
লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর থানা এলাকায় চাঞ্চল্যকর স্পেন প্রবাসী হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী ফারুক গাজীকে (২৮) গ্রেফতার করেছে র্যাব। সোমবার বিকালে র্যাব-১১,সিপিসি-৩,নোয়াখালী ও র্যাব-১১, সদর কোম্পানী,নারায়নগঞ্জের যৌথ অভিযানে মুন্সিগঞ্জ সদর থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালীর কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায় যে, মামলার বাদী হানিফ দেওয়ান (৭০) একজন স্থানীয় প্রাক্তন মেম্বার ও নিহত ব্যক্তি সাইজ উদ্দিন দেওয়ান (৪২) তার আপন ভাই এবং বিবাদীরা এলাকাতে ফারুক কবিরাজ বাহিনী নামে পরিচিত। ওই বাহিনী দীর্ঘদিন যাবত অস্ত্রের মহড়া দেখিয়ে নিরীহ জেলে ও চরের কৃষকদের উপর জুলুম, নির্যাতন ও চাঁদাবাজী করে আসছে। গত ৭ এপ্রিল দুপুর অনুমান ০২.০০ ঘটিকার সময় সূত্রোক্ত মামলার বিবাদীরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে বাদীর ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া ও তার পরিবার লোকজনদেরকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে এজাহারনামীয় আসামীরাসহ অপরাপর অজ্ঞাতনামা আসামীরা মিলে দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্রসহ বাদীর বাড়ীতে হামলার উদ্দেশ্যে সমবেত হয়ে রওয়ানা হয়। বাদীর ভাই ভিকটিম সাইজ উদ্দিন দেওয়ান (৪২) স্পেনের নাগরিক এবং ছুটিতে সে তার শ্বশুর বাড়ী হতে নিজ বাড়ীতে আসার পথে আকস্মিকভাবে সূত্রে বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামীদের সম্মুখে পড়ে। এক পর্যায়ে ১২/১৩ নং আসামীরা ভিকটিমের দুইজন নাবালক ছেলেকে ভিকটিম থেকে আলাদা করে রাস্তার পশ্চিম পাশে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং অপরাপর এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামীরা ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে চারদিক থেকে আক্রমন করে।
আক্রমন থেকে নিজেকে বাঁচাতে গেলে ভিকটিম মাথা, হাত-পা সহ বুকে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয় ও প্রচুর রক্তক্ষরন হয়। আসামীরা ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে কয়েকজন সাক্ষীসহ ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে এজাহারনামীয় ও অপরাপর অজ্ঞাতনামা আসামীরা ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য ১ ঘন্টা পথরোধ করে রাখে। পরবর্তীতে আশপাশের লোকজন হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ীতে ফোন করলে পুলিশ এসে ভিকটিমকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই হানিফ দেওয়ান (৭০) নিজে বাদী হয়ে ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে এজাহার দায়ের করলে হত্যা মামলা রুজু হয়। এ মামলায় গতকাল মুন্সিগঞ্জ সদর থানাধীন আমতলা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই এজাহারনামীয় আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করে এবং ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ডিআই/এসকে