রাজশাহীর তানোরে কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১মে) দুপুর ২টার দিকে আকাশ কালো মেঘে ঢাকা পড়ে, এরপর শুরু হয় ঝড়ো হাওয়া। কিছুক্ষণের মধ্যেই রিমঝিম বৃষ্টি সেই সাথে শিলা পড়তে শুরু করে। এক পর্যায়ে বৃষ্টি কম হলোও প্রচুর পরিমাণে শিলা পডে ধান গাছ জমিতে হেলে পড়েছে। এতে কৃষকরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, ঝড়ের সময় যেসব জমিতে পাকা ধান ছিল তা মাটিতে পড়ে গেছে এবং জমিতে পানি জমে যায়। অনেক জায়গায় কাটা ধানও মাঠের জমিতে শুকানোর জন্য রাখা ছিলো যা বৃষ্টিতে ভিজে গেছে, যা শুকাতে না পারলে ধান নষ্ট হয়ে যাবে। বর্তমান যে সময় চলছে এই সময়ে কৃষকের বোরো ধান কাটার ভরা মৌসুম। আর এই ভরা মৌসুমে হঠাৎ শিলাবৃষ্টির কারণে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের পারিশো বাতাসপুর গ্রামের কৃষক দুলাল ও সামাদ বলেন, আমাদের অনেক ধান কেটে জমিতে ফেলে রাখা ছিল, জমিতে পানি জমে
যাওয়ায় ধান গুলো ডুবে গেছে । সেগুলো শুকাতে না পারলে সব নষ্ট হয়ে যাবে। তাদের এলকায় এখনো অর্ধেকের বেশি ধান মাঠেই রয়েছে। অনেক কৃষক ধান কেটে জমিতেই রেখেছিলেন বৃষ্টির কারণে ওই সকল ধান এখন পানির নিচে। আবার যারা দু' একদিনের মধ্যে ধান কাটবে বলে মনস্থির করেছে তাদের ক্ষতি সব থেকে বেশি হয়েছে। সামাদ আরো বলেন, এবছর তিনি ১৮ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন এরমধ্যে ৮ বিঘা জমির ধান এখনো মাঠেই রয়েছে। শিলার আঘাতে ওই ৮ বিঘা জমির পুরো ধান জমির সাথে মিশে গেছে।
দমদমা গ্রামের ভুট্টো, বাবুল আক্তার বলেন, ,হঠাৎ শিলা বৃষ্টিতে তাদের মাঠে কেটে রাখা বোরো ধানের যে ক্ষতি হয়েছে তা কোন ভাবেই পূরণ হবার নায়। দোস্তারামপুর গ্রামের কৃষক ইন্দোজিত বলেন আমার ১২ বিঘা জমির মধ্যে ৪ বিঘা জমির ধান শিলা বৃষ্টিতে ঝরে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি গ্রামের কৃষকের হঠাৎ বৃষ্টিতে ফসলের বিশেষ করে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে নিচু এলাকার বোরো ধান বর্তমানে পানির নিচে। আর যেসব ধান এখনো কাটা সম্ভব হয়নি সেই ধান শিলার আঘাতে ঝড়ে পড়েছে জমিতে। ফলে, শিলা বৃষ্টির কারনে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, বর্তমানে বোরো ধান কাটার ভরা মৌসুম চলছে তানোরে। হঠাৎ শিলা বৃষ্টির কারণে কৃষকের মাঠে বোরো ধানের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে, কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, বৃষ্টি থামার সাথে সাথে বিভিন্ন এলাকায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নিজ নিজ এলাকার মাঠে পাঠিয়ে কেটে রাখা ধানের জমি থেকে পানি বের করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন। উপ সহকারী কৃষি অফিসার আকবর হোসেন, রাকিব হোসেন ও মীর সুমন রানা বলেন, বৃষ্টি থামার সাথে সাথে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা ও সু পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তারা বলেন, আমরা কৃষি অফিস সর্বদা কৃষকের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।