ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১লা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
পুলিশ সপ্তাহ: বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সঙ্গে পুলিশের মতবিনিময়
জয়পুরহাটে কিল্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ
কলাপাড়ায় ইয়াবা সহ গ্রেপ্তার-১
বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আল্ট্রা ও ইসিজি পরীক্ষা সেবা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ২০০ কেজি ওজনের বোমা পাওয়া গেল মুন্সীগঞ্জে,নিষ্ক্রিয় করল সিটিটিসি
নওগাঁয় দুদকের অভিযানে রাস্তার কাজে মিললো অসংগতি:-অস্বীকার করলেন প্রকৌশলী
নড়াইলে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড:-প্রতিবাদে মানববন্ধন
চড়িয়া মধ্যপাড়া মাদ্রাসায় শতভাগ পাশসহ ৭ জন বোর্ড পেয়েছে
সীমান্তে বিজিবির অভিযান জোরদার ২০বার্মিজ গরুসহ সুপারী জব্দ
তানোরে জামায়াতের গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ
মোরেলগঞ্জে কাজী শিপনের পথসভায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি
কলাপাড়ায় সাবেক চেয়ারম্যানের বাড়িতে ডাকাতি:-নগদ টাকাসহ স্বর্নালংকার লুট
আসাদুজ্জামান খাঁন কমপ্লেক্সসহ তিন স্থাপনার নাম পরিবর্তন করছে ডিএনসিসি
ঢাকা উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহীন গ্রেফতার
চাঁদপুর বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ঔষধ বিতরণ কোস্ট গার্ডের

মতামত: দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্ব যখন অপরাধ হয়ে ওঠে

অন্ধকার যখন ঘনিয়ে আসে, তখন কিছু আলো আপন স্বচ্ছতাতেই আলাদা হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমানের ত্রিশ বছরেরও অধিক সময়ের কূটননৈতিক জীবনের পেশাগত পরিক্রমা এ সত্যকে আজ বার বার মনে করিয়ে দেয়।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস তার বিশেষ সহকারী হিসেবে রাষ্ট্রদূত রহমানকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করতে চেয়েছেন। অথচ, এ সিদ্ধান্তের পরপরই স্বার্থান্বেষী একটি মহল রাষ্ট্রদূত রহমানের রাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণে পেশাগত অর্জনকে রাজনৈতিক আনুগত্যের চাদরে ঢেকে দেয়ার পাঁয়তারা করছে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন একের পর এক সাফল্য অর্জন করছে, তখন স্বার্থান্বেষী কোনো মহল, কি উদ্দেশ্যে সে সব সিদ্ধান্তকে বিতর্কিত করতে চাইছে?

এসব পদে বিবেচনা না করার কারণ ছিল তার বিরুদ্ধে বিএনপি জামাত ট্যাগ। এমন কি এক পর্যায়ে তার জেনেভা পোস্টিং বাতিল করার জন্য সারসংক্ষেপ উত্থাপন করা হয়। যোগ্যতম কর্মকর্তা হলেও এসব পদে না পাঠিয়ে শেষে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমানকে জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে সিদ্ধান্ত হলে আদেশ জারি করা নিয়ে তালবাহানা করা শুরু হয়।

মানবাধিকার প্রশ্নে জাতীয় স্বার্থকে ভূলুণ্ঠিত করে তিনি সরকারের বানানো প্রচারণার দায়িত্ব পালন করবে কিনা তা নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকার বরাবরই দ্বিধান্বিত ছিল। ফলে আবারও বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক সেই কালিমা লেপে দিয়ে তার আদেশ বাতিলের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়।

এরপরও জেনেভায় কর্মকালে তিনি জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আইএলওর মামলা সমাধান করে ইইউর বাজারে বাংলাদেশকে জিএসপি রক্ষা, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় এলডিসি পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ ও কোভিড-পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্যে উন্নয়নশীল দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত করাকে অগ্রাধিকার প্রদান করে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে থাকেন। এসবই ছিল জনগণের, অর্থনীতির ও শ্রমিকদের স্বার্থে। অপরদিকে এইচআরসি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার রেজিমের স্বার্থে ।

ফ্যাসিস্ট সরকারের বানানো মানবাধিকার বিষয়ক প্রচারণায় অত্যধিক গুরুত্ব প্রদান না করার কারণে তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ২০২৩ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার ‘ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ’-এর সময় তাকে জোর করে ছুটিতে পাঠানোর মত চিন্তা শুরু করে।

২০২৪ সালের নির্বাচনের অব্যবহিত পূর্বে অবসরে যাওয়া সব সচিব এবং রাষ্ট্রদূতদের মেয়াদ যখন ছয় মাস বাড়ানো হয়, তখন দৈবক্রমে রাষ্ট্রদূত রহমানকেও জেনেভায় কাজ চালিয়ে যেতে হয়। রাষ্ট্রদূত রহমান এটি গ্রহণ না করলে পুরাতন ট্যাগ জোরালো হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। অবৈধ নির্বাচনের পরে প্রথম কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফব্রেুয়ারি মাসে ফ্যাসিস্ট সরকারের গলার কাঁটা রাষ্ট্রদূত রহমানকে ঢাকায় ফেরানোর আদেশ জারি করে। ৩১ মে ২০২৪ তারিখে রাষ্ট্রদূত রহমান চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
১৬ বছরের আওয়ামী শাসনামলে দক্ষ, নিষ্ঠাবান ও পেশাদার কূটনৈতিক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমান বিএনপি-জামায়াতপন্থি হিসেবে অভিহিত করে চাপে রাখা হয়। অথচ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যখন তাকে বিশেষ সহকারী হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী দায়িত্ব প্রদান করলেন, ঠিক তখনই একটি মহল তাকে শুধু চারদেশে রাষ্ট্রদূত থাকার কারণে দেখিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে অপপ্রচার শুরু করে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়কে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এ উদোগকে যারা ভেস্তে দিতে চায়, তারা আসলে কারা? সত্য দীপ্তিমান সূর্যালোকের ঘন মেঘের অন্ধকার ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসবেই।

শেয়ার করুনঃ