ঢাকা, শুক্রবার, ১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
ফুলবাড়ীতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাঝে গরু বিতরণ স্থগিত
মোরেলগঞ্জে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে ফরিদ-মিলন প্যানেলের গণসংযোগ
দুলালপুর উচ্চ বিদ্যাঃ প্রথম দিনের এসএসসি পরীক্ষায় উপস্থিত ৩৮৯, অনুপস্থিত-১০
পঞ্চগড় জেলা আইনজীবী সমিতির আয়োজনে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল
নাইক্ষ্যংছড়িতে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ ভাবে শুরু, প্রথম দিন অনুপস্থিত ১৭
বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি যুবক হত্যার ঘটনায় ইসলামী যুব আন্দোলনের তীব্র নিন্দা
আত্রাইয়ে সুষ্ঠু ও নকল মুক্ত পরিবেশে এসএসসি পরীক্ষা গ্রহণ
হোমনায় টিসিবি’র পণ্য সামগ্রী বিতরণ
কনটেন্ট ক্রিয়েটর ‘ক্রিম আপা’ গ্রেফতার
রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার: পাহাড় সমান অপকর্মে জড়ান দাদন মুন্সী
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট প্রশ্ন কোথায় বসে টাকার হিসাব করছেন-স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা
আসামি না হয়েও রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতারের পর বেলজিয়াম প্রবাসী আ’লীগ সভাপতির মৃত্যু
ঝালকাঠিতে পরীক্ষার প্রথম দিনেই একজন বহিষ্কার, চার শিক্ষককে অব্যাহতি
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত -২
ফরিদপুরে নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি ‌সংহতি জানিয়ে বিএনপির কর্মসূচি

শবেবরাত অর্থ মুক্তির রাত

শবেবরাত দুটি ফারসি শব্দ থেকে এসেছে। ‘শব’ মানে রাত, ‘বরাত’ মানে মুক্তি। শবেবরাত অর্থ মুক্তির রাত। শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে ‘শবেবরাত’ বলা হয়। শবেবরাতের আরবি ‘লাইলাতুল বারাআত’। হাদিস শরিফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা ‘শাবান মাসের মধ্য রজনী’ বলা হয়েছে। এ মর্যাদামন্ডিত রাত সম্পর্কে কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হা-মিম! শপথ! উজ্জ্বল কিতাবের, নিশ্চয়ই আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয়ই আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয়ই আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি।’ (সুরা দুখান, আয়াত ১-৫)।

আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাসসিরিনগণ বলেন, ‘এখানে ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ বা বরকতময় রজনী বলে শাবান মাসে পূর্ণিমা রাতকেই বুঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি, রুহুল মাআনি ও রুহুল বায়ান)। উপমহাদেশের প্রখ্যাত মুফাসসির মুফতি শফি (রহ.) তার তাফসিরে লিখেন- ‘আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এর ছাত্র ইকরিমাসহ কয়েকজন তাফসিরবিদ থেকে বর্ণিত আছে, সুরা দুখান-এর দ্বিতীয় আয়াতে বরকতের রাত বলে শবেবরাতকে বোঝানো হয়েছে।’ (মাআরিফুল কোরআন।)

শবেবরাতের ফজিলত সম্পর্কে একাধিক সহি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন ‘অর্ধ শাবানের রাতে আল্লাহ সৃষ্টির প্রতি রহমতের নজরে তাকান। অতঃপর মুশরিক ও বিদ্বেষপোষণকারী ছাড়া সমগ্র সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস নম্বর ৬৬৪২।) এ ছাড়া শবেবরাতের আমল সম্পর্কে ‘শুআবুল ঈমান’ গ্রন্থে ইমাম বায়হাকি (রহ.) দারুণ একটি হাদিস বর্ণনা করেন। হজরত আলা ইবনুল হারিছ (রহ.) থেকে বর্ণিত, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, একবার রসুলুল্লাহ (সা.) রাতে নামাজে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সেজদা করেন যে, আমার ধারণা হলো তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়েশা, অথবা বলেছেন, ও হুমায়রা, তোমার কি এই আশঙ্কা হয়েছে যে, আল্লাহর রসুল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া রসুলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না। নবীজি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জান এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসুলই ভালো জানেন। রসুলুল্লাহ বললেন, ‘এটা হলো অর্ধ-শাবানের রাত। (শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত।)

আল্লাহতায়ালা অর্ধ-শাবানের রাতে তাঁর বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন, ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহপ্রার্থীদের প্রতি অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই।’ (শুআবুল ঈমান।) এ হাদিস প্রমাণ করে শবেবরাতের রাতে দীর্ঘ নফল নামাজ পড়া রসুল (সা.) এর পছন্দনীয় আমল। আর তিরিমিজি শরিফে হজরত আলী (রা.) কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে রসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ১৫ শাবানের রাতে নামাজে দাঁড়াও এবং দিনে রোজা রাখ।’ বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায়, এ রাতে রসুল (সা.) কবর জিয়ারতও করতেন। কেউ কেউ শবেবরাতের ফজিলত মানতে চান না। অথচ শবেবরাতের ফজিলত সম্পর্কে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘১৫ শাবানের রাতের ফজিলত সম্পর্কে একাধিক ‘মারফু’ হাদিস ও ‘আসারে সাহাবা’ বর্ণিত রয়েছে। এগুলো দিয়ে ওই রাতের ফজিলত ও মর্যাদা প্রমাণিত হয়। সালফে সালেহিনের বড় একটা অংশ এ রাতের নফল নামাজের ব্যাপারে যত্নবান ছিলেন। আর শাবানের রোজার ব্যাপারে তো সহিহ হাদিসগুলোই রয়েছে।’ ইমাম আহমাদ (রহ.) এর মতও তাই। কেননা এর ফজিলত সম্পর্কে একাধিক হাদিস বর্ণিত হয়েছে এবং এগুলোর সমর্থনে সাহাবি ও তাবেয়িদের বক্তব্য বিদ্যমান আছে; যেগুলো ‘সুনান’ ও ‘মুসনাদ’ শিরোনামে সংকলিত হাদিসের কিতাবে এমনকি কতক ‘সহিহ’ শিরোনামের কিতাবেও যেমন সহিহ ইবনে খুজাইমা ও সহিহ ইবনে হিব্বান কিতাবে বর্ণিত হয়েছে।

শেয়ার করুনঃ