
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের দল পাল্টালেন শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর। এই নিয়ে আট বার রাজনৈতিক দল পরিবর্তন করলেন বিএনএম এর সদ্য পদতাগী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। ২৫ এপ্রিল শুক্রবার রাজধানী ঢাকার পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে জনতা পার্টি বাংলাদেশে যোগ দেন শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর। তাঁকে পার্টির উপদেষ্টা পদ দেওয়া হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার সরাসরি সহযোগিতায় গঠিত বিএনএম-এ যোগ দিয়ে নোঙর মার্কা প্রতীকে অংশ নেন শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর । কিন্তু বিপুল ভোটে পরাজিত শুধু নন তাঁর জামানতও বাজেয়াপ্ত হয় এবং তিনি তৃতীয় স্থান পান। বিএনএমে যোগ দিতে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ ছাড়েন তিনি। ওই সময় বিএনপি নেতৃত্বের সমালোচনা করে নেতিবাচক অনেক মন্তব্যও করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর সুনাম কুড়ালেও বারবার দল পরিবর্তন করে তিনি ডিগবাজ হিসেবেই পরিচিত। আওয়ামী লীগের রাজনীতি দিয়ে শুরু করে পরবর্তীতে আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে বাকশাল, এরপরে বাকশালের সরদার আমজাদ গ্রুপে যোগ দেন শাহ জাফর । “৭৯ ও “৮৬ সালে নৌকা মার্কা নিয়ে এমপি হন। নৌকা মার্কার এমপি এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে ১৯৮৮ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনেও এমপি হয়েছেন শাহ্ জাফর। তিনি জাতীয় পার্টিতে পর্যায়ক্রমে সাংগঠনিক সম্পাদক, ভাইস চেয়ারম্যান, প্রেসিডিয়াম সদস্যদের দায়িত্বও পালন করেন। ছিলেন জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি। এরপর জাতীয় পার্টি নাজিউর এ যোগ দেন এবং ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ফরিদপুর-১ আসনে নির্বাচন করে পরাজিত হন। নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টি ছেড়ে যোগ দেন বিএনপিতে । ২০০৫ সালে উপ-নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অল্প কিছুদিনের জন্য এমপি নির্বাচিত হন শাহ জাফর । ১/১১ তে মান্নান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বিএনপির সংস্কারপন্থীদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হন । ২০০৮ ও ২০১৮ তেও ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন শাহ্ জাফর । বিএনপি তাঁকে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যও করে । তবে ২০২৩ সালে বিএনপি ছেড়ে দেন শাহ্ জাফর। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট-এমবিএম এ যোগ দেন এবং সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি যখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে সহায়তাকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানাচ্ছে তখন নতুন নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়ে ফ্যাসিস্টের সহায়তাকারীর পুনর্বাসন বিস্ময়কর নয় কি! এমনটাই মনে করেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সারওয়ার।