
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান ফু-ওয়াং ফুডসের কোটি কোটি টাকার হিসাব গড়মিলের অভিযোগ এনে সাবেক ব্যবস্থাপনা আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার দুই মেয়ের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। জাপানি বিনিয়োগকারী ও ফু -ওয়াং ফুডসের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়া মামুন ১৬ এপ্রিল আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়,সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক
আরিফ আহমেদ চৌধুরী দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে ফু-ওয়াং ফুডের কোটি কোটি টাকা নয়-ছয়ের নেপথ্যের কারিগর ছিলেন কোম্পানির তৎকালীন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। তাদের যোগসাজশে এত বিপুল পরিমাণ অর্থের গড়মিল তৈরি হয়েছে কোম্পানিটিতে।
জানা গেছে,ফু-ওয়াং ফুডের সাবেক প্রধান (প্রোকিউরমেন্ট) রফিকুল হাসান খান,সাবেক সিনিয়র ফাইন্যান্স ম্যানেজার মো.নাসির শিকদারসহ আরও বেশ কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকতা জড়িত রয়েছেন এই আর্থিক জালিয়াতির ঘটনায়। ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেড-এর সকল ক্রয় কার্যক্রম ২০১৯ সাল থেকে ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত রফিকুল হাসান খান,সাবেক প্রধান (প্রোকিউরমেন্ট)-এর একক তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়েছে।
সুত্র আরও জানায়,রফিকুল হাসান খান ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেডের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আহমেদ চৌধুরীকে কোম্পানির তহবিলের অপব্যবহারে সহায়তাকারীদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। তিনি ভুয়া ক্রয় আদেশ তৈরি করতেন এবং নিজেদের স্বার্থে কোম্পানির অ্যাকাউন্ট থেকে নগদ টাকা উত্তোলন করতেন। এছাড়াও,তিনি সরবরাহকারীদের কাছ থেকে নিয়মিত নগদ কমিশন গ্রহণ করতেন। নগদ কমিশন না পেলে তিনি কখনোই ক্রয় আদেশ দিতেন না।
অপর দিকে,সাবেক সিনিয়র ফাইন্যান্স ম্যানেজার নাসির সিকদার ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে প্রকৃত টার্নওভার ও আদায়ের বিষয়টি গোপন করতেন। এছাড়াও তিনি ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেড-এর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আহমেদ চৌধুরীকে নগদ বিক্রয়ের অর্থ থেকে ব্যক্তিগত স্বার্থে টাকা উত্তোলনে সহায়তা করেছেন। মুলত ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত হিসাব জালিয়াতি ও নানা রকমের কারসাজির সঙ্গে জড়িত প্রধান অপরাধীদের অন্যতম একজন ছিলেন নাসির সিকদার।
আদালতে দায়ের করা মামলায়,ফু-ওয়াং ফুডসের ৭০ কোটি ৮৪ লাখ ৭৭ হাজার ৪৩৮ টাকার হিসাব গড়মিলের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আদালতে দায়ের করা মামলার বিষয়ে মিনোরি বাংলাদেশের আইনজীবি -মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান, সাবেক এমডির সময়কালে কোম্পানির ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকিসহ বিশাল অংকের টাকার হিসাব সঠিকভাবে প্রদানের জন্য এই মিসকেসের দায়ের করা হয়েছে। ওই সময়ে যারা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব ছিলেন তারাও এই দায় এড়াতে পারবেন না।
এই বিষয়ে ফু -ওয়াং ফুডসের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়া মামুন বলেন, ‘সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আহমেদ চৌধুরীর দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে ফু-ওয়াং ফুডের কোটি কোটি টাকা নয়-ছয় হয়েছে। সেই সময়ে ফু-ওয়াং ফুডের সাবেক হেড অব প্রক্রিউরমেন্ট রফিকুল হাসান খান,সাবেক সিনিয়র ফাইন্যান্স ম্যানেজার মো.নাসির শিকদার সহ অনেকেই এমডিকে কোম্পানির টাকা অন্যত্র সরাতে সহযোগিতা করেছেন। তাই এই দায়ভার তারা কোনভাবেই এড়াতে পারবেন না।’
এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও সাবেক হেড অব প্রক্রিউরমেন্ট রফিকুল হাসান খান এবং সাবেক সিনিয়র ফাইন্যান্স ম্যানেজার মো.নাসির শিকদারকে তাদের ব্যাক্তিগত মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তা রিসিভ করেনিই কেউই।
ডিআই/এসকে