
যশোরের ঝিকরগাছায় শ্রমজীবী সমবায় সমিতির ১৯ শতক জমি জালিয়াতি করে বিক্রি করার অপরাধে ঝিকরগাছা সাবরেজিস্টার অফিসের সিনিয়র দলিল লেখক মনসুর আলী মোল্লাকে আটক করা হয়েছে। ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভুপালী সরকার বুধবার (৭ই মে) দুপুরে সাবরেজিস্টার কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত সিল সহ তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
মনসুর আলী মহুরি ঝিকরগাছা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের মৃত বাবর আলী মোল্লার ছেলে।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ৫০৬ খতিয়ানের আর এস ১১৮০ নম্বর ও আর এস ১৫৯৮ নম্বর দাগে ১৯ শতক জমি ২০০৬ সালে সমিতির সভাপতি পদের বিপরীতে ক্রয় করে সমিতির অনুকূলে ভোগদখল করে আসছিলো। পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ শ্রমজীবী সমবায় সমিতির পক্ষে ঝিকরগাছা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের গোলাম মোস্তফার পুত্র মোঃ মিন্টুর স্বাক্ষরে ১৮৯৪/২০২৫ নম্বর দলিল মুলে ১৯ শতক জমি ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি ইউনিয়নের বামনালি গ্রামের ফজলুর রহমানের পুত্র ইসরাফিল হুসাইন এর নিকট ২৫ লাখ টাকায় বিক্রয় করা হয়। জমি ক্রয়ের পর ইসরাফিল হুসাইন নামজারির আবেদন করেন। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসলে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত পূর্বক জমির দলিল লেখক মনসুর আলী মোল্লার কার্যালয়ে গিয়ে তল্লাশি চালিয়ে ড্রয়ারে রক্ষিত সমিতির রেজুলেশন খাতা এবং রেজিস্ট্রেশন কাজে ব্যবহৃত তিনটি সিল খুজে পান।
সমিতির সভাপতি মো: মিন্টু বলেন, সমিতির নাম সমবায় সমিতি হলেও সেটি নিবন্ধিত নয়। সাবেক সভাপতি মারা যাওয়ার পর সমিতির ৩৪ জন সদস্য মিলে আমাকে সভাপতি বানিয়ে জমি বিক্রয় করার দায়িত্ব দেয়। সে মোতাবেক জমি বিক্রয় করে ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে সদস্যদের মধ্যে কিছু টাকা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। বাকী টাকা জমির ক্রেতা পরিশোধ করলে বন্টন করা হবে। এতে কোনো অনিয়ম করা হয়নি বলে তিনি জানান।
ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভুপালী সরকার বলেন, জমি বিক্রয় বিধি সম্মত না হওয়ায় এবং জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে জমি রেজিষ্ট্রেশন করায় দলিল লেখক মনসুর আলী মোল্লাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ঝিকরগাছা ভুমি অফিসের মাধ্যমে মামলা করার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বর্তমান সাবরেজিস্টার শাহিন আলম যোগদান করার পর থেকেই ঘুষ, দূর্নীতি ও অনিয়মের আতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে ঝিকরগাছা অফিস। এজন্য ঐ কর্মকর্তার বদলী এবং সাবরেজিস্টার অফিস বর্তমান জায়গা থেকে সরিয়ে উপজেলা কার্যালয়ের মধ্যে স্থানান্তর এর দাবী জানিয়েছেন উপজেলার সচেতন নাগরিকবৃন্দ।