
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের হরতকীতলা গ্রামের কিশোর ছাত্র মাহফুজুর রহমানের মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত এই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের অংশ হিসেবে বুধবার (১৪ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) একটি তদন্তকারী দল মোরেলগঞ্জে পৌঁছায়। তবে মাহফুজুরের পরিবারের লিখিত আপত্তির কারণে মরদেহ উত্তোলনের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
২০২৪ সালের ১৯ জুলাই, শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর-১০ গোলচত্বরে ছাত্র-কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান মিরপুর আলহাজ্ব আব্বাস উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র মাহফুজুর রহমান। ঘটনার প্রায় নয় মাস পর মামলার অগ্রগতির অংশ হিসেবে আদালতের নির্দেশে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
মাহফুজুরের পরিবার উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর লিখিতভাবে মরদেহ উত্তোলনের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, মোরেলগঞ্জ’ শাখার পক্ষ থেকে লিখিত প্রতিবাদ জানানো হয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. বদরুদ্দোজা বলেন, “আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মরদেহ উত্তোলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিবারের লিখিত আপত্তি পাওয়ায় কার্যক্রমটি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও আদালতের পরবর্তী নির্দেশনার ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
পুলিশ সূত্র জানায়, ঢাকার মিরপুর মডেল থানায় দায়েরকৃত একটি মামলার (মামলা নম্বর: ৩২; তারিখ: ১৪ ফেব্রুয়ারি) তদন্তের অংশ হিসেবেই আদালত মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। তদন্তকারী দলটির নেতৃত্বে ছিলেন ডিএমপির এসআই তরিকুল ইসলাম ও এসআই মো. রুহুল আমিন। তাঁদের সহায়তা করেন মোরেলগঞ্জ থানার এসআই মো. তৌহিদসহ একটি স্থানীয় পুলিশ দল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত্যুর পরদিন ২০ জুলাই পোস্টমর্টেম ছাড়াই শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গ থেকে মাহফুজের মরদেহ বুঝে নিয়ে তার পিতা নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন পরে তাকে রাত পৌনে ১১টার দিকে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
মাহফুজুরের পরিবারের দাবি, তিনি একজন শহীদ, যিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জীবন দিয়েছেন। তাই মরদেহ উত্তোলনের বিষয়টি তারা মানসিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না এবং মর্যাদার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই তাদেরএ আপত্তি।