স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল ) দুপুরে ডিএনসিসির ১৪ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া,পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় মোট ৪ কি.মি. রাস্তা, ৫ কি.মি. নর্দমা ও ১.৫ কি.মি. ফুটপাত নির্মাণ কাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কি সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে তখন তারা জবাবদিহিতা করতে পারবে।'
এসময় তিনি উল্লেখ করেন, 'আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে পূর্ব ঢাকায় ৪২ নং ওয়ার্ডের চলমান কাজ পরিদর্শন করে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে কী ওয়াল (বিশেষ দেওয়াল) দেওয়া হয়েছে সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা একটা বড় দূর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে কি নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে তাহলে দূর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে জনগণ ততবেশি জবাবদিহি করতে পারবে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের জন্য আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি সঠিক নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দিব না। তারা বলেছে এটা ঠিক করে দিবে।'
তিনি আরও বলেন, 'যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নিবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে সেটা আমরা দিব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নিবেন। আমরা চাই সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।'
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, 'আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে যেয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশের এবং বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের সাথেও যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নিব।'
এসময় তিনি বলেন, 'মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে সেগুলো আমরা বন্ধ করে দিব। যারা এই ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্লাটফর্ম করবো। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করবো। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করবো কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে।'
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন।
নির্মাণকাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল- ৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
ডিআই/এসকে