ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
ঝটিকা মিছিল: নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সদস্যসহ গ্রেফতার ১০
মুন্সিগঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকালে বাল্কহেড-ড্রেজারসহ আটক ২
মাঠ পর্যায়ে অনিয়ম পেলে কোম্পানির অ্যাগ্রিমেন্ট বাতিল: ডিএনসিসি প্রশাসক
রায়পুর পৌর এলাকায় পানির দুর্ভোগে নাকাল পৌরবাসি
নোয়াখালীর হাতিয়া কমিউনিটি কলেজের অধ্যক্ষকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছে কলেজের পিয়ন
আত্রাইয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পর জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন নির্মাণ
নান্দাইলে ১৫ টাকা কেজির ১৭৮ বস্তা চাল জব্দ
শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান পুলিশের
আত্রাইয়ে ঔষধ ও কসমেটিকস আইন বিষয়ক সচেতনতামূলক সভা
অপরিকল্পিত খননের কারণে মৃত প্রায় নেত্রকোণার পিয়াইন নদী, এক সময়ের খরস্রোতা নদীতে চলছে কৃষিচাষ
‘আমার দেশ ‘ পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুরে মানববন্ধন
নান্দাইল মডেল থানায় হাজতিদের জন্য বই কর্ণারের উদ্বোধন
ফুলবাড়ীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতা গ্রেপ্তার
সাগর-রুনী হত্যা মামলার নথিপত্র পুড়ে যাবার তথ্য সঠিক নয়: ডিএমপি
নিষিদ্ধ সংগঠনের ঝটিকা মিছিলের প্রতিবাদে মিরপুরে যুবদল ও বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল

অপরিকল্পিত খননের কারণে মৃত প্রায় নেত্রকোণার পিয়াইন নদী, এক সময়ের খরস্রোতা নদীতে চলছে কৃষিচাষ

জাহাঙ্গীর আলম,নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধিঃ

গতকয়েক বছর আগে স্রোতস্বিনী রুপে বয়ে চললেও বর্তমানে চর জেগে ধু ধু বালিময় মাঠে পরিনত হয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নেত্রকোণার হাওর উপজেলা খালিয়াজুরীর উপর দিয়ে বয়ে চলা পিয়াইন নদী।

অপরিকল্পিত খনন এবং সংস্কারের অভাবে নদীটি এখন নাব্যতা হারাতে বসেছে। ফলে নদীর তলদেশে পলি জমে বিভিন্ন স্থানে জেগে উঠেছে চর। হুমকির মুখে পরেছে বিখ্যাত লেপসিয়া বাজারের ব্যবসায়ীরা ও চরম বিপাকে পরেছে স্থানীয়রা। এখন যে নদীতে মাছ চাষ হওয়ার কথা সেখানে চলছে ধানসহ নানান ধরনের কৃষি চাষ।

খালিয়াজুড়ি উপজেলার চাকুয়া ইউনিয়নের লেপসিয়া বাজার থেকে পাঁচহাট হয়ে রানীচাপুর পর্যন্ত হাওরাঞ্চলের কৃষক ও জেলেদের সুবিধা বিবেচনা করে পুনরায় খনন করে নদীটি পরিপূর্ণ রূপে ফিরিয়ে আনার দাবি স্থানীয়দের।

লেপসিয়া গ্রামের কৃষক সুমন মিয়া জানান, গত কয়েক বছর আগেও এই নদীতে অনেক পানি ছিলো। এই নদীর পানি দিয়ে আমরা কৃষি কাজ সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতাম। বছরে কোটি কোটি টাকার মাছ বিক্রি হতো এই নদী থেকে এখন তা ধু ধু মরুভূমিতে পরিনত হয়েছে। নদীতে পানি না থাকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে বাজারে নৌকা ঢুকতে পারছেনা। এজন্য আসতে পারছে না পণ্য বা দুর-দুরান্তের ব্যবসায়ীরা। তাই ধ্বস নেমেছে বছরে কোটি টাকা রাজস্ব দেয়া এই বাজারটির ব্যবসা খাতে।

খালিয়াজুড়ি উপজেলার ২ নং চাকুয়া ইউনিয়নের সাবেক বিএনপির সভাপতি রহমান মিয়া বলেন, একসময় এই নদী দিয়ে বড় বড় নৌকা যাতায়াত করতো। আজ এই পিয়াইন নদীতে ধান ও কৃষি চাষ হয় শুধু মাত্র অপরিকল্পিত খননের কারণে। শুনেছি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পিয়াইন নদীর ৪.৯২ কিলোমিটার খননসহ খাল খনন ও বাঁধ নির্মানের কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০২০-২১ অর্থ বছরে। কিন্তু এর পরের বছরেই আবার নদীটি ভরাট হয়ে যায়।
আমরা চাই খননের নামে প্রতি বছর সরকারের টাকা লুট না করে। সঠিক ভাবে নদী ও খাল গুলো খনন করলে এই ভোগান্তির হাত থেকে বাচরে ইউনিয়ন বাসী।

পিয়াইন নদীর জলমহাল ইজারাদার মোঃ খলিল মিয়া জানান, প্রতি বছর সরকার’কে ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকা রাজস্ব দিয়ে আসছি। গত ৩ আগে নদীটি খনেনর পরে আবার ভরাট হয়ে মরুভূমিতে পরিনত হয়েছে। ফলে আমরা অনেক বড় ক্ষতি মধ্যে আছি।
ইজারাদারকৃত নদীর কিছু কিছু মসজিদ ও মন্দিরের দোহাই দিয়ে বেদখল করে আছে কিছু অসাধু ব্যক্তি।
এভাবে চলতে থাকলে সরকারকে দেওয়া রাজস্বের টাকাও উঠানো মুসকল হয়ে পরবে আমাদের জন্য।

উল্লেখ্য, নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, হাওর এলাকা বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পিয়াইন নদীর ৪.৯২ কিলোমিটার খননসহ খাল খনন ও বাঁধ নির্মানের কাজ শুরু করা হয় যার সর্বমোট বরাদ্দ ধরা হয় ১৪ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে নদীটির খনন কাজ সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু নদীটির উৎপত্তিস্থল ধনু ও পিয়াইন নদীর মোহনা থেকে শুরু করে একমাত্র নদীপথ নির্ভর লেপসিয়া বাজার ঘেষে প্রায় ৪/৫ কিলোমিটারের বেশি জায়গা ভরাট হয়ে গেছে।

বর্তমানে নদীটির কোথাও মরুভুমির মত বালুময় মাঠ আবার কোথাও নাম মাত্র ধারা প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে জেলা বা উপজেলার সাথে এঅঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই নদীটি শুকিয়ে যাওয়ায় অত্র এলাকার অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সকল কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী
সরওয়ার জাহান জানান, নদীটির মোহনায় পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া অংশে প্রতিবছরেই খনন করতে হবে। জেলার অন্য নদ-নদীর সাথে পিয়াইন নদীর বরাদ্দ চেয়ে চিঠি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলে কাজ শুরু করা হবে।

এমতাবস্থায় নদীটির প্রয়োজনীয়তা বিবেচনাপুর্বক পুনঃখনন জরুরি। তাই অতি দ্রুত নদীটি পুনঃ খননের ব্যবস্থা করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীসহ সর্বসাধারণের।

শেয়ার করুনঃ