ঢাকা, শুক্রবার, ১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
আমতলীতে পরীক্ষার হলে না গিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন
ফুলবাড়ীতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাঝে গরু বিতরণ স্থগিত
মোরেলগঞ্জে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে ফরিদ-মিলন প্যানেলের গণসংযোগ
দুলালপুর উচ্চ বিদ্যাঃ প্রথম দিনের এসএসসি পরীক্ষায় উপস্থিত ৩৮৯, অনুপস্থিত-১০
পঞ্চগড় জেলা আইনজীবী সমিতির আয়োজনে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল
নাইক্ষ্যংছড়িতে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ ভাবে শুরু, প্রথম দিন অনুপস্থিত ১৭
বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি যুবক হত্যার ঘটনায় ইসলামী যুব আন্দোলনের তীব্র নিন্দা
আত্রাইয়ে সুষ্ঠু ও নকল মুক্ত পরিবেশে এসএসসি পরীক্ষা গ্রহণ
হোমনায় টিসিবি’র পণ্য সামগ্রী বিতরণ
কনটেন্ট ক্রিয়েটর ‘ক্রিম আপা’ গ্রেফতার
রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার: পাহাড় সমান অপকর্মে জড়ান দাদন মুন্সী
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট প্রশ্ন কোথায় বসে টাকার হিসাব করছেন-স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা
আসামি না হয়েও রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতারের পর বেলজিয়াম প্রবাসী আ’লীগ সভাপতির মৃত্যু
ঝালকাঠিতে পরীক্ষার প্রথম দিনেই একজন বহিষ্কার, চার শিক্ষককে অব্যাহতি
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত -২

মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই ৯০০ মরদেহ দাফনের তথ্য দেয় মিল্টন;ডিবি

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)’র অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন,কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা ও চাইল্ড এন্ড এইজ কেয়ার আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সামাদ্দার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন ভিডিওতে ৯০০ মানুষ দাফনের তথ্য দিয়েছে। অথচ বাস্তবে সে দাফন করেছে মাত্র ১৩৫ জন। ভিডিওর মাধ্যমে এমন তথ্য ছড়িয়ে সমাজের মানবিক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে টাকা হাতাতেই এমন ছড়াতো।

বৃহস্পতিবার (০৯ মে ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবির কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।

অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন,মানবপাচার ও জালিয়াতিসহ মিল্টন সামাদ্দারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। তাকে দুই মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মিল্টনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত যে অভিযোগগুলো উঠেছে তার বেশিরভাগই স্বীকার করেছে। আমরা তার কাছে ভুয়া মৃত সনদ তৈরি করার বিষয়টি স্বীকার করেছে। আমরা তার চাইল্ড এন্ড এইজ কেয়ারে প্রমাণ পেয়েছি। অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসক না থাকার অভিযোগ স্বীকার করেছে। মাদক সেবন করে সে তার আশ্রমের অসুস্থদের নির্যাতন করত।

মিল্টন কাউকে পরোয়ানা না করার কারণ অনেক বিশেষ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিলো। তাকে কেউ কিছু করতে পারবে না। আবার অনেকেই মিল্টনের আশ্রমে শিশু ও অসুস্থ মানুষ দিয়ে আসত অনেকেই। কিছুদিন পর যখন তারা খোঁজ নিতে যেতো তখন সে তাদের ধরেই পিটাত। এর সবই সে স্বীকার করেছে।

৯০০ লাশ দাফনের বিষয়ে রিমান্ডে মিল্টন বলেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ও লাইভে এসে সে টাকার লোভে এই তথ্য ছড়াত। ৯০০ লাশ কবর দেওয়ার মতো কোনো ঘটনা নেই। বরং সে মাত্র ১৩৫ টি মরদেহ দাফন করেছে। তার আশ্রমে থাকা অনাথ শিশু ও অসুস্থ মানুষদের দেখিয়ে ভিডিও তৈরি করে মানুষের বিবেকে নাড়া দেওয়ার চেষ্টা করত। তার ভিডিও দেখে অনেক মানবিক মানুষ তাকে টাকা পাঠাতো। যেহেতু সে মানবতার ফেরিওয়ালা সেঁজে অসহায় মানুষের সেবা দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু তার আশ্রমে কোনো চিকিৎসক না রেখে মিল্টন নিজেই অপারেশন করত। অনেক সময় হাত পা কেটে ফেলত। এর ফলে রোগীরা আত্মচিৎকার করত। আর এতেই মাদকাসক্ত মিল্টন পৈচাষিক আনন্দ পেতো। ব্লেড ও ছুড়ি দিয়ে কাটাছেঁড়ার ফলে অনেকে যন্ত্রণায় ভুগে মারা যেতো কিন্তু মিল্টনের পাষণ্ড হৃদয় নাড়া দিতো না। আমরা অনেক তথ্য বের করেছি। প্রয়োজনে আবার রিমান্ডে আনবো।

হারুন আরও বলেন,আমাদের সমাজে যদি এ ধরনের মানুষ থাকে যারা মানবতার ফেরিওয়ালা সেঁজে প্রতারিত করছে। এমন মানুষদের বিষয়েও আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। যে মানবতার ফেরিওয়ালা সেঁজে টাকা হাতিয়ে নিয়ে মানুষকে সেবা দিচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারা তাকে সহায়তা করেছে,কারা তাকে ভিডিও বানানোর পরামর্শ দিয়েছে তাদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

মিল্টনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

ডিবির হারুন অর রশীদ বলেন,ইতোমধ্যে মিল্টনের আশ্রমের বাসিন্দাদের ভালো খাবার ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

মিল্টন অনেকের হাত-পা কেটে ফেলত। এতে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন,এটা ভয়াবহ অপরাধ। মিল্টন বারবার বলেছে ৯০০ লোক মারা গেছে, আবার বলছে ১৩৫ জন মারা গেছে। যারা মারা গেছে তাদের তো স্বজন ছিলো। তার উচিৎ ছিলো স্বজন ও ঠিকানা খুঁজে বের করা। বাবা মা বেঁচে আছে কি না। রেজিস্ট্রার লেখা দরকার ছিলো। এটা না মেনে থানা জিডি না করে,অসহায় মানুষদের পরিবার ও স্বজনদের না জানিয়ে কবর দেওয়া ভয়াবহ অপরাধ। সব কিছুই আমরা তদন্তে আনবো।

ডিআই/এসকে

শেয়ার করুনঃ