
ইসমাইল ইমন চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: শিশুরা যদি পরিচ্ছন্নতার শিক্ষা পায়, তারাই শহর রক্ষার সবচেয়ে বড় যোদ্ধা হয়ে উঠবে” — এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “একটি ছোট্ট শিশু যখন তার মা-বাবাকে বলে ময়লা রাস্তার বদলে ডাস্টবিনে ফেলতে, তখন সেই শিশু হয় আসল পরিবর্তনের দূত।”শুক্রবার চট্টগ্রাম কোর্টহিল আইনজীবী অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত “হেলথ কার্ড বিডি বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৪”-এর সনদ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ইমরানুল হকের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন এছাড়া ব্যারিস্টার ফয়সাল দস্তগীর। উদ্বোধক ছিলেন লায়ন তালুকদার কামরুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন এডভোকেট মো. আবদুস সাত্তার, এডভোকেট মুহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম জনি, এডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম ও কোতোয়ালী থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।মেয়র বলেন, “ক্লিন সিটি, গ্রিন সিটি, হেলদি সিটি ও সেফ সিটি গড়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো নাগরিকদের সচেতনতার অভাব। আমরা যদি শিশুদের ক্লাস রুম লেভেল থেকেই স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা ও পরিবেশ সম্পর্কে শিক্ষা দিতে পারি, তাহলে তারাই পরিবার ও সমাজকে বদলে দিতে পারবে।”তিনি জানান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন শিশুদের জন্য ‘চাইল্ড হেলথ কার্ড’ চালু করেছে, যেখানে একজন শিশুর ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা, রক্তচাপ, পুষ্টি, ঘুমের অভ্যাস ও খাদ্যাভ্যাস পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। শিশুদের স্বাস্থ্য ও সচেতনতা বাড়াতে এই উদ্যোগের প্রসার ঘটানো হবে।মেয়র আরও বলেন, “এই বর্ষা মৌসুমে আমরা ১০ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। ইতোমধ্যে ৪১টি ওয়ার্ডে প্রায় ৩০০ কর্মী গাছ লাগানোর কাজ শুরু করেছে। শিশুরা যেন জানে সালোকসংশ্লেষণ কীভাবে কাজ করে, গাছ কিভাবে অক্সিজেন দেয় — এই শিক্ষা তাদের পরিবেশ সচেতন নাগরিক করে গড়ে তুলবে।”ডেঙ্গু প্রতিরোধ নিয়েও মেয়র বলেন, “নগরে যেখানে-সেখানে ডাবের খোসা, প্লাস্টিক ও মিনার বোতল ফেলে রাখা হয়, যেখান দিয়ে বৃষ্টির পানি জমে, সেখানেই এডিস মশার প্রজনন হয়। আমাদের এই অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।”তিনি জানান, গত তিন মাসে প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার ড্রেন ও খাল পরিষ্কার করা হয়েছে, যেখানে পাওয়া গেছে টিভির কাভার, পোশাক, ফ্রিজের অংশসহ নানা রকমের বর্জ্য। এসবের জন্যই খাল আবার দ্রুত ভরে যায়।মেয়র আশা প্রকাশ করেন, “আমাদের শিশুরাই ভবিষ্যতে এই শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সুরক্ষিত রাখবে। আমরা চাই একটি বৈষম্যহীন, দারিদ্রমুক্ত, সহনশীল ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ — যেখানে শিশুরা নিজের দেশের উন্নয়নে নেতৃত্ব দেবে। ব্রেন ড্রেইন নয়, আমরা চাই ব্রেন গেইন।”