বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় ময়না বেগম (৩০) নামের এক নারী শ্রমিকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, তার প্রথম স্বামী শরিফুল মল্লিক অপহরণ করে অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে তাকে হত্যা করেছে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত শরিফুল পলাতক।বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে পুলিশ উপজেলার দাদপুর গ্রাম থেকে ময়নাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত ময়না বেগম দাদপুর গ্রামের ইউনুস শেখের মেয়ে। তিনি ডোবরা জনতা জুটমিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
পরিবার জানায়, প্রায় ১৩ বছর আগে ময়নার প্রথম বিয়ে হয় সালথা উপজেলার বলভরদিয়া গ্রামের শরিফুল মল্লিকের সঙ্গে। তবে বিয়ের তিন মাসের মাথায় তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তীতে জয়পাশা গ্রামের শামীম মোল্যাকে বিয়ে করে দুটি সন্তানের জন্ম দেন। শামীম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে গত বছর (২৫ মে ২০২৪) তিনি তৃতীয়বার বিয়ে করেন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার জামাল হোসেনকে।
নিহতের পরিবারের দাবি, বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে শরিফুল মল্লিক দাদপুরে এসে জোরপূর্বক ময়নাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে দুপুরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেলে রেফার করেন। এ সময় শরিফুল সেখান থেকে পালিয়ে যায়।নিহতের মামা লিয়াকত খলিফা বলেন, “শরিফুল আমার ভাগ্নিকে অপহরণ করে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। তার শরীরজুড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এটি কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়— এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।”
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, “নিহতের শরীরে একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে। শুক্রবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটেও মামলা হয়নি। তবে মামলা হবে বলে জানান থানার ওসি। এর পরেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”পুলিশ জানিয়েছে, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।