ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
রাজস্ব নীতিতে অভিজ্ঞতার অবমূল্যায়নের অভিযোগ: কাস্টমস ও ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশনের
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
মোরেলগঞ্জে মৎসঘের থেকে দিনমজুরের মরদেহ উদ্ধার
নোয়াখালী যুবককে গুলি করে হত্যা
পঞ্চগড়ে র‍্যাব সদস্যের বাড়িতে হামলা, দুই লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট
হজযাত্রীদের জন্য ‘লাব্বায়েক’ অ্যাপ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
তানোরে ভিক্ষুক পুনর্বাসনে ছাগল ও নগদ অর্থ বিতরণ করলেন ইউএনও
তানোরে পাট চাষে উদ্বুব্ধ করতে কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা বিতরণ
কুয়াকাটায় পর্যটককে মারধর করে টাকা হাতিয়ে নিল বিএনপি’র নেতারা
পাখিমারা পিভি মাধ্যমিক বিদ্যাঃ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বাদল মাতুব্বর
বলি চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরিফ কে উপজেলা প্রশাসনের সংবর্ধনা
তানোরে পূর্ব শত্রুতার জেরে যুবককে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ
সেন্টমার্টিনে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ বিতরণ কোস্ট গার্ডের
উপকূলে কোরআনের আলো ছড়াচ্ছে তামীরুল উম্মাহ হিফজুল কুরআন মাদরাসা
আমতলীতে ঈমান আকিদা সংরক্ষন ও বাস্তবায়ন কমিটি গঠন

কুয়াকাটায় পর্যটককে মারধর করে টাকা হাতিয়ে নিল বিএনপি’র নেতারা

কুয়াকাটায় বাদল মোল্লা নামের এক পর্যটককে মারধর করে টাকা হাতিয়ে নিলেন যুবদল, শ্রমিকদল ও মৎস্যজীবি দলের নেতারা। রবিবার(২৭ এপ্রিল) গভীররাতে কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল “আপন ভূবনে এ ঘটনা ঘটে। তবে ইতিমধ্যে ওই পর্যটককে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন অভিযুক্ত নেতারা।

ভুক্তভোগী বাদল মোল্লা জানান, তিনি পরিবারের সাথে অভিমান করে গত ১৭ এপ্রিল থেকে কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল আপন ভূবনে ওঠেন। মন খারাপ থাকায় ১’শত টাকা দিয়ে এক ভ্যান চালককে গাঁজা আনতে পাঠান। কিছুক্ষণ পর ভ্যানচালক ফিরে এসে পেপার কাগজে টিস্যু মুড়িয়ে পর্যটক বাদল মোল্লার হাতে দেয়ায় সাথে অভিযুক্ত নেতাদের সহযোগি আল-আমিন, মোস্তাফিজ, বেল্লালসহ অজ্ঞাত আরও দু’জন তাকে মারধর শুরু করেন।
পরবর্তীতে পৌর শ্রমিকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম মৃধা, মৎস্যজীবি দলের সাধারণ সম্পাদক আবুসালেহ ও ৩নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আবুবক্কর পর্যটক বাদল মোল্লাকে হোটেলের রিসিভশনে নিয়ে আবারও মারধর করেন।
একপর্যায়ে তারা পর্যটক বাদল মোল্লার রুমে গিয়ে ৪ পিস ইয়াবা ও ২২ হাজার টাকা পায়। পর্যটক বাদল মোল্লা ২২ হাজার টাকা হোটেল ম্যানেজার মিজানের কাছে দেন। এ সময় বাদল মোল্লার ২টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যান। হোটেল ম্যানেজার মিজানকে হুমকি দিয়ে মৎস্যজীবী দল নেতা আবুসালেহ টাকা নিয়ে ওয়ার্ড যুবদল নেতা আবুবক্করকে দেন। পরবর্তীতে পর্যটক বাদল মোল্লার মোবাইল ২টি ফিরিয়ে দিয়ে তারা হোটেল ত্যাগ করেন। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
হোটেল ম্যানেজার মিজান বলেন, গভীররাতে আমার হোটেলের সামনের রাস্তায় ডাকচিৎকার শুনে গিয়ে দেখি গেস্ট বাদল মোল্লাকে অভিযুক্তরা মারধর করছেন। আমি তাদেরকে হোটেলের রিসিভশনে আসার অনুরোধ করি। কিন্তু রিসিভশনে এসে তারা আমার গেস্টকে মারধর করেন এবং তার কক্ষে প্রবেশ করে ২৩ হাজার ৯’শ টাকা ও দুটি মোবাইল নিয়ে যান। পরবর্তীতে মোবাইল দুটি ফেরত দিলেও টাকা নিয়ে চলে যান।
ভুক্তভোগী পর্যটক বাদল মোল্লা বলেন, আমার ব্যাগে ২২ হাজার টাকা এবং প্যান্টের পকেটে ছিল এক হাজার ৯’শ টাকা। ব্যাগের ২২ হাজার টাকা আমি হোটেল ম্যানেজারের কাছে দিয়েছি। তার কাছে তারা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। আমি গতকাল থেকে না খেয়ে আছি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত কুয়াকাটা পৌর মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আবুসালেহ ঘটনার সাথে জড়িত না দাবী করে বলেন, হোটেল ম্যানেজার আমার কাছে ২২ হাজার টাকা দিয়েছেন। আমি টাকাটা ওয়ার্ড যুবদলের নেতা আবুবকরের কাছে দিয়েছি। পরে কি হয়েছে আমি জানি না।
ওয়ার্ড যুবদল নেতা আবুবকর বলেন, আমি আবুসালেহ’র কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা নিয়েছি। পরবর্তীতে পর্যটক বাদল মোল্লাকে ফেরত দিয়ে চলে গেছি।
এদিকে হোটেল কক্ষে বসে শ্রমিকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম মৃধাকে পুলিশ পরিচয় দিয়েছেন সহযোগীরা এমনটাই দাবী করেছেন ভুক্তভোগী পর্যটক বাদল মৃধা। তবে জসিম মৃধা বলেছেন তার সামনে কেউ পুলিশ পরিচয় দেয়নি। পর্যটককে মারধরের কথা স্বীকার করে শ্রমিক দলের এই নেতা বলেন, বিষয়টি ইতোমধ্যেই ফয়সালা হয়েছে। পর্যটককে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌর শ্রমিকদলের সভাপতি মানিক ফকির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি সোমবার বিকেলে ফয়সালা হয়েছে। ওই পর্যটককে কিছু টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে কত টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে, তা তিনি বলতে নারাজ।
এ প্রসঙ্গে কুয়াকাটা পৌর যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোঃ ফারুক বলেন, যুবদলের কোন নেতা এ ঘটনায় জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো আবাসিক হোটেলে অপরাধ সংঘটিত হলে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবেন। সেখানে দলের কোনো নেতাকর্মীর যাওয়ার সুযোগ নেই।
কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান হাওলাদার বলেন, আমার নেতা তারেক রহমানের নির্দেশ অনুয়ায়ী কোনো দুষ্কৃতিকারীর স্থান বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনে হবে না। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হলে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আঃ আজিজ মুসুল্লি বলেন, অপরাধীদের বিএনপিতে কোন স্থান নেই। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনা শুনেছি। তবে ভুক্তভোগী পর্যটক এখনো থানায় অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুনঃ