ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
ঝিকরগাছায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু
প্রবাসীর স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ ২ ভণ্ড কবিরাজ আটক
পঞ্চগড়ে আদালতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি পালন
বাগেরহাটে জাতীয়তাবাদী যুবদলের প্রস্তুতি সভা
তানোরে পৃথক স্থানে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি ডিপ্লোমাকে স্নাতক সমমানের দাবিতে ঝালকাঠিতে শিক্ষার্থীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি
মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরনে বাঙ্গালহালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ত্রিপক্ষীয় প্রথম সভা
ফিরছেন খালেদা জিয়া: অভ্যর্থনাকারী ও সাংবাদিকরা গাড়ি রাখবেন যেখানে
নওগাঁয় বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু
উলিপুরে শত্রুতার জেরে বেড়ে চলেছে ফসলহানীর ঘটনা
বকশীগঞ্জে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল কাইয়ুমের পথসভা-কর্মীসমাবেশ
ফুলবাড়িতে অসহায় মুসলিম পরিবারদের মাঝে চাউল বিতরণ
কসবা সীমান্তে বিএসএফের গুলি:ঢাকায় চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ সেই ভারতীয় চোরাকারবারি আটক
কলাবাগান ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় নতুন ওসি
বেইলি রোডের সিরাজ টাওয়ারের আগুন নিয়ন্ত্রণে,ছাদ থেকে উদ্ধার ১৮ জন

উলিপুরে শত্রুতার জেরে বেড়ে চলেছে ফসলহানীর ঘটনা

কুড়িগ্রামের উলিপুরে শত্রুতার জেরে বেড়ে চলেছে ফসলহানীর মতো ঘৃণ্য অপরাধ। গ্রাম্য রাজনীতি বা ভিলেজ পলিটিক্সের স্বীকার হয়ে আর্থিক লোকসান,গবাদি খাদ্য নষ্ট হবার পাশাপাশি রাষ্ট্রেরও ক্ষতি হচ্ছে। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী সংশ্লিষ্টদের।

সরেজমিনে দেখাযায়, জেলার উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই মুন্সীপাড়া গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা নজির হোসেনের পুত্র ফারুক ইসলাম। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৫৫ শতাংশ জমিতে চলতি বছর বোরো আবাদ করেন। ফসলও অনেক ভালো হয়। কয়েক দিন পরেই পাকা ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছিলেন কৃষক ফারুক।
কিন্তু গত ১২ এপ্রিল রাতের আঁধারে একদল দুর্বৃত্ত জমিতে আগাছা নাশক জাতীয় পদার্থ দিয়ে পুরো জমির ফসলহানী করে। এসময় দুর্বৃত্তরা কৃষকের সেচ পাম্পও চুরি করে নিয়ে যায়। বিষ জাতীয় পদার্থ প্রয়োগের মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি গো খাদ্য নষ্ট হয়েছে। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আবাদ করায় এখন দিশেহারা এই পরিবারটি।
কৃষক ফারুক ইসলাম বলেন,এনজিও ঋণ নিয়ে ৫৫শতক জমিতে বোরো আবাদ করেছি। ধান কাটার সময় হয়ে আসার মূহুর্তেই পারিবারিক বিবাদের জন্য বিপক্ষরা আমার জমির ফসল নষ্ট করে দিয়েছে। গরু খাবারের খড়সহ ৩০মণ ধান আমার ক্ষতি হয়েছে। ঋণ পরিশোধ করবো নাকি বৃদ্ধ মাকে নিয়ে পরিবার চালাবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এই বিষয়ে আদালতে মামলা করেছি। আমি ন্যায় বিচার চাই।
শোলাগাড়ি গ্রামের কৃষক হাবিুর রহমান বলেন, আমার ৪০শতক পাকা ধানে আগাছা নাশক বিষ দিয়ে ধান পুড়িয়ে দিয়েছে। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরেই এমনটি করেছে বিপক্ষগণ। ২০২২সালেও আমার দেড় একর জমির ফসলহানী করেছিল তারা। সেই বিষয়ে একটি মামলা আদালতে বিচারাধিন রয়েছে। এবারও অভিযোগ দিয়েছি। নিজেদের ও ঋণ করে আবাদ করেছি। ধান নষ্ট হওয়ায় এখন ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে চিন্তায় আছি।
একই এলাকার বাসিন্দা রহিদুল ইসলাম বলেন, আমার জমির কাগজ আছে। হাবিবুরের কোন জমি নেই। এই জমি আমি আবাদ করেছি। আমার স্ত্রী-সন্তান আর ভাইসহ জমিতে ধান রোপনের ভিডিও আছে। ধান আবাদের আগে সরিষা আবাদ করেছি। সেটিও তারা কিছু নিয়ে গেছে। এর আগেও ওরা জমির ধান নষ্ট করেছিল। সেখানে আমাদেরকেই আসামী করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে ধান নষ্ট করার বিষয়ে কোন অভিযোগ করেনি বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা বুলবুলি আকতার,রমজান, মজিবর বলেন, সেচ পাম্প চুরি করে নিয়ে যাওয়ায় পাশ্ববর্তি কৃষকগণও পড়েছেন বিপাকে। সঠিক সময়ে জমিতে পানি দিতে না পারায় ধানের আবাদ কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ থাকলেও এভাবে ফসলের উপর শত্রুতা মেনে নিতে পারছে না প্রতিবেশিরা। রাষ্ট্রের এমন ক্ষতি যারা করেছে সঠিক তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী স্থানীয়দের।
কুড়িগ্রাম কৃষি অধিদপ্তরের সহকারী উপপরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, পারিবারিক কোন্দল থেকে কুড়িগ্রামে ধান, সুপারি, কলাগাছসহ বিভিন্ন ফসলহানীর মতো ঘৃণ্য অপরাধ বেড়েছে। চলতি বোরো মৌসুমেও জেলার উলিপুর, রাজারহাট এবং ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ১৫০শতক আধা পাকা বোরো ধান নষ্ট হয়েছে। ফসলহানীর মামলা গুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা গেলে এমন অপরাধ কমে আসবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

শেয়ার করুনঃ