
ডেস্ক রিপোর্ট : কুষ্টিয়া পৌরসভার মঙ্গলবাড়িয়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে বাবা ও ছেলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
মৃতরা হলেন রেজাউল করিম মধু ও তার ছেলে মুগ্ধ। মধু কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মঙ্গলবাড়িয়া এলাকার সেলিমের বাসায় ভাড়া থাকতেন। একই পৌরসভার আলফা মোড় এলাকায় তার বাবার বাড়ি। মধুর পারিবারিক ও প্রতিদিনের বাংলাদেশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় আট বছর আগে তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আসাদুল মণ্ডলের মেয়ে শেফালি খাতুনকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে তার নাম ছিল মধুসুদন রায়।
মধুর বাবা বিষ্ণুপদ রায় জানান, শেফালি অসুস্থ হয়ে পড়ায় কিছুদিন হলো মধু স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তার বাড়িতে থাকা শুরু করে। তবে ভাড়া বাসায় তাদের যাতায়াত ছিল। ভাড়া বাসাটি তাদের বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
পুলিশ বলছে, ধর্মান্তরিত হওয়ার পর মধু তার জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনী নিয়ে বেশ জটিলতায় ভুগছিলেন। সেই ক্ষোভ থেকে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।
পুলিশ ও স্বজনরা জানিয়েছেন, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মধু আলফা মোড়ের বাড়ি থেকে ছেলে মুগ্ধকে নিয়ে বের হন। হরেকৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছেলেকে ভর্তি করার কথা ছিল তার। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সন্তানকে নিয়ে ফিরে না আসায় শেফালি ভাড়া বাসায় খোঁজ নিতে যান। সেখানে গিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ পেয়ে ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে ঘরের ভেতরে দেখার চেষ্টা করেন তিনি। এক পর্যায়ে জানালার ছিদ্র দিয়ে স্বামী ও সন্তানকে ঘরের মধ্যে একই রশিতে ঝুলতে দেখেন। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সোহেল রানা বলেন, ‘এখনি কিছু বলা যাচ্ছে না। এখানে আত্মহত্যা ও হত্যার দুটি ঘটনা থাকতে পারে। ছেলেকে হত্যার পর বাবা আত্মহত্যা করতে পারেন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মধু ধর্মান্তরিত হওয়ার পর থেকে তার এনআইডি কার্ড সংশোধনী নিয়ে বেশ জটিলতায় ভুগছিলেন। যার জন্য সে তার ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারেননি। এই নিয়ে তার বেশ ক্ষোভ ছিল। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে জানা যাবে।