মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদঃ ,ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
রৌদ্রের প্রখর তাপে হাঁসফাঁস জনজীবন। সেই তাপেও খুশিতে ভুট্টা চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে ভালো হয়েছে ভুট্টার ফলন।বাজারে মিলছে ভুট্টার ভালো দাম। সব মিলিয়ে আনন্দে আত্মহারা ভুট্টা চাষিরা। চলতি মৌসুমে ঘোড়াঘাট উপজেলায় ১ হাজার ৯২৫হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। হেক্টর প্রতি ফলন উ পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১২ মেট্রিক টন। এ হিসেবে ২৩ হাজার মেঃটন উ পাদনের আশা করছেন কৃষি অফিস। সরেজমিনে সোমবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিস্তৃত ফসলের মাঠে জমি থেকে ভুট্টা ভাঙতে ব্যস্ত চাষি ও শ্রমিক। নানা বয়সী নারী-পুরুষ গাছ থেকে ভুট্টা ভাঙছেন। কেউবা ভুট্টার খোসা ছড়িয়ে বস্তায় ভরছেন। বস্তায় র্ভতি এসব ভুট্টা জমি থেকে চলে যাচ্ছে চাতালে অথবা কৃষকের বাড়ির আঙিনায়।
কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। আশানুরূপ দাম পাওয়ার পাশাপাশি ভুট্টা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না কৃষককে। খুচরা ও পাইকারি ক্রেতা এবং বিভিন্ন কোম্পানি সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ভুট্টা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। গবাদি পশুর উন্নত মানের খাবার হিসেবে ব্যবহার করায় দিন দিন এর চাহিদা বেড়েই চলেছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষরা বলেন, এক সময় এই এলাকার গমের চাষাবাদ ছিল চোখে পড়ার মতো। র্বতমানে গো-খাদ্য, মাছের খাবার ও মুরগির খাবর হিসেবে ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা বেড়ে গেছে।
ঘোড়াঘাটের করতোয়া নদীর বুক চিরে জেগে ওঠা ধুধুবালুচরসহ বিভিন্ন এলাকায় ভুট্টাচাষের বিপ্লব ঘটিয়েছে কৃষকরা। ভুট্টাচাষে বদলে গেছে এ সব এলাকার মানুষের জীবন চিত্র। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বেশি জমিতে ভুট্টাচাষ হয়েছে। এ সব জমির বেশিরভাগ অংশেই চাষ হচ্ছে ভুট্টা। উপজেলার ভুট্টাচাষ শুরুহয় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সহযোগিতায় ২০০১ সালের দিকে। মাত্র ১০০০ হেক্টর জমি দিয়ে ভুট্টা চাষ শুরুহয়। র্বতমানে ধীরে ধীরে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ভুট্টা চাষ বাড়তে থাকে। অন্যতম
রবিশস্য ভুট্টা, যা সম্প্রতি এ অঞ্চলের ব্র্যান্ডিং পণ্য বলে খ্যাত। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,বুলারকীপুর থেকে ঘোড়াঘাট র্পযন্ত মাইলের পর মাইল বির্স্তীণ এলাকাজুড়ে ভুট্টা আবাদ করা হয়েছে।নদীর দুইতীরে এক সময় দেখা যেত শুধুই রাশি রাশি বালু। নদীতে ভিটে-বাড়িসহ ফসলি জমি হারানো মানুষের দুঃখ কষ্ট ছিল নিত্য দিনের সঙ্গী। অন্যান্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায়, ঘোড়াঘাটের র্সবত্র এখন চাষ হচ্ছে এই ভুট্টা। ভুট্টা চাষের মাধ্যমে পাল্টে যাচ্ছে এ উপজেলার মানুষের জীবনযাত্রা। তবে, কৃষকদের দাবী, এখানে সরকারিভাবে ভুট্টা ক্রয় কেন্দ্র চালুকরা হলে, তারা পাবেন ন্যায্যমূল্য। উপজেলার র্ভনাপাড়া এলাকার মাসুদ বলেন, ভুট্টা চাষের মাধ্যমে আমাদের ভাগ্যের পরির্বতন হয়েছে এটা সত্য। কিন্তুআমরা ন্যায্য দাম পাই না।তাছাড়া এবার সার ও বীজের দাম অনেক বেশি। ফলে আমাদের উ পাদন খরচও বেড়ে গেছে। উপজেলার সিংড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রভাষক মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ভুট্টা চাষের মাধ্যমে পাল্টে যাচ্ছে করতোয়া তীরর্বতী চরাঞ্চলসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভূট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ হচ্ছে। এলাকার মানুষ ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করে সাবলম্বী হচ্ছে। ভাগ্যেরে চাকা ঘুরিয়েছে আবাদ করে।এ উপজেলার মানুষের জীবনযাত্রা অনেক উন্নত হয়েছে। তবে সরকারিভাবে ভুট্টাকেন্দ্রিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে এলাকার র্আথ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি র্কমর্কতা মোঃ রফিকুজ্জামান বলেন, এ উপজেলার উপজেলায় ১ হাজার ৯২৫হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। হেক্টর প্রতি ফলন উ পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১২ মেট্রিক টন। এ হিসেবে ২৩ হাজার মেঃটন উ পাদনের লক্ষ্যমাত্রা র্নিধারণ করা হয়েছে। ভুট্টা চাষের মাধ্যমে কৃষকরা কৃষিতে বিপ্লব ঘটানোর চেষ্টা করছে।
আমরা তাদেরকে সব সময়পরার্মশ দিয়ে যাচ্ছি।