
সিলেটের সাবেক পুলিশ সুপার— এসপি আব্দুল মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সর্বশেষ রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত ছিলেন আব্দুল মান্নান। এখন কারাগারে রয়েছেন তিনি।
সোমবার(২৮ এপ্রিল) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত সিলেট জেলা পুলিশের সাবেক পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ মডেল থানায় গত ৮ জানুয়ারি মামলা হয়। এই মামলায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আব্দুল মান্নান বর্তমানে কারাগারে আছেন। তাকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর বিধান অনুযায়ী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা পাবেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২৩ জুন সিলেটের পুলিশ সুপার হিসাবে বদলি হন আব্দুল মান্নান। তিনি ওসি পোস্টিংয়ে ২০-৩০ লাখ টাকা আর পুলিশ ফাঁড়িতে ইনচার্জ বদলিতে নিতেন ১০ লাখ টাকা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি ছাত্রলীগকে নিজ কার্যালয়ে অস্ত্র রাখার সুযোগ দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত ৪ আগস্ট সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ছয়জন নিহত হন। এরপরের দিন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গোপনে তিনি সিলেট ছাড়েন।
এদিকে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে মান্নানকে নিয়ে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আব্দুল মান্নানের কপাল খুলে যায় যখন তিনি কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমে (সিটিটিসি) বদলি হন। সেখানে যোগদান করে— মন জয় করে নেন সে সময়ের সিটিটিসির প্রধান (সর্বশেষ এসবি প্রধান হন) মনিরুল ইসলামের। গাজীপুরের কিছু লোকজন আব্দুল মান্নানের কাছে আসেন জমি-জমার বিরোধ নিয়ে সমাধান চাইতে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কৌশলে হাতিয়ে নেন সেই জমি। সেখানেই গড়ে তোলেন ‘শালদহ ইকো-রিসোর্ট’। সঙ্গে নেন সরকারের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে, যাদের অনেকেই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। সিটিটিসি থেকে মনিরুলের আশীর্বাদপুষ্ট মান্নান বাগিয়ে নেন কুমিল্লার পুলিশ সুপারের পদ। সেখানেও টাকা ছাড়া ওসি পোস্টিং দেননি তিনি। এরপর সিলেটের পুলিশ সুপার হন।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেলে আব্দুল মান্নান মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের কোনো প্রকার নির্দেশনা না দিয়ে নিজেই আত্মগোপনে চলে যান।
ডিআই/এসকে