
পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিথী আক্তার (১৮) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ ফেলে রেখে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী এবং ওই পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্বামী ফাহিম হোসেন ও তার বাবা সোহাগ মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মেয়ের বাবা।
রোববার (২৩ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে সদর উপজেলার স্বরূপকাঠি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ছারছিনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ল বিথী আক্তার হত্যার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
মৃত বিথী আক্তার উপজেলার স্বরূপকাঠি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের কৃষ্ণকাটি গ্রামের মিজানুর রহমানের মেয়ে। ফাহিম হোসেন একই ওয়ার্ডের ছারছিনা গ্রামের সোহাগ হোসেনের ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, বিথী আক্তার ছয় মাস আগে পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও প্রেম করে ফাহিম হোসেনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। ফাহিম কর্মহীন থাকায় আর্থিক অনটনের কারণে প্রায়ই দুই পরিবারের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল স্বামী ও পরিবারের নির্যাতনে বিথী আক্তারের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
নিহতের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, দুষ্ট প্রকৃতির কর্মহীন ফাহিম প্রেমের ফাঁদে ফেলে আমার মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে যৌতুক দাবি করে আসছিল ওই পরিবার। যৌতুকের দাবিতে প্রায় আমার মেয়েকে নির্যাতন করত। রবিবার ওই পরিবার থেকে আমাকে মোবাইল করে মেয়েকে (বিথি) নিয়ে যেতে বলে। পরে রাত দশটার দিকে হাসপাতাল থেকে ফোন করে বলে আপনার মেয়ে মারা গেছেন। পরে হাসপাতালে যেয়ে দেখি ওখানে ওই পরিবারের কেউ নেই শুধু আমার মেয়ের মরদেহ পড়ে আছে। ওরা আমার মেয়েকে হত্যা করে পালিয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, বিথী আক্তার নামের ওই মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়। আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পাই।
ওই ওয়ার্ডের চৌকিদার মো. মাসুম হোসেন জানান, এই বিয়ে নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত মতানৈক্য চলে আসছিল। হাসপাতলে মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যাওয়ায় ওই পরিবারের সদস্যরাই মৃত্যুর জন্য দায়ী বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য দেবকুমার জানান, বিষয়টা খুবই অমানবিক। হাসপাতালে মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যাওয়াটা ঠিক হয়নি।
বিষয়য়টি নিয়ে নেছারাবাদ(স্বরূপকাঠি) থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাধেশ্যাম সরকার এই প্রতিবেদককে জানান, মরদেহ থানায় আনা হয়েছে। একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পিরোজপুর মর্গে পাঠানো হবে। মামলা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।