ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা ভূমি অফিসে চেইনম্যান পদে কর্মরত এক ব্যক্তি গত ৮ বছর ধরে ভুয়া পরিচয়ে সরকারি চাকরিতে বহাল রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সরাইল উপজেলার পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা কবির হোসেনের নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে এই প্রতারণার ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভূক্তভোগী কবির হোসেন।
ভূক্তভোগীর ভাষ্য, ২০০৪ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে চেইনম্যান পদে মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তদের তালিকায় (রোল নং: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১৮০) স্থান পান তিনি। তবে নিয়োগপত্র না পেয়ে ২০০৮ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরব পাড়ি জমান। দীর্ঘ ১৬ বছর পর দেশে ফিরে তিনি জানতে পারেন, তার নাম ও পিতার নাম (মৃত রুস্তম আলী) ব্যবহার করে এক ব্যক্তি নবীনগর উপজেলা ভূমি অফিসে ওই পদে চাকরি করছেন।
সূত্র জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি আসলে কসবা উপজেলার শালদানদী জয়দেবপুরের বাসিন্দা। তিনি সরাইল উপজেলার পরমানন্দপুর গ্রামের কবির হোসেনের নাম, পরিচয়, এমনকি অন্যান্য সব তথ্য ব্যবহার করে ভূমি অফিসে চাকরি নিয়েছেন।
এই ঘটনায় চরম হতাশ ও ক্ষুব্ধ কবির হোসেন দাবি করেছেন, এটি কেবল তার চাকরি হারানোর বিষয় নয়, বরং তার পরিচয়, অধিকার ও নাগরিক সত্ত্বার উপর সরাসরি আঘাত। তিনি বিষয়টি নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ও ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র—যেমন সুপারিশপত্র, ওয়ারিশ সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র ও জমির দলিল—সহ লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত কবির হোসেন দাবি করেছেন, তিনি নিয়মিত প্রক্রিয়ায় চাকরি লাভ করেছেন এবং কবির হোসেনের অভিযোগ মিথ্যা।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব চৌধুরী বলেন,“এ বিষয়ে আমি অবহিত হয়েছি। যদি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাকে নির্দেশ দেন, তাহলে আমি বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন,এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “২০০৪ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু অনিয়মের অভিযোগ আমরা আগেও পেয়েছিলাম। এই নতুন অভিযোগ যাচাই করে দেখা হচ্ছে।”