পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি।
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দি ইউপির একটি বেসরকারি স্কুলের ১০ম শ্রেণী পড়ুয়া শিক্ষার্থী মোসাঃ মারুফা আক্তার(১৫) নিরুদ্দেশের ১০ মাস পরে উদ্ধার হয়েছে। জানা গেছে, ঐ স্কুল শিক্ষার্থীর পিতা স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর দাবি স্কুলে যাওয়ার পথে তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা অপহরণ করেছে তা জানলেও মেয়ের প্রাণনাশের ভয়ে আইনগতভাবে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।পরবর্তীতে তিনি তার মেয়েকে ফিরে পাওয়ার ৬ দিন পর গত৩ মার্চ পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি পিটিশন কেস দাখিল করেন। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশনায় গলাচিপা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একই এলাকার কৃষ্ণকান্ত সরকারের ছেলে আকাশ সরকার(২১) সহ মোট ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।স্কুল পড়ুয়া মেয়ে অপহরণ হওয়ার পরে থেকেই স্থানীয় রাজনৈতিক মানুষদের কাছে মেয়েকে ফিরে পাওয়ার জন্য ছোট ছুটি করেছেন বাবা। আরও জানা গেছে, আর তাতে তাকে উল্টো বিভিন্নভাবে দেয়া হয়েছে হুমকি ধামকি। মামলা করার পরে তিনি ও তার পরিবার বর্তমানে আরো বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এমন অভিযোগ এনে ও পরিবারের সবার নিরাপত্তা চেয়ে ৪মে রবি বার রাত ৮টায় পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মোঃ মনির হাওলাদার সাংবাদিকদের জানান, তার মেয়ে খারিজ্জমা ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। দীর্ঘদিন ধরে আকাশ নামের এক হিন্দু ছেলে তার মেয়েকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। মেয়ে রাজি না হওয়ায় গত বছরের ২০ এপ্রিল স্কুলে যাওয়ার পথে মেয়েটিকে জোরপূর্বক অপহরণ করা হয়।অপহরণের ঘটনায় স্থানীয় বশির কাজী, মাহামুদুল হাসান বশির, মামুন গাজী, মোস্তাফিজ গাজী এবং আকাশের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন তিনি। মনির হাওলাদার এসময় আরও অভিযোগ করেন, অপহরণের দীর্ঘদিন পর তার মেয়ের খোঁজ পেয়ে বশির কাজীর কাছে গেলে তিনি ফয়সালার শর্ত হিসেবে ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন। ১ লক্ষ টাকা প্রদান করার পরও মেয়েকে ফেরত না দিয়ে বরং তাকে মারধর করা হয়। মেয়েটিকে শেষ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ থেকে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মনির হাওলাদার ঢাকায় বসবাসরত তার বোন হাওয়া বেগমের সহায়তায় উদ্ধার করে। পরবর্তীতে তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িতদের নামে মামলা দায়ের করেন। আর এরপর থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালী বশির কাজী মামলাটি তুলে নিতে চাপ দেন ও তা না মানলে বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে ধ্বংস করার ও শরীরের ক্ষতি করার হুমকি দেন বলে অভিযোগ মনির হাওলাদারের।এ সময় মনির হাওলাদার আরও বলেন, "আমি ও আমার পরিবার চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। এখনো বিচার পাইনি, বরং হুমকি-ধমকির শিকার হচ্ছি। প্রশাসনের কাছে আমার মেয়ের সম্ভ্রমহানির সুষ্ঠু বিচার ও পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করছি।"মনির হাওলাদারের অভিযোগের বিষয়ে বশীর কাজীর কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমার নামে যেসব অভিযোগ করেছে সবকিছু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ।এ সকল বিষয়ে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আশাদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান ছেলেকে গ্রেপ্তার করে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মেয়ের মেডিকেল টেস্ট করা হয়েছে রিপোর্ট আসলে সবকিছু বোঝা যাবে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এবং সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।