ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
পুলিশ সার্জেন্টের সঙ্গে দুর্ব্যবহার : দুই যুবকের কারাদণ্ড
আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: তদন্ত কমিটি গঠন, এবার কিশোরগঞ্জের এসপি প্রত্যাহার
নোবিপ্রবি’তে ভর্তিচ্ছু সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ও খাবারের ব্যবস্থা
জীবননগরে আবারো মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-১
জুয়া ও মাদক প্রতিরোধে ওসির সাথে নান্দাইল নাগরিক ফোরামের মতবিনিময়
জীবননগর মুক্তমঞ্চে দিনব্যাপী ইসলামী ছাত্র শিবিরের সদস্য সংগ্রহ
চট্টগ্রাম বে- টার্মিনালে ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে:বিডা’র চেয়ারম্যান
বর্ণিল আয়োজেন আত্রাইয়ের পতিসরে পালিত হচ্ছে বিশ্বকবির ১৬৪ তম জন্মোৎসব
আবদুল হামিদের দেশত্যাগ, তিন পুলিশ প্রত্যাহার-বরখাস্ত
মোহাম্মদপুরে গুলি ঘটনায় জড়িত মূল সন্দেহভাজন সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরও বাড়লো
‘সাংবাদিক নন’ সিকদার লিটন একজন মামলাবাজ ও প্রতারক, হত্যাসহ একাধিক মামলা তার বিরুদ্ধে, চলছে তদন্তও
বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
পঞ্চগড়ে সন্তানকে মোবাইল কিনে দিতে পারেনি মা, অভিমানে ছেলের আত্মহত্যা
কালীগঞ্জে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া মৃৎ শিল্পকে পুনরায় উজ্জীবিত করতে প্রশিক্ষন কর্মসূচির উদ্ভোধন

‘সাংবাদিক নন’ সিকদার লিটন একজন মামলাবাজ ও প্রতারক, হত্যাসহ একাধিক মামলা তার বিরুদ্ধে, চলছে তদন্তও

৫ আগস্ট ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মো.জাভেদ। তার মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষসহ ৬৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়।

মামলার বাদী সিকদার লিটন নিজেকে নিহতের খালাতো ভাই পরিচয় দেন। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরের শিরোনাম হওয়ায় তা নজরে আসে ভুক্তভোগী জাভেদের পরিবারের। তাদের অজান্তে এমন মামলা হওয়ায় অবাক পরিবারটি। নিরুপায় হয়ে নিহত জাভেদের ভাই মাঈনুদ্দীন ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। যা তদন্ত করছে থানা পুলিশ।

জিডির তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুয়েল বলেন,‘জিডির তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। আমরা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছি। ঊদ্ধর্তনদের সঙ্গে আলাপ করে দ্রুতই রিপোর্ট আদালতে দাখিল করব।’

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান বলেন,‘তদন্ত শেষের দিকে। পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে প্রতারক সিকদার লিটনের করা ওই মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। তবে এই মামলাকে পুঁজি করে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে সিকদার লিটন। সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তি ও প্রতিপক্ষদের আসামি করার ভয় দেখিয়ে টাকা নিয়েছে সে। লিটনের বিকাশ অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তিনমাসে শুধু তার বিকাশে লেনদেন হয় সাড়ে ২২ লাখ টাকা।

জানা গেছে,৫ আগস্ট ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের খুরকি গ্রামের আব্দুল সোবহানের ছেলে জাবেদ গুলিবিদ্ধ হন। পরে ১৩ আগস্ট ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ বিষয়ে জাবেদের পরিবার এখন পর্যন্ত কোনো মামলা করেনি। অথচ লিটন নিজেকে জাবেদের খালাতো ভাই দাবি করে ঢাকার আদালতে একটি সিআর মামলার আবেদন করেন। এমন ঘটনা জানাজানি হলে নিহত জাবেদের ভাই মাইনুদ্দিন মোহাম্মদপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

জিডিতে মাইনুদ্দিন উল্লেখ করেন, সিকদার লিটন নামের ব্যক্তির সঙ্গে নিহত জাবেদের পরিবারের কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই। এমনকি তাকে কোথাও কোনো মামলার আবেদন করার অনুমতি, সম্মতি বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেওয়া হয়নি।

প্রতারক সিকদার লিটন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামের সিদ্দিক সিকদারের ছেলে। জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাসহ তার নামে দুটি মামলা রয়েছে— ঢাকার ভাটারা ও মোহাম্মদপুর থানায়।

স্থানীয়রা বলছে, সিকদার লিটন আপাদমস্তক একজন প্রতারক। যেখানে যেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করে সুবিধা নেওয়া যায় সেটাই করে। কখনো এমপির এপিএস, কখনো ব্যবসায়ী, কখনো সরকারি কর্মকর্তা কখনও সাংবাদিক পরিচয় দেন তিনি। এসব পরিচয়ের আড়ালে সে মূলত ভয়ঙ্কর প্রতারক। প্রতারণায় সিদ্ধহস্ত সিকদার লিটনের অত্যাচারে তাকে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করে গ্রামবাসী।

নিজের বাবা-মা মারা গেলেও তাদের জানাজায় অংশ নিতে পারেনি সে। এমনকি নিজের শ্বশুর জাপান মুন্সির নামে হয়রানীমূলক পাঁচটি মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। ফরিদপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মঞ্জুর হোসেনের এপিএস পরিচয় দিত সিকদার লিটন। তার বিরুদ্ধে দেড়ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে।

সিকদার লিটন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের প্রতারণা করে আসছিলেন। এবার আদালতের সামনে নিজেকে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। একইসঙ্গে আদালতকে বিভ্রান্তি করারও চেষ্টা করে সে।

বুধবার ভাটারা থানার একটি হত্যা মামলায় সিকদার লিটনকে গ্রেফতার দেখানোর শুনানির তারিখ ধার্য ছিল। সকালে প্রতারক সিকদার লিটনকে আদালতে আনা হলে নিজেকে সাংবাদিক দাবি করেন। বলেন__’আমি সাংবাদিক। আমি কেন হত্যা মামলার আসামি হলাম? আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।’ তবে আদালত তার এসব কথা আমলে না নিয়ে তাকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন।

নিজেকে আত্মরক্ষায় অভিনবপন্থা নেয় এই প্রতারক। নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মামলাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করে। যাতে ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলাকে বিতর্কিত করা যায়। যা ফ্যাসিস্ট পতিত আওয়ামী লীগ সরকারকে সুবিধা দেওয়া চেষ্টা। সিকদার লিটন বর্হিঃবিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে__ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার হয়রানী মূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের ফাঁসাচ্ছে। তার এমন হীন-চরিতার্থ যাতে সফল না হয় সেটা দায়িত্বশীলদের দেখতে বলছে শহীদ জাহাঙ্গীরের পরিবার।

 

ডিআই/এসকে

শেয়ার করুনঃ