
ঘোড়াঘাটে গৃহবধু ফেরদৌষী হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে থানা পুলিশ অপমানের বদলা নিতে স্ত্রীকে হত্যা করেে স্বামী সাগর আহম্মেদ।দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার কৃষ্ণপুর মরিচা গ্রামে ধান ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে ফেরদৌসী (২২) নামের গৃহবধ‚কে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে তারই স্বামী সাগর মিয়া (২৪)।
এর আগে ওই নারী দুর্বৃত্তদের হাতে হত্যা হয়েছে এমন নাটক সাজানোর চেষ্টা করে ঘাতক স্বামী।পরে পুলিশ সুপার শাহ মোঃ ইফতেখার আহমেদ (পিপিএম) এর দিক নির্দেশনায় ও থানা পুলিশের বিচক্ষণতায় হত্যার ৬ ঘন্টা পরই এর রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয় থানা পুলিশ ও পিবিআই । পরে হত্যার সাথে জড়িত নিহতের স্বামীকে সেদিন রাতেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ।ঘটনার দিন বুধবার (৮ নভেম্বর) বিকালে ধান ক্ষেতে আইলের উপর একটি নারীর লাশ পড়ে আছে, এমন খবরে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানার পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ।
সে সময় ওই নারীর শরীরে কোথাও আঘাতের চিহ্ন ছিল না।
শুধু মাত্র নিহতের গলায় গোল কালো দাগ পাওয়া যায়। আর এ
থেকে ধারণা করা হয় তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরে থানা পুলিশের একাধিক টিম হত্যা কান্ডের কারণ খুঁজতে মাঠে কাজ শুরু করে এবং এক পর্যায়ে নিহতের স্বামীর উপর সন্দেহ হলে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী কার করে তার স্ত্রী ফেরদৌসীকে সে একা নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম আব্দুল্লাহ আল-মাসুম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বাবা-মা হারা নানা নানির কাছে মানস হওয়া ফেরদৌসকে চার বছর আগে বিয়ে করে সাগর। স্বামী সাগর পেশায় একজন ভ্যান চালক ছিলেন। বিয়ের চার বছরেও তাদের সংসারে কোন সন্তান ছিল না আর এনিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হত এবং সাগর মাঝে মাঝেই স্ত্রীকে মারপিট করত। এক মাস পর্বে সাগর আবার স্ত্রী ফেরদৌসীকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দিলে জয়পুরহাটের পাঁচবিবির পশ্চিম বালিঘাটা টিএন্ড টি পাড়া গ্রামে নানার বাড়ি চলে যায়।এরপর ঘটনার দশ পনেরো দিন আগে তার স্ত্রীকে আনতে গেলে মারপিটের কারণে সাগরকে শাসিয়ে তাকেও মারপিট করে নানা ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন।
সে সময় স্ত্রী ফেরদৌসী স্বামীর পক্ষ না নেওয়ায় এবং প্রতিবাদ না করায় মনে মনে অনেক ক্ষোভ ও রাগ হয় সাগরের। আর তখন থেকেই অপমানের বদলা নিতে স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা আটে। প্রতিদিনের মত সাগরের স্ত্রী গরু-ছাগলের ঘাস কাটতে বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে ধান ক্ষেতে গেলে,সাগর সুযোগ বুঝে ধান ক্ষেতের ভিতর নিয়ে যায় স্ত্রী ফেরদৌসীকে।
পরে হত্যার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া রশি দিয়ে অনুমান দুপুর ১২টায় কৌশলে দুই হাত বেঁধে অপর প্রান্ত গলায় জড়িয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে জমির আইলের উপর ফেলে রাখে। পরে কেউ বুঝে উঠার আগেই অন্যন্য দিনের মত ভ্যান চালাতে বের হয় ঘাতক স্বামী সাগর।লোকমুখে তার স্ত্রীর মৃত্যুর কথা শুনতে পেয়ে.অজ্ঞানের ভান কওে সে।প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উপস্থিত দিলেন, ঘোড়াঘাট-হাকিম
পুর থানার সিনিয়র পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম, ঘোড়াঘাট থানার ওসি আসাদুজ্জামান, ওসি (তদন্ত) ইনামুল হক ও মামলার তদন্ত অফিসার এস আই আজিজুর রহমান।ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, নিহতের নানা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আমরা আলামত হিসাবে প্লাষ্টিকের বস্তা ও একটি কাঁচি উদ্ধার করেছি।লাশটি উদ্ধার করে থানায় আনার পর আজ বৃহস্পতিবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অন্য দিকে আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।