
সাইদ সাজু, তানোর থেকে ঃ গত তিনদিনের বৃষ্টি আলুর জমিতে রোপনকৃত বোরো ধানের জন্য ব্যাপক উপকার হয়েছে বলে জানিয়েছেন বোরো চাষী কৃষকরা। বৈশাখের প্রচন্ড রোদ ও খরার কারনে পুকুর, খাল ও বিলের তলা পর্যন্ত শুকিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সেচের অভাবে আলুর জমিতে রোপনকৃত বোরো জমি গুলোর ধান মরতে বসেছিলো। অপর দিকে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় গভীর নলকুপ গুলোতে পানি কম উঠছিলো। ফলে, বোরোর জমিতে সেচের পানির জন্য কৃষকদের মাঝে হাহাকারের পাশাপাশি বোরোর ধান নিয়ে আশংকা দেখা দেয়। আলুর জমিতে রোপনকৃত বোরো ধানের গাছ গুলো শীষ বের হওয়ার মুহুর্তে গত বেশ কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড রোদ ও খরার কবলে পড়ে।
গত তিনদিনের বৃষ্টির কারনে বোরোর ওই জমি গুলোর ধানের শীষ বের হতে শুরু করেছে। জমিতে পানি জমে রয়েছে। ফলে, আলুর জমিতে রোপনকৃত বোরোর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে খুশির ঝিলিক। কৃষকরা বলছেন, গত তিনদিনের বৃষ্টিতে আলুর জমিতে রোপনকৃত বোরো ধানের ব্যাপক উপকার হয়েছে। ১০ থেকে ১৫ দিন আর পানির প্রয়োজন হবে না। কৃষকরা আলো বলছেন, এই বৃষ্টি না হলে গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ দিয়ে জমির ধান বাচিয়ে রাখা খুব কষ্টকর হয়ে দাড়িয়ে ছিলো। সঠিক সময়ের এই বৃষ্টি আলুর জমিতে রোপনকৃত বোরো ধানের জন্য আশির্বাদ। একই সাথে আম ও লিচুসহ চৈতালি ফসলের জন্যও ব্যাপক উপকার বয়ে এনেছে এই বৃষ্টি।
তানোর উপজেলা কামারগাঁ, কলমা, পাচন্দর, সরনজাইসহ বিভিন্ন এলাকার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জমির মাঠে জুড়ে বোরো ধানের সবুজ লকলকে পাতা বাতাসে দোল খাচ্ছে, পুরো মাঠ জুড়ে সবুজের সমারহ প্রকৃতি সেজেছে অপরুপ সাজে। আলু তোলার পর রোপনকৃত কৃষকদের বোরো জমি ধান বের হতে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও ধানের শীষ বের হয়ে গেছে। আবার কোথাও কোথাও শীষ হয়নি, ধানের শীষ বের হতে এখনো ১৫ দিন থেকে ২০ দিন সময় লাগবে। অপর দিকে বিল কুমারী বিলের জমিতে রোপনকৃত আগাম বোরো ধান কাটা ও মাড়াই শেষ করে ফেছেন কৃষকরা। ফলে, এই বৃষ্টিতে আগাম রোপনকৃত বোরো ধানের কোন ক্ষতি হয়নি।
তানোর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছর তানোর উপজেলায় ১৩ হাজার ৩শ’ ৮৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছিলো। আলু তোলার পর পুরো জমিতেই বোরো চাষ করেছেন কৃষকরা। তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, আলু তোলার পর রোপনকৃত বোরো ধানের পাশাপাশি আম লিচুসহ চৈতালি ফসলের ব্যাপক উপকার হয়েছে। বৃষ্টি না হলে সেচের জন্য সমস্যা হতো। সময়মত বৃষ্টি হওয়ায় বাম্পার ফলন হওয়ার আশা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।