নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আলোচিত যুবদল কর্মী ইয়াছিন আরাফাত শাকিলকে(২৬) গুলি করে হত্যার ঘটনায় হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারপূর্বক ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠেছে পুরো এলাকা। লাবিব নামের এক তরুণকে অপহরণ থেকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে শাকিল নিহত হওয়ার পর থেকে এই হত্যার বিচার চেয়ে সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন অব্যাহত রেখেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের গঙ্গাবর বাজারে স্থানীয় এলাকাবাসির আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে স্থানীয় পাঁচ শতাধিক মানুষ অংশ নিয়ে শাকিলের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবি জানান। একই সঙ্গে বেগমগঞ্জে কিশোর গ্যাং র্নিমূল ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের আল্টিমেটাম দেন তাঁরা।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, ছয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন, নোয়াখালী জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ও ছয়ানী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী, বিএনপি নেতা নুর নবী চৌধুরী, এম আলা উদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত আর্মি মাসুদ, প্রবাসী গিয়াস উদ্দিন, নিহত শাকিলের বাবা মো.সোলাইমান খোকন, নিহতের ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেন শুভ প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, গত সোমবার রাতে স্থানীয় গঙ্গাবর বাজার থেকে ৮/৯ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী লাবিব নামে এক তরুণকে অপহরণের চেষ্টা করে। এসময় যুবদল কর্মী ইয়াছিন আরাফাত শাকিলসহ কয়েজন মিলে সন্ত্রাসীদের বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে হত্যা করে। এসময় অস্ত্রের আঘাতে শাকিলের ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেন শুভর মাথা ফাঁটিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় লোকজন তিন যুবককে ধরে গণপিটুনীর পর পুলিশে দিলেও বাকি সন্ত্রাসী এবং সন্ত্রাসের মদদদাতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়ে গেছে।
বক্তারা আরো বলেন, পুরো বেগমগঞ্জজুড়ে পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং এর ছোট-বড় অসংখ্য গ্রুপ তৈরী হয়েছে। যাদের কাছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশী-বিদেশী অস্ত্র রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। তাই কিশোর গ্যাং র্নিমূল ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা না হলে দল-মত নির্বিশেষে সকলে এক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
উল্লেখ- শাকিল হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা মো. সোলাইমান খোকন বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের যৌথ টিম গঙ্গাবর বাজারের পাশের একটি পরিত্যক্ত ডোবার পাশের ঝোঁপ থেকে শাকিল হত্যায় ব্যবহৃত সেমি অটোমেটিক একটি পিস্তল এবং পিস্তলের সাথে থাকা একটি খালি ম্যাগাজিন উদ্ধার করে। এর আগে ঘটনার পরপরই সোমবার রাতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের যৌথ টিম ঘটনাস্থল থেকে এক রাউন্ড তাজা গুলি ও এক রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।