এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব দেশি/বিদেশী কাউকে দেয়া যাবে না। বর্তমানে সাইফ পাওয়ারটেককে দেয়া ইজারা মেয়াদ শেষে তা নবায়ন না করার মাধ্যমে দেশীয় স্বার্থ রক্ষা করতে হবে এবং এনসিটি বন্দর কর্তৃপক্ষের সরাসরি ব্যবস্থাপনায় ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা ইতিমধ্যে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের বিদেশিদের ইজারায় ব্যর্থতার উদাহরণ দেখেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা না নিয়ে আবার বিদেশিদের হাতে টার্মিনাল তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই।”
কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন: “চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) দেশের সর্বাধুনিক কনটেইনার হ্যান্ডলিং অবকাঠামো। এই টার্মিনালকে বিদেশি কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া একটি জাতীয় বিশ্বাসঘাতকতা। এটি শুধু অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নয়, বরং সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপস করার সামিল। আমরা এই চক্রান্ত চট্টগ্রামের শ্রমিক জনতাকে সাথে নিয়ে রুখে দাঁড়াব।”সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল সহকারে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়, যেখানে নিম্নোক্ত দাবিগুলো উত্থাপন করা হয়:
১. ডিপি ওয়ার্ল্ডকে এনসিটি ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
২. সাইফ পাওয়ারটেকের ইজারার মেয়াদ শেষে তা নবায়ন বন্ধ করতে হবে।
৩. এনসিটিকে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
৪. পিসিটি পরিচালনায় ব্যর্থতার দায়ে রেড সী গেটওয়ের কার্যক্রম পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।
৫. রাখাইনে করিডোর তৈরির নামে ভূরাজনৈতিক ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।
৬. জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনায় শ্রমিক ও জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে।অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, আজকের সমাবেশ থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, চট্টগ্রামের দেশপ্রেমিক শ্রমিক সমাজ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে দেশের বন্দর, ভূখন্ড এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তারা কোনো আপস করবে না।সমাবেশে আগামী ২৯ মে সকাল ১০টায় বন্দর ভবন সম্মুখে ডিপি ওয়ার্লডকে এনসিটি ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করার দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

শেয়ার করুনঃ