ঢাকা, রবিবার, ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
শেরপুর জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত
রূপগঞ্জে ভুয়া এডিশনাল এসপি গ্রেফতার
কালিগঞ্জে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও নাশকতার পরিকল্পনা মামলায় আ.লীগ নেতা কান্টু গ্রেফতার
আত্রাইয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সদস্য আনোয়ার হোসেন বুলুর জনসংযোগ
কুষ্টিয়ায় শীর্ষ সন্ত্রাসী লিপটনের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টুর মৃত্যুতে মেজর মান্নানের শোক
মিরসরাইয়ের রূপসী ঝরনার কূপে ডুবে কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
মিরসরাইয়ে পিকাপ-সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে শিশুসহ নিহত-৩
সারাদেশে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার আরও ১৬১৪ জন
তানোরে কথা রেখেছে আষাড়, প্রথম দিনেই স্বস্তির বৃষ্টি
জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদের সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে: মেয়র ডা. শাহাদাত
কয়েকদিনের ভাপসা গরমের পর সলঙ্গায় স্বস্তির বৃষ্টি
যুবকদেরকে সবাই দলদাসে পরিণত করতে চায়: ড. আতিক মুজাহিদ
বাগমারা বিএনপির শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

কারসাজি করে দাম বাড়ালে জেলে পাঠানো হবে : প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট:

কারসাজি

কারসাজি করে পণ্যের দাম বৃদ্ধিকারীদের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এবারও আমাদের ফসল খুব ভালো হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের পরে এই ভরা মৌসুমে দাম বাড়াটা অস্বাভাবিক। এর পেছনে কাদের কারসাজি এটা খুঁজে বের করা একান্তভাবে দরকার। এদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটা আমরা আগামীতে করব। কেউ যদি অবৈধভাবে মজুত করে থাকে, তাকে সাজা পেতে হবে। দুরভিসন্ধিমূলক কেউ যদি অস্বাভাবিক মজুত করে দাম বাড়ানোর সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের খুঁজে বের করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে সঙ্গে সঙ্গে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে জেলে ভরা হবে। এই জায়গাটাতেই প্রথম আঘাত করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, যেসব জিনিস আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হয়, যেমন গম, চিনি, ভোজ্যতেল, গ্যাস এগুলো আমাদের কিনতে হয়। কারণ আমাদের যা আছে তা চাহিদার চেয়ে অনেক কম। যেসব জিনিস আনতে হয় সেগুলোর উচ্চমূল্য, পরিবহণ ব্যয় বেড়েছে সেই কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ডিম, সেটাও মজুত করে রাখা হয়। এর আগে পেঁয়াজ। একটার পর একটা পচা পেঁয়াজের বস্তা ফেলে দেওয়া হলো। এটা কোন ধরনের কথা। মানুষের খাবার নিয়ে খেলা, এর তো কোনো অর্থ হয় না, আর এই ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ারও কথা নয়। এ সময় তো আরও কমে জিনিসের দাম। সরকারপ্রধান বলেন, তরিতরকারি, ফলমূল আমাদের সরবরাহের তো কোনো অভাব নেই। যে কোনো কৃষিপণ্যের দাম বাড়লে ভোক্তাদের কষ্ট হয়। কৃষক যদি দামটা পায় তারা খুশি হয়। কৃষক ন্যায্য দামটা পাচ্ছে। কিন্তু যে দামটা পরিবহণসহ সব মিলিয়ে হওয়া উচিত তার থেকে অতিরিক্ত বেশি। সেজন্য দুরভিসন্ধি নিয়ে যদি কেউ মজুত রাখে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নেব। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন শেষ হওয়ার পর আরও কিছু চেষ্টা করা হয়েছে। গার্মেন্টের মজুরি বাড়ানো হলো, তারপরও রাত ১২টায় গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলন। এটা করে ব্যর্থ হয়েছে, ব্যর্থ হয়ে এখন অন্যভাবে নামতে চাচ্ছে। সেভাবে করতে দেব না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। মানুষ আনন্দিত, খুশি। এ পর্যন্ত যে উন্নয়নটা করেছি এর সুফলটা যেন জনগণ পায়, এই চেষ্টাটাই করছি।

দেশে আর কোনোদিন অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের দেশে একটা শ্রেণি আছে যাদের কোনো কিছুই ভালো লাগে না। দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তাদের ভালো লাগে। ইনশাআল্লাহ দেশে আর কখনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেই আমাদের দেশকে আরও উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলব।

এবারের নির্বাচন নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে : প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হলেও জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। নির্বাচনে যাবে কী যাবে না-এটা দলগুলোর নিজস্ব সিদ্ধান্তের ব্যাপার। নির্বাচন বানচালে ব্যর্থ হয়ে এখন এবারের নির্বাচন নিয়ে কেউ কেউ ধূম্রজাল তৈরির চেষ্টা করেছে। কিন্তু দেশের মানুষ এই নির্বাচন গ্রহণ করেছে। মানুষ যেটা গ্রহণ করেছে, এটা নিয়ে অন্যদের কী বলার আছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনেই প্রমাণ হয়েছে দেশে শক্তিশালী দল মানেই একমাত্র আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩ আসনে বিজয়ী হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোট পেয়েছিল মাত্র ৩০টি আসন।

উন্নয়নকে টেকসই করতে হবে : আগামীতে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলা বিনির্মাণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের রূপরেখায় বলেছিলাম, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। এখন আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজ এগিয়ে নিতে হবে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। এটাকে ধরে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

নির্বাচন কমিশন অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক শক্তিশালী : আসন্ন উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচন আমরা কীভাবে করব সে ব্যাপারে আলোচনা হবে। এবার আমরা আইন করে কমিশন গঠন করে জাতীয় নির্বাচন করেছি। বর্তমান নির্বাচন কমিশন অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক শক্তিশালী। নির্বাচনের পরও আমাদের এক মন্ত্রীকে ডেকে নিয়ে জবাবদিহি করেছে নির্বাচন কমিশন। বিএনপির আমলে ইসির কেউ এমন করার কোনো সাহসও দেখাতে পারত না।

গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা না থাকলে উন্নয়ন হয় না : উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, উন্নয়নের ধারাটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা না থাকলে দেশের কোনো উন্নয়ন হয় না, আমরা তা প্রমাণ করেছি। ’৭৫-পরবর্তী দীর্ঘ ২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা দেশকে এক কদমও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি। আগে মানুষের খাদ্যের জন্য হাহাকার ছিল। সামান্য নুন-ভাত জোটাতেই হিমশিম খেত। এখন মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করেছি। এখন নুন-ভাত নয়, দেশের মানুষ মাছ-মাংস-ডিমের কথা বলে। মরিচ পোড়া ভাত দেশের মানুষকে খেতে হয় না।

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের পর এটাই ছিল আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের প্রথম বৈঠক। সূচনা বক্তব্যের পরে শুরু হয় রুদ্ধদ্বার আলোচনা। বৈঠকে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দেশব্যাপী সাংগঠনিক সফর, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের কৌশল, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিবাদ দ্রুত নিরসনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সুত্র: যুগান্তর

শেয়ার করুনঃ