
“আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দায়ি নয়, আমিই দায়ি। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের উপর। তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা আছে তা মায়ের জন্য। দিদি যেন কো-অর্ডিনেট করে।”- এটি ছিল আত্মহত্যার পুর্ব মুহুর্তে র্যাবের সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহার নিজ হাতে লেখা চিরকূট।
চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানাধীন র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে কর্মরত স্কোয়াড কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পলাশ সাহা তার নিজ অফিস কক্ষে নিজের ব্যবহৃত পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। নির্মম বেদনাদায়ক এই ঘটনাটি ঘটেছে আজ ৭ মে বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে। র্যাব-৭ সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে একটি অপারেশনে অংশ নেওয়ার জন্য ক্যাম্পের অস্ত্রাগার থেকে নিয়ম অনুযায়ী পিস্তল সংগ্রহ করেন সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহা। পরে তিনি নিজ অফিসকক্ষে ফিরে যান। কিছুক্ষণ পর, আনুমানিক ১১টা ৪৫ মিনিটে তিনি নিজের মাথায় নিজেই গুলি চালান। গুলির শব্দ শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান র্যাব-৭ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর তৌহিদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় তার অফিস কক্ষে একটি চিরকুট পাওয়া যায় তাতে পলাশ সাহা লিখেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দায়ি নয়, আমিই দায়ি। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের উপর। তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা আছে তা মায়ের জন্য। দিদি যেন কো-অর্ডিনেট করে। বুধবার দুপুরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী। নিহত পলাশ বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ৩৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ।
র্যাব-৭ এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, “সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহা খুবই দায়িত্বশীল এবং পেশাদার কর্মকর্তা ছিলেন। তার মৃত্যু আমাদের জন্য অত্যন্ত মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। কী কারণে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন, সেটি আমরা তদন্ত করে দেখছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”