
কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে সরকারি আইন লঙ্ঘন করে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি চলছে। ইট পোড়াতে ইতিমধ্যে উপকরণ হিসেবে হাজার হাজার মন আম, কাঁঠাল, শিশুফুল, বাবলা, খেঁজুরগাছসহ অন্যান্য উপকারী কাঠ স্তুপ করা হয়েছে। পরিবেশ বিপর্যয় উপেক্ষা করে ইটপোড়াতে উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত আব্বাস শেখের পুত্র মারুফ হোসেন চ্যালেঞ্জ দিয়েছে। সরেজমিন (শনিবার ১৪ জুন ২৫) ঘটনা স্থলে গেলে মারুফ হোসেনের বড় ভাই আয়ূব আলী শেখ বলেছেন বিগত ৩- ৪ বছর ধরে ইট পোড়ানোর কাজ চলছে। কেউ কোনদিন বাঁধা দেইনি। আপাতত এবারও কোন সমস্যা হবেনা। এভাবে ইটপোড়ানোর কাজ চলবে। এখানে কোন পরিবেশ দুষণ হচ্ছেনা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এখানে কোন পরিবেশ দুষণ হয়না। কোন বাঁধাবিঘ্ন আসেনা। আমার ভাই কাঠের ব্যবসা করে, সেই কাঠ দিয়ে ইট পোড়াচ্ছে। মারুফ হোসেন নিজে বলেন এখানের সকল সম্পত্তি আমার। পরিবেশ দুষণ হওয়ার মতো কিছু নেই।
লোকালয়ে মধ্যে ৩-৪ বিঘা জমির উপর ৫০ হাজার ইট পোড়ানোর জন্য ইট সাজানো হচ্ছে। পাশাপাশি আরও লক্ষাধিক ইট পোড়ানোর জন্য পাশে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।
ইট পোড়ানোর জন্য আগে থেকে হাজার হাজার মন উপকারী গাছের কাঠ জড়ো করে রাখলেও মারুফ হোসেনের কোন অনুশোচনা নেই। বরঞ্চ তিনি বাংলাদেশের গর্বিত সেনাবাহেনীর দোহায় দিয়ে অন্যদের নিয়ে নিজে ব্যঙ্গাত্বক আচারণ প্রদর্শণ করেন।
স্থানীয় মোঃ আরশাদ আলী বলেন, মারুফ হোসেন বিগত ৪-৫ বছর ধরে এখানে ইট পোড়ায়। লোকালয়ের মধ্যে ইট পোড়ালে ধোয়ায় এলাকায় কার্বণডাইঅক্সাইড ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের দম বন্ধ হয়ে আসে। তাকে কিছু বল্লে আমাদের নামে মামলা ঠুকে দেয়। আমরা তাদের দেওয়া মামলায় জর্জরিত। দীর্ঘদিন তাদের ভয়ে বাড়ী থাকতে পারিনা। এলাকার অধিকাংশ পুরুষ মানুষের নামে ২ থেকে ১৫-২০টি করে মামলা রয়েছে। আমাদের কাজের সময় ও অর্থ চলে যায় কোর্টে যাতায়াত করতে।
রঘুনাথপুর গ্রামের রাফিজা বিবি, রেশমা বেগম, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল হামিদ, শহিদুল ইসলাম, জামাত আলী মোল্লা, মেহেদী হাসান, নুরুজ্জামান সরদার, আবু সাঈদ সরদার, আশরাফ হোসেন, আব্দুর রহিম সহ শতাধিক মানুষ বলেন, প্রতিবছর মারুফ হোসেন ২-৪ ধাপে লোকালয়ে দুই তিন লাখ ইট পোড়ায়। ধোয়া, গন্ধ ও পরিবেশ দুষণে আমরা গ্রামে টিকতে পারিনা। প্রতিবাদ করলে আমাদের উপর হামলা করে। অন্যথা মামলা দিয়ে বাড়ী ছাড়া করে।
সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে মারুফ হোসেন লোকালয়ের ভিতর ইট পোড়াচ্ছে। ইট প্রস্তুত ও পোড়ানোর আইন থাকলেও তিনি তা মানছে না। স্কুল -মাদ্রাসা, হাসপাতাল এমনকি সড়কের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে ইট পোড়ানো সরকারি আইন লঙ্ঘনের মধ্যে পড়লেও তিনি তা তোয়াক্কা করেননা।
বিষয়টি কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইট পোড়ানোর বিষয়টি আমার জানা নেই। পরিবেশ বিপর্যয় করে কোন কাজের পক্ষে আমি নই। বিষয়টি আমি খোজ নেব।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুজা মন্ডলের হোটসএ্যাপ নম্বরে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন গ্রামের মধ্যে ইটের পাঁজা সাজানো হচ্ছে সেটা আমার নলেজে নেই। তবে বিষয়টা আমি দেখছি।