
“মাদকমুক্ত জীবন, সমাজের সুন্দর ভবিষ্যৎ” এই প্রতিপাদ্যকে ধারন করে মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে পারিবারিক সচেতনতার পাশাপাশি মাদক নির্ভরশীলদের সুস্থ্য জীবনে ফিরিয়ে আনতে হলে মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ব্যাধি (এসইউডি) প্রক্রিয়া সম্পর্কে অভিভাবকদের সঠিক ধারণা রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজ রবিবার (২৭ এপ্রিল) ৩ টায় রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের সভাকক্ষে আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের আয়োজনে ফ্যামেলি এডুকেশন সভায় চিকিৎসারত পরিবারদের এমন পরামর্শ দেন বক্তারা। বক্তারা বলেন, সুন্দর জীবন গড়তে হলে মাদক ছাড়তে হবে।
সেন্টার ম্যানেজার মোসা. মানুয়ারার সভাপতিত্বে উক্ত সভায় রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক (ক্লিনিক্যাল সাইকোলোজিস্ট) মনোচিকিৎসক ডাঃ মো: জহির উদ্দিন। এসময় তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ব্যাধি (এসইউডি) পারিবারিক গতিশীলতার উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। মানসিক যন্ত্রণা ও সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং আর্থিক বোঝা তৈরি করে যা পরিবারগুলি ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব, অবহেলা এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিঘ্নের সম্মুখীন হতে পারে। তবে, চিকিৎসা এবং পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় পারিবারিক সমর্থন এবং সম্পৃক্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা মানসিক সমর্থন, প্রেরণা এবং একটি স্থিতিশীল পরিবেশ প্রদান করে। মাদক নির্ভরশীলতা যে একটি জটিল পুন:আসক্তিমূলক মস্তিস্কের রোগ সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা আমাদের অনেকেরই নাই। যার ফলে অধিকাংশ মাদক নির্ভরশীল ব্যক্তি পূর্ণ মেয়াদে চিকিৎসা গ্রহণ করছে না। ফলে ফলপ্রসূ চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। তিনি আরোও বলেন, এই আসক্তি মূলক প্রক্রিয়া থেকে উত্তরণের জন্য পরিবারের ভুমিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। সবার আগে পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এসিসটেন্ট এইচআর এন্ড একাউন্টস অফিসার মারজানা মুনতাহা, সহকারী সেন্টার ম্যানেজার রোজিনা খাতুন, মাহমুদা আলম ও এ্যাসিস্টেন প্রোগ্রামার আঞ্জুমান আরাসহ চিকিৎসারত ক্লায়েন্টের ২২ জন অভিভাবক।
এসময় চিকিৎসারতদের অভিভাবকরা বলেন, মাদক নির্ভরশীল রোগ শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত ক্ষতি সাধন করে না একাধারে পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতিও সাধন করে থাকে। এটি একটি অসংক্রামক রোগ মনে হলেও আসলে তা একটি সংক্রমক রোগ যা একজনের থেকে অন্য জনে ছড়ায়। উপরন্তু এই রোগটি শারীরিকভাবে ছোঁয়াচে না হলেও এটি অন্যদের মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। তাই আমরা এই সমস্যাকে ছোঁয়াচে বলতে পারি।
উল্লেখ্য, সমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে এবং মাদকনির্ভরশীল ব্যক্তিদের সুস্থ সমাজে ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা খুব গুরুত্বপূর্ন যা ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকার শ্যামলীতে অবস্থিত আহছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ২০১৪ সাল থেকে মাদক নির্ভরশীল নারীদের সুস্থতার জন্য চিকিৎসা সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।
ডিআই/এসকে