ঢাকা, রবিবার, ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
কারাগারে আত্মহত্যার চেষ্টা, ঢামেকে হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু
কুয়াকাটায় লেইস প্রশিক্ষনার্থী নবীন শিক্ষকদের মিলনমেলা
বাগমারায় উকিলের দাপট দেখাতে গিয়ে গণধোলাই খেলেন মহুরী
‎বিশ্ব বাবা দিবসে শিক্ষার্থীদের হৃদয়ছোঁয়া অনুভূতি
কলমাকান্দায় তক্ষক পাচার: ৯ জন আটক, মাইক্রোবাস জব্দ
আত্রাইয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী সৌরভ এর মৃত্যুতে কলকাকলী শিক্ষা পরিবারে দোয়া অনুষ্ঠিত
রূপগঞ্জে ব্যবসায়ী মামুন হত্যাকান্ডের ঘটনায় পরিবারের সাংবাদিক সম্মেলন
বাংলাদেশ ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটিতে নোয়াখালীর দুই মূখ
মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযান, গ্রেফতার ৮
বর্তমান পুলিশ মানবিক পুলিশ, আগের থেকে সক্রিয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
চার অতিরিক্ত ডিআইজি নতুন দায়িত্বে
মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিতে মাভাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
কালকিনিতে বাজারে অগ্নীকান্ডে ১৫ দোকান পুড়ে ছাই
ফোনে কথা বলতে বলতে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে এক যুবক নিহত
দীঘিনালায়মাইনি নদীতে লাকড়ি সংগ্রহ করতে গিয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

বর্ষায় রূপগঞ্জে চাঁই’য়ের কদর বেড়েছে

রূপগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি: উপজেলার গোলাকান্দাইলের হাটের এক কোনে বসে আপন মনে চাঁই বুনে যাচ্ছেন খালেক মিয়া। প্রতিদিন এক জায়গায় তিনি থাকেন না। বিভিন্ন হাটে-বাজারে ঘুরে ঘুরে তাৎক্ষণিক অর্ডার নিয়ে মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে খ্যাত মানুষের ইচ্ছামতো চাঁই তৈরি করে দিচ্ছেন তিনি। চাঁইয়ের ধরনবেদে মূল্যও হরেক রকম হয়ে থাকে। তার কাছে সর্বনিন্ম ২৫০ টাকার চাঁই থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা মূল্যের চাঁইও পাওয়া যায়।
খালেক মিয়া বলেন, বর্ষার পানি আইতাছে, জোয়ারের পানির লগে নতুন মাছ ধরার জন্য জেলেরা চাঁই বানানোর অর্ডার দিচ্ছে। কেউ ছোট আবার কেউ বড় চাঁই বানানোর অর্ডার দিচ্ছেন। তবে মাঝারি সাইজের চাঁইয়ের চাহিদাই বেশি। উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের কাজীবাড়ি এলাকার আবুল হোসেন বলেন, বছরের এ সময়টাতে চাঁই দিয়ে মাছ ধরার মজাই আলাদা। জমির আইল কেটে চাঁই বসিয়ে দিলেই নতুন পানির সাথে ভেসে আসা মাছগুলো চাঁইয়ে আটকা পড়ে যায়। এছাড়া নদীর তীরে বাঁশের খুঁটির সাথে চাঁই বেঁধে রাখলে সকালে বাইম, বড় বড় ইছা, কৈ, শিংসহ বিভিন্ন জাতের মাছ পাওয়া যায়।
উপজেলার খামার পাড়া এলাকার মতিন মিয়া বলেন, চাঁইয়ের মাধ্যমে নতুন পানির মাছ খাওয়ার মজা অনেক। গ্রামের খাল বিলে মাছ ধরার পুরনো উপকরণের একটি হচ্ছে চাঁই। বর্ষার আগমণে নানা প্রজাতির দেশি জাতের ছোট মাছ ও পোনার বিচরণ বাড়ছে। চিংড়ি ও দেশি মিঠা পানির ছোট মাছ ও পোনা ধরার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশের তৈরি বিশেষ ফাঁদ। মাছ ধরার এ ফাঁদের পরিচিতি ‘চাঁই’ নামে। এই চাঁই বুনে বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক মানুষ সচ্ছল জীবনযাপন করছেন।
গ্রীষ্মের শুরু থেকে এ অঞ্চলের খাল-বিল ও নদী-নালায় শুরু হয় চাঁই দিয়ে মাছ ধরা। বিশেষ পদ্ধতিতে বাঁশ দিয়ে নদী-খালে, বিলে ৪-৫ ফিট ফাঁকে ফাঁকে বসানো হয় একটি করে চাঁই। পানিতে চাঁই বসানো হয় মূলত চিংড়ি মাছ শিকারের জন্য। কিন্তু ধরা পড়ে পুঁটি, বেলে, টেংরাসহ সব প্রকারের ছোট মাছ। চাঁইগুলো প্রতি সপ্তাহে বিক্রি হয় উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে। উপজেলার চাহিদা পূরণ করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয় এসব চাঁই। উপজেলার কায়েতপাড়া এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাঁই তৈরি হচ্ছে।
চাঁই তৈরির প্রধান উপকরণ হচ্ছে বাঁশ। এই বাঁশগুলো উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়। একটি বাঁশে ৬টি চাঁই হয়। ১০০টি চাঁই বানাতে খরচ হয় ১০ হাজার টাকার মত। বিক্রি হয় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। শ্রমিকরা প্যাকেজ আকারে চাঁই বানানোর কাজ করে। মাপমতো বাঁশ কাটা, শলা তোলা, শলা চাঁছা, সুতা দিয়ে খোল বাঁধা, চটা বাঁধা, মুখ বাঁধা চুক্তি ভিত্তিতে করে থাকেন। এতে প্রতি শ্রমিক গড়ে দৈনিক আয় করেন ৫০০ টাকা। গ্রীষ্মের শুরু থেকে গ্রামাঞ্চলের খাল-বিল ও নদী-নালায় চাঁই দিয়ে মাছ ধরার ধুম পড়ে যায়। যা চলতে থাকে ভাদ্র-আশ্বিন মাস পর্যন্ত। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারগুলোতে মাছ ধরার এই উপকরণটির বাজারজাত ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।

শেয়ার করুনঃ