ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
শ্রীনগরের কোলাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা
ঢাকায় ঝটিকা মিছিলে অংশ নিতে এসে টাংগাইলের ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে মুখে কালো কাপড় বেঁধে রাজাপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের পদত্যাগের দাবিতে নোয়াখালীতে বিক্ষোভ
রাজবাড়ী ও মাদারীপুরে নতুন পুলিশ সুপার
দুই জেলায় নতুন এসপিসহ ৬ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি
পহেলা বৈশাখ উদযাপন নিয়ে নিরাপত্তা হুমকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন হবে কি না,সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার
গভীর সমুদ্র থেকে ১২৫ নারী-শিশুসহ ইন্দোনেশিয়াগামী নৌযান আটক
পল্লবীতে পুলিশকে আহত করে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার ৪
মোহাম্মদপুর সাড়াশি অভিযান,নারীসহ গ্রেফতার ১০
তুরিন আফরোজের ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ
ভাবিকে কুপিয়ে হত্যা,আসামি দেবর গ্রেফতার
সারাদেশে দোকান-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনায় ৪৯ জন গ্রেফতার
লক্ষ্মীপুরে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

মরিচের আগুন লেগেছে চারায়

দেশের কৃষিসমৃদ্ধ উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী। এই উপজেলায় চাষিদের একটি অংশ মরিচ চাষের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু এবার তারা হতাশ। কারণ, দেশীয় জাতের মরিচের চারার দাম দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে গেছে।

বেতাগী বন্দরের চারার পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এই চিত্র পাওয়া গেছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, বাজারে চারার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় হঠাৎ দাম বাড়লেও তা সাময়িক। এখন চাষিদের নাগালের বাইরে থাকলেও এক পর্যায়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দাম বেড়ে প্রতি পণ (৮০টি) হিসাবে ১৬ পণ ১ কাউন (১ হাজার ২৮০টি) মরিচের চারা বতর্মানে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। বাজারভেদে তা কোথাও কোথাও আরও কম-বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। অথচ মৌসুমের শুরুতে ও আগে কাউন প্রতি মরিচের চারা বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়।

বেতাগী বাজারে সকালের দিকে মরিচের চারা বিক্রি হয় ৩০০ টাকা দরে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চারা বিক্রি বাড়তে থাকে। তখন দামও হয় চড়া। বেলা ১১টার দিকে দাম গিয়ে ৪০০ টাকায় ঠেকে। অথচ গত বছরের এই দিনে চাষিরা পাইকারি বাজারে এ মরিচের চারা বিক্রি করেছেন প্রতি কাউন ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর খুচরা হিসাবে ১১০ থেকে ১২০ টাকা।

একাধিক ক্রেতার অভিযোগ, বর্তমান রবি মৌসুমের এ সময়টি মরিচ আবাদের গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ ও উপযোগী। তাই পাইকাররা যোগসাজশ করে চারার দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর অজুহাত হিসেবে দেখাচ্ছেন অসময়ের বন্যা ও বৃষ্টি এবংনদী-খালেনদী-খালে পানি বলি। অথচ চারার আমদানি বেশ ভালো। বাড়তি দামে মরিচের চারা কিনতে গিয়ে অনেকেই দিশেহারা।

উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন বড় বাড়ি গ্রামের চাষি আব্দুল লতিফ বলেন, এ বছর কাঁচামরিচের চারার আকাশচুম্বী দাম। এত দামে কিনে পোষানো যাবে না। তাই বিকল্প হিসেবে বাদাম আবাদের চেষ্টা করছেন তিনি।

বিবিচিনি ইউনিয়নের দেশান্তরকাঠি গ্রামের হোমিও চিকিৎসক জাকির হোসেন মরিচের আবাদ করেন। তিনি এবার ১০ শতাংশ জমিতে মরিচ চাষের পরিকল্পনা নিয়ে আবাদ শুরু করেন। কিন্তু এখন হতাশ। কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, শুরুতে ১০০ টাকা দরের চারা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়।

বিক্রেতাদের ভাষ্য, স্থানীয়ভাবে চারার উৎপাদন কম। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কম হওয়ায় দামও বেড়ে গেছে। চারা বিক্রেতা আজমল হোসেন বলেন, চারা উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। এ কারেণ স্থানীয় বাজারে চারার দাম বেশি।

প্রতি পণ (৮০টি) হিসাবে ১৬ পণে ১ কাওন (১২৮০টি) চারা বতর্মানে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায় অথচ মৌসুমের শুরুতে ও আগে কাওন প্রতি মরিচের চারা বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়

তবে চাষিরা দাবি করেন, চারা উৎপাদনের পরিমাণ যতটা কম বলা হচ্ছে, আসলে ততটা নয়। চাষি আতাহার হোসেন বলেন, এখন এক কাউন মরিচের চারার দাম ৪০০ টাকা। অথচ গত বছর একই চারা কিনেছিলেন ১০০ টাকায়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে ১০০ টাকা দরে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ এবং শুকনো মরিচ ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হলেও ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা দরে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়। এ কারণে এখানকার চাষিরা মরিচ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।

বাজারে মরিচের দাম চড়া এবং কৃষি বিভাগের উদ্বুদ্ধকরণের ফলে এখানকার চাষিরা দিন দিন মরিচ আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা আহম্মেদ বলেন, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় হঠাৎ চারার দাম বাড়লেও তা সাময়িক। এখন চাষিদের নাগালের বাইরে থাকলেও এক পর্যায়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।

চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৪০০ হেক্টর জমি দেশীয় উন্নত জাতের মরিচ আবাদের আওতায় আনা হয়েছে।

শেয়ার করুনঃ

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com